সোমবার, ১ জুলাই, ২০১৯

সপ্তর্ষি সান্যাল




খিদে

আজ যদি আমার স্বপ্নে দেখা হয়ে যায়,
এস।

এস 
সত্যির মত, স্মৃতির মত, 
বন্যার মত, যে জলে পৃথিবীর জন্ম,
এস।

এস
সমুদ্রের অনন্ত শব্দ হয়ে, 
যে শব্দ আকাশ শোনেনি কখনো
এস।

অনেকদিন আগে ভুলে যাওয়া গান,
শীতের আগুনের উষ্ণতা,
যেভাবে পুরুষেরা সারাজীবন 
পুরোন ক্যালেন্ডারে জলকন্যাদের খোঁজে
আর মরার আগে একবার দেখে যেতে চায়
এস।

যদি তোমার স্বপ্নে কখনো দেখা না হয়
এস।

যেও না, 
এস।


মৃত্যুর কবিতা

আমি মৃত্যু নিয়ে একটা কবিতা লিখতে চেয়েছিলাম।
বিষয়টা সোজা। প্রচুর কাক উড়ে যাবে একদম প্রথমে।
আস্তে আস্তে আগাছা আর জঙ্গল ঘিরে ফেলবে পোড়ো বাড়ি।
ডুবন্ত চাঁদ আর সূর্যাস্ত প্রতিফলিত দীঘি।
চারিপাশে বরফের হোটেলে বসে চিঠি লিখছে তরুণ, চিঠির পর চিঠি।
তারপর কবিতাটাকে বেঁকিয়েচুরিয়ে রেললাইন,
দিগন্ত পর্যন্ত রেললাইন
হাঁটার পর হাঁটা, হাঁটার পর হাঁটার রেললাইন
রেললাইন যেখানে কোন গন্তব্য নেই
সমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে থাকা তরুণ
সমুদ্রের সাথে কথা বলা তরুণ
যে কথা শুধু সমুদ্রের সাথে বলা যায়,
আর যার উত্তর দেয় না সমুদ্র
ভারি হয়ে আসে কবিতা
জলে ডুবে যাওয়া মানুষের জামার মত ভারি হয়ে আসে কবিতা
বিরাট বিরাট গর্ত তৈরি হয় কবিতার মাঝখানে
শিরায় শিরায় ঢুকে পড়ে নীল রঙ


শীত

শীত
চারিদিকে এত শীত
আমি সমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে তাকে খুঁজি
রাত্রির শেষ নৌকোর মত তার চোখ
রোদের তৈরি আঙ্গুল
তার গলা
তার ঠোঁট
তার ঘ্রাণ
সব লাইন শেষ হয়ে যায়
সব নৈশব্দ
সব মৃত্যু
বালির মত ভেঙ্গে পড়ে, জলপ্রপাতের মত
আমার আঙ্গুলের ফাঁক থেকে ঝরে পড়ে মৃত্যু
তোমার পর কোন কবিতায় আর মৃত্যু নেই, শুধু তুমি...


তিনটি মেয়ে-

দুপুরে
তিনটি মেয়ে একলা বসে কী কথা বলে?
তারা কি জলপ্রপাতের কথা বলে? স্নানের কথা?
জলের শব্দ, যেখানে তরুণের যাওয়া মানা-
তারা কি মৌমাছি, হলুদ ফুল আর সোনালী সূর্য দিয়ে 
সাজান বাগানের কথা বলে? 
কোন ছেঁড়া আপেলের বেলায়
তিনটি মেয়ে উঠে আসে ট্রামে,
ঘড়ির কাঁটার পতন হয় পরের খোপে।
জন্ম নেয় নৈ:শব্দেরা।
তারা কি তোমার কথা বলে?
পুরুষ,
তুমি কি একবারও জানতে চাও না, 
দুপুরে
কালো ঘাটের পুকুরেই

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন