রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

জপমালা ঘোষ রায়





আমি ও সামান্থা

[সামান্থা নামের এক রাশিয়ান
 মেয়েকে মনে রেখে]

চকবন্দি রূপপুর গ্রাম। মামাদাদু শচি মিত্তিরের গোলাবাড়ি ঝুপরি বাড়ি থেকে লালধুলো
আর ঘুঘু উড়ে গেল। যৌথখামার চেতনায়। গন্তব্য  শ্যামলী।  

আগাগোড়া সোনাধান ঢেউদোলা চিকুরিয়ানা। সামান্থার চুল। উজাড় ফসলকথা স্তব্ধ
হিমঋতুর  মড়াইএ। কিনলে পিওর এ গলা ভিজিয়ে সামান্থার খনিজ জলকথা। “আমার
গোলা আষ্টেপৃষ্ঠে  ভরে উঠলে ঘুঘুদের পাকস্থলী নীরবে কাঁদে”

একের উপার্জন
  অপরকে নিঃস্ব করে। বোঝালো রোদালি মেয়ে রপ্ত করা খরকুটো
বাঙালিয়ানায়। ঝড়ের মুখে ঠিকানা রেখে যাওয়া মানে দায় অস্বীকার করা পলাতকা গান।
গানেই ভালো।

স্কাইলার্ক
  তো আমিও  খুঁজছি...

আমি শুদ্ধ মাটিতে ঋদ্ধ বিপ্লবে খাল-ডোবা-মাঠ-কাঁদরে খুঁজছি পাখির বিষ্ঠা খিদে আর
পালকের যৌনগন্ধ। ওদের শূন্যগর্ভ বেদনা। আমার রক্তাক্ত হাহাকার।  নিজেকে শূন্য করে
গলার শিরা ফুলিয়ে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে পার্থিব প্রমাণ রেখেছি শ্যামলী ও উত্তরায়ণ পথে


পরাভূত করুণ প্রতাপ

প্রথমে ঘন সিঁড়িগুলো ভাঙো শব্দ না করে। সিঁড়িভাঙা অঙ্কের পরের অধ্যায়েই গুণীতক ও
গুণনীয়ক। ঘাবড়ে না গিয়ে কাছ থেকে দূরে চলে যাও। দূর থেকে দেখ প্রদীপমালার মত
লাগবে পাহাড়ে পাহাড়ে জ্বলে ওঠা দাবানল। হেলিকপ্টার থেকে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি  মাপা
হাস্যকর। সময়ের জেব্রা রোটারি লুপ ও অ্যালুপ যদি হিসেবে না মেলে জানবে তুমিই
মেলাতে পারছো না। পৃথিবীর সমস্ত দূতাবাস ও ভবনগুলোকে দেখ, যারা যারা সন্ত্রাস ঘটালো
সবাই তোমার প্রকাণ্ড হাঁ-এর ভিতর সন্ত্রস্ত।  তুমি নিজেই এই অধ্যায়কে বললে একাদশ।
এই সব অঙ্কবই-এ সাদ্দামের গুহাচোখের মত নিষ্প্রভ হয়ে আছে পরাভূত করুণ প্রতাপ।

দূরগত ট্রেনের হুইসেল শোনো।
 অপুর নিরীহ চোখ। কান পেতে রাখো রেললাইনে
দুর্গাদিদিকে নিয়ে গেছে আরবী দালাল। দালালী ঘোড়াকে ও ভেবেছিল পক্ষীরাজ। তারপর
পুরো রেসকোর্স ঢুকে গেছে গ্রুপ চ্যাটে সোসাল মিডিয়ায়। পথের পাঁচালী ডটকম এ রাঙীগাই
খুঁজে পেয়েছে অপুর লাশ!


এক কিস্তি ক্ষণবাদ...

প্রেম এবং  লক্ষ্মীঠাকরুণ উভয়ের চাঞ্চল্যের ক্ষণবাদকে স্বীকার করুন। তবে তার অনাদি
আলোটা আত্তীকরণ করে বাঁচুন।

এসব  কথা বলেছি অনেকবার। ক্লিশে হয়ে যাবার আগে আর ও এক কিস্তি। সব কিছু কেমন
যেন হজবরল হয়ে গেল। হাসিতে অনাবশ্যক চন্দ্রবিন্দু  এল। এলোমেলো ভাবনার লোমশ
চান্দ্রঘ্রাণ বাবুবাগান গলিবাতাস লুলা লুলু কেউ তাদের বয়স বলতে পারলো  না, কান্নার
সায়েরী থেকে সানুনাসিক সরে গেল। বিড়ালেরা তালব্য শ আর রুমালেরা মা হয়ে  গেল,  
তবু বোঝা গেল না রুমালের গর্ভাধান কে করেছিল। অথচ সামান্য একটা রুমাল ইস্যুতে
ওথেলোরা ডেসডিমোনাদের টুটি টিপে ধরল।


হযবরল


এখানে এসে সবই কেমন যেন হজবরল হয়ে  গেল। নদীরা নদীতে মিশে অ্যাসিডেরা ক্ষারে
মিশে বিক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় গাদিয়ারা বালিয়াড়ি হল, ড্রেন আউট হল পতিতগর্ভ সম্পর্কগুলো।
স্বামীদের স্বামীয়ানা কামীদের কামিয়ানা কিছুই প্রমাণিত  হল না। একটা বড় শামিয়ানার
নীচে বিষে বিষাদে বিস্ময়ে বিষক্ষয়ে যে এল, সে 24/7-এর দীর্ঘশ্বাস ফ্লাশ অন করতে 
লাগলো নিজস্ব চেম্বারে। অনুভবে সে নিজেকে চেনাতে পারলো না বলে ঝারখাওয়া ইগোপটে
কিছু ভুল  বার্তা পৌঁছালো। কাগজের নৌকা থেকে  কাগজ এবং  নৌকা দুজনেই আত্মপরিচয়
হারালো। রবি ঠাকুর থেকে বুল্লা পা-জী, সকলেই নিজেকে  জানার জন্য  গান গাইলেন
“বুল্লা  কি জানা ম্যায় কোউন...?


শাশ্বত পড়ে থাকলো

আসলে সব কিছুই বায়োডিগ্রেডেবল। কালে খাবে.... মাটিতে মিশে যাবে... তবুও যা পড়ে
থাকলো তার না শাশ্বত, চিতায় পোড়ানোর পর যেন পড়ে থাকা নাভিমূল... 

সুধীন দত্তের শাশ্বতী  পড়ে পড়ে পড়িয়ে পড়িয়ে অনাদি আলোর ক্ষণকালীন আত্তীকরণে
কণা-কণাতর-কণাতম নবনির্মাণে থেকে ও ব্যক্তিগতভাবে যা বুঝলাম, ভুলো পড়া আচারের
শিশি আর পুরনো বাই-সাইকেলটাকে ভুলে যাওয়া যাবে না  কিছুতেই। শুধু বিয়েভাঙা সানাই
বাজবে আর নহবতে পড়ে থাকবে পূর্ণিমারাতের বায়োগ্রাফি ও বায়োডাটা। 

আসলে সবই  বায়োডিগ্রেডেবল... মাটিতে মিশে যাবে... কালে খাবে...




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন