চারবৃক্ষ
সারা পৃথিবী বহুদিন ধরে বৃক্ষের চিৎকারে ভরে আছে
একটি গাছও কোনদিন ঠিকভাবে লাগিয়ে যত্ন করিনি
তাই বোধহয় গুমড়ে গুমড়ে এইসব কান্না দিনরাত শুনি
আসলে মাটি নেই আমার
থাকলে চারটে গাছের নিজস্ব একটি বাগান হতো
মেঘ আটকে বৃষ্টি হতো সেখানেই... একলা ভেজার মতন
ঠান্ডাছুরি
কোল্ডড্রিঙ্কস্ কেউ নিষিদ্ধ করবে না
এ তথ্য বহুদিন ধরে জানা অনেকেরই
কারণ বুদবুদ ফুঁসে উঠলেই জমে যায় লিপস্টিক,
রাত নামে সব জায়গায়।
এই আশ্লেষের নাম ‘তৃতীয় বিশ্ব’
ঠান্ডা রস আর বিষে তার জন্মান্ধের অধিকার।
বোতামঘর
আমি তোমার শার্টের বোতাম ঘরগুলো
পুনঃর্নিমাণ করি
ফাঁকে ফাঁকে ভরে দিই আমার দ্বীপ ও সমুদ্র
কোনো একদিন যখন খুঁজে পাবে সেই শার্ট
বোতাম খুলতেই একবিন্দু মহাসাগর
ঝুপ করে ঢুকে যাবে তোমার নিভৃত শরীরে
সেদিন তুমুল ঝড়, সাইক্লোন সব... সব
কবির দাম্পত্য
কবির দাম্পত্য দেখি
যেন আশাবরীর বিভাটি, তাল, লয় ছন্দ হারায় হারায়
একটি মোমশরীর এবং তার ঠান্ডা গলে যাওয়া,
উষ্ণতা ফেলে যায় তবু
লিখে যেও কবি সেসব ঝড়ের ঠিকানা
যারা বলে গেছে, এ জন্মে অগম্য,
তুমি ও সে
তাই বুঝি তুমি লিখে গেলে অসুখের কবিতা
দুর্বল ডালপালায় মিথ্যে সন্ধ্যা ও গ্রীষ্মকালীন
শিশিরপাত।
নিঃসঙ্গ পতাকা
একটি পতাকা একা একা হেঁটে আসছে
জলীয় রঙে ভেজা অথবা কোনো রঙ নেই তার
দীর্ঘ রাস্তা পাড়ি
দিতে দিতে সে ক্লান্ত
ধারক চাই, বাহক চাই, রঙ চাই
পৃথিবীর কোনো পতাকা নিঃসঙ্গ হতে পারে না
একাকী পতাকা কি অপমানিত!
সে লালায়িত একটি মুষ্টিবদ্ধ, শিরাকীর্ণ
হাতের জন্য
পতাকা দেখেই দরজা বন্ধ করেছে ভয় পাওয়া যুবক,
পতাকা বইবার মতো কাঁধ নেই সেই বাইশ বছরের যুবকের
চোখে খর গ্রীষ্ম, ক্লান্ত, নুয়ে পড়া পিঠ
পতাকাটিকে তুলে নেবার একটিও মানুষ নেই পৃথিবীতে!
সবকিছু ছেয়ে গেছে রাশি রাশি ভয়ে, প্রিয়জনের
অকাল মৃত্যুতে
একা একা একটি পতাকা রঙহীন
মরে যাচ্ছে, মরে যাচ্ছে রাজপথে,
কোনো এক যুবকের অদৃশ্য চিবুকে হাত রেখে।
|
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন