শনিবার, ৮ জুন, ২০১৯

বহতা অংশুমালী




পিরিণ্ডি  রাক্ষস আর মুদী

পুকুরের জলা দিকটায় 
একটা করুণ রাক্ষস বসে থাকে 
তার বিশাল বিশাল নখে শ্যাওলা 
তাকে পাখিরা ভয় পায় না 
মাছেরা ভয় পায় না 
বাঁশবন কাশবন তাকে খুব নিবিড় অন্ধকারে ঘিরে ধরে 
আমি ভয় পাই 
আমি তাকে রাত বিরেতে আমাদের বাড়ির আশপাশে 
ঘুরে যেতে দেখি 
রাক্ষসেরও খিদে পায়,
রাক্ষসেরও রাজকন্যা থাকে।  
রাক্ষসেরও রাজকন্যা থাকে -  আমি ছোট তাই 
জানলা বন্ধ করে শুই, 
গভীর রাত্রে যেই  
রান্নাঘর নিকিয়ে মা আসে 
রাজকন্যা রাজকন্যা গন্ধ ভেসে যায়,  
আমি যদি 
আমি যদি কাশফুল দিয়ে ওর বুক বিদ্ধ করি?  
আমি যদি পুকুরের খুব বড় মাছ ধরে এনে তার পটকা ফাটাই? 
রাক্ষস উপুড় হয়ে শুয়ে থাকে 
তার গায়ে বিন্দু বিন্দু ফুল ঝরে পড়ে।  

কুপির আলোয় ঘেরা মুদীর দোকানী খুব জ্ঞানী 
রসুন কিনতে গেলে বলে ওঠে তোর না অশৌচ? 
ও কত গল্প জানে, ওর চারপাশে - 
অন্ধকারও গম্ভীর, অন্ধকারও খুব স্বল্পভাষী 
আমি আর বাবা খাই জলভাত হুসহাস করে 
ঘুমের ভিতর শুনি রাজকন্যা থেকে থেকে কাঁদে


ভালোবেসে মনে হয় সমস্তই বলি 

ওদের রোয়াকে সেই মেয়েটা আবারো
ওগরায়, আকাশেরো কেমন অসুখ 
হঠাৎ নৈঋত কোণে মেঘেদের সারি ধেয়ে এলো
 
হঠাৎ শ্লেটের মতো আসমানে
  একলা এক চিল 
বৈদ্যুতিন তারের কম্পনে
 
নিমেষের দাঁড় খুঁজে পেলো
 
ভালোবেসে মনে হয় সমস্তই বলি
 
মনে হয় ক্রুড় এই আকাশের থলি
 
আবার উজাড় হোক বিপুল নিবিড় বর্ষণে
 
তুমি স্নাত কাকের মতন 
আহা কার অভিকর্ষে
 
আমার রোয়াকে আসো বিপন্ন শ্রাবণে
কি জানি কি হিংসা জাগে
 
পুরনো রক্ত মাখা ছুরিটাকে ফের
 
লুফে নিতে লোভ লাগে
 
আবার আহত করি
 
আবার শুশ্রুষা করি
 
ঘাঁটা বিছানার আবাহনে
 


ঘুম

দূরের ফোনের উপরে সে
বিছানা পেতে শুয়ে আছে
উনোনে তার কালি
নিয়মগুলো পায়ের কাছে ময়লা কাঁথায় ফেলা
শুয়ে থাকার ভঙ্গীটুকু
 
ক্লান্তি আঁকে শুধু
গভীর ঘুমের ভিতর থেকে
স্বপ্ন হয়ে মায়েরা ওঠে
পা নাড়া দেয় চল!
খেলবি বিকেল, চল!
 
তবুও তো সে দেয় না সাড়া
জলের ভিতর শব্দ ডুবে কাঁদে
বাইরে সবাই নড়ে চড়ে
কতকিছু খেয়ে থুয়ে ফেলে!
সে কি ঘুরে পাশ ফিরে শোয়?
ছায়ার ভিতর কান্না কান্না মা ফিরে যায়
তেল মালিশের পা-
কালশিটে কে জড়িয়ে ধরে আঁকড়ে শুয়ে থাকে
এমন করে মারলে কেন?
রইলো পড়ে হাঁড়িকুড়ি
রিং হয়ে যায় তবু-
দূরের ফোনে হাত রেখে সে অঘোর শুয়ে আছে





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন