আমার লেখনী
হাতের বন্ধনীতে আঁকড়ে ধরে
তোমায় যত্নে রাখলাম, এই স্বর-ব্যঞ্জনে,
আর একটু থাকো, এভাবেই আমার নখ দর্পণে।
জলছবি হয়ে ফুটে ওঠো
আমার এই শূন্য খাতায়, মন্থরে মন্থরে।
এই রোদ ঝড়া দুপুরে,
ঘামে ভেজা শহরে,
আবাসিক এখন মরশুমি শীত!
ফুলেল ছন্দে নেচে ওঠো
এই রঙহীন পাতায় পাতায়
সুগন্ধী রঙ ছড়াও
সোনালি আখরে আখরে।
শব্দ কূহকে ডুবে যেতে চাই বিরামহীন।
বর্ণ সঙ্গমে ফিরে এসো,
জাগাও তোমার শাণিত ফলা
লিখে দাও এক অমলিন রক্তলিপি!
জ্বলন্ত বর্ণমালার আঁচড়ে বেঁচে থাক
আরও কিছু শতাব্দীর সবুজ বিদ্রোহ,
বিপ্লবে বিপ্লবে।
অপেক্ষার
প্রহর
চরম নিস্তব্ধতার মধ্যে একটা দুপুর আর একটা বিকেল কেটে যায়।
বসেছিলাম এক সন্ধানী পাখির মতো, অধীর অপেক্ষায়!
আসবে কখন নৈঃশব্দের বেড়াজাল ভেঙে আমার আকাঙ্ক্ষিত কথামালা,
ভাবনা, শব্দতরঙ্গ মূর্ছনায়।
ঠিক তখনই —
নীরবতা ভেঙে ছড়িয়ে পড়লো আকাশে বাতাসে ঘরে ফেরার গান, সন্ধ্যায়!
৬৫ নং জাতীয় সড়কে এখন আছড়ে পরা ব্যস্ততার মিছিল।
লাল-হলুদ-সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় থাকা শ’য়ে শ’য়ে স্যাঁতসেঁতে মন মেরুদণ্ডহীন।
ক্ষোভ-ঈর্ষা-আত্মসমর্পণের সাথে অভিনীত ক্লান্ত চোখে জোর করে ভালো থাকার ভান।
আর বাস্তবের কঠিন বলয় হাতড়ে ফেরা সন্ধানী চোখ খুঁজে বেড়ায়, শুধু অপেক্ষা!
এভাবেই শহুরে ব্যস্ততার ভিড়ে হারিয়ে যেতে দেখি আরও একটা ব্যর্থ সন্ধ্যা।
জলকাব্য
(১)
শব্দ যেখানে শেষ হয়, শুরু হয় তরঙ্গ
তারপর আবহ —
যেখানে প্রাকৃত-অপ্রাকৃত মিলেমিশে একাকার।
(২)
জলের গন্ধে ছুটে গেছি কতবার
দেখেছি উন্মুখ ধারাজল!
তবু অভিমানী শরীর
কখনো নদীর মতো, কখনো নারীর মতো!
আমার ভবঘুরে ইচ্ছে’রা ভাসায় সে স্রোতে নোঙর।
(৩)
ডুব দিতে সকলে জানে না, ডুবতে যে কেউ পারে ,
চাই কৌশল, চাই তত্ত্ব-তালাস;
দ্যেখোনি, মাছেরা কেমন নির্দ্বিধায় পেতেছে
ঐ জলে’তেই সংসার।
(৪)
নীল অতল ঐশ্বর্য্যের অমোঘ হাতছানি!
তৃষ্ণা মেটাতে জলের বুকে’ই জল চাষ করেছি।
দেখলাম, তোমার মতো’ই এক
উন্মুক্ত জলের আকাশ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন