প্রতিবেশী সাহিত্য
(অনুবাদ : জয়া চৌধুরী)
কবি পরিচিতি
:
পোষ্ট মডার্ন সাহিত্যের অন্যতম আইকনিক কবি আলফোনসিনা স্তোর্নি’র জন্ম ১৮৯২ সালে সুইজারল্যান্ডে। কঠিন শৈশব,
দারিদ্র্যময় বাল্যকাল কাটিয়ে পরবর্তীকালে নিরন্তর অসুস্থতায় জীবন কাটিয়েছেন। তাঁর
কবিতায় সংগ্রাম, সাহস, প্রেম নিহিত। এবং অবশ্যই নারী হিসাবে কৈফিয়ত চাইবার
দৃষ্টিতে লেখা। ১৯৩৮ সালে আর্জেন্টিনায় মারা যান। আর্জেন্টিনার মার দে প্লাতায়
সমুদ্রের তীরে তাঁর মৃতদেহ দেখতে পাওয়া যায়, যদিও বোঝা যায় নি, তিনি আত্মহত্যা
করেছিলেন কিনা, অথবা কীভাবে প্রয়াত
হন।
Adiós (বিদায়)
বস্তুরা যা মরে যায় আর পুনরুজ্জীবিত
হয় না,
বস্তুরা যারা মরে যায় কখনই ঘুরে
দাঁড়ায় না।
শূন্যতা পুড়িয়ে দিতে থাকে এবং যে কাচখানি রয়ে যায়
চিরকালের মত গুঁড়ো হয়ে যায় ও অনন্তকাল
সেরকমই থাকবে!
শাখা থেকে যখন পড়ে যায় কুঁড়ি
পরপর দুবার ওরা আর ফোটাবে না ফুল...
অবিশ্বাসী বাতাসের ধাক্কায় উপড়ে যাওয়া
ফুলেরা
বরাবরের মত ধ্বস্ত, অন্তহীন কালের
জন্য!
দিনগুলো যারা চলে গেছে এবং যে দিন
হারিয়েছে,
সেইসব জড় দিনেরা কখনও ফিরবে না আর!
কী ভীষণ কষ্ট সময় ওঁরা বিচ্ছিন্ন হয়ে
গিয়েছে
একাকীত্বের ডানার নিচে!
ছায়ারা কী দারুণ ব্যথাময়, ধ্বংসকারী
ছায়াসব,
আমাদের অন্ধকার থেকে জন্ম নেওয়া সেইসব
ছায়া!
ওহ্ চলে যাওয়া সেসব বস্তু, অপসৃত
জিনিষ যত,
মহাবৈশ্বিক সেসব জিনিষ চিরকালের মত
ছেড়ে গেছে আমাদের এভাবেই!
হৃদয়... নৈঃশব্দ্য!... ঘা’গুলো ঢেকে দেয় তোমায়!...
-সংক্রামিত ঘা সব ঢেকে দেয় তোমায় জঘন্য!...
যা যা তোমার কাছে আসে সব মরে যায়
তোমাকে ছুঁতেই,
মন্দ হৃদয় অস্থির করে দেয় আমার যত
ব্যকুলতা!
বিদায় চিরকালের মত আমার মিষ্টি যত
বস্তু!
কৃতজ্ঞতায় মোড়া আমার যত সুখ বিদায়
তাদেরও!
ওহ্ মৃত বস্তুরা, অপসৃত বস্তু সব,
মহাবৈশ্বিক সেসব জিনিষেরা আর কখনো
ফিরবে না যারা!
Viaje (ভ্রমণ)
আজ আমাকে দেখল চাঁদ
শ্বেতশুভ্র অপরিমিত।
ঠিক কাল রাতের মতই,
সকালের মত এক।
কিন্তু ও অন্য, কখনও
বিরাট বড়সড় বা ফ্যাকাশে কত।
আমি বাতির মত কাঁপি
যেমন কাঁপে ওরা জলের ওপর।
কাঁপি চোখের ভেতর
যেভাবে কাঁপে অশ্রুজল।
কাঁপি মাংসমজ্জায়
যেভাবে আত্মা জানে কাঁপতে।
ওহ্! চাঁদ সরিয়ে নিয়েছে
ওর দুই রুপালি ঠোঁট।
ওহ্, যেভাবে আমায় বলেছে চাঁদ
সেই তিনটে পুরনো শব্দ-
“মৃত্যু, প্রেম ও রহস্য...”
ওহ্! মাংসেরা আমার ফুরিয়ে যায়!
মৃত মাংসের ওপর
বেঁকে যায় আত্মা।
আত্মা? নিশাচর বেড়াল?
লাফ দিয়ে বেরনো চাঁদের ওপর।
চলে যায় দীর্ঘ মেঘের ওপর
দুঃখী এবং কুঞ্চিতও।
চলে যায় দীর্ঘ মেঘ দিয়ে
শ্বেতশুভ্র চাঁদের ওপরটিতে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন