বুধবার, ১ মে, ২০১৯

জয়তী দাস




কৌশলে

এভাবেই তুমি জানতে,
দেশলাই কাঠি ছুঁয়ে বারুদে আগুন ধরাতে!
এভাবেই তুমি শিখে নিয়েছো সমস্ত পোড়ানোর কৌশল,
চাদরের একপাশ থেকে কেটে নিয়েছো রাতের একাংশ সুখ!

প্রতিটি বিবাহিত ঘর গৃহস্থালি বর্ষার ছাদে বন্দি,
এখন আর বৃষ্টি পড়ে না, কেমন করে জানলে!
খুব জোরে আওয়াজ হলে সেটাও কোনো শব্দ
কেউ ভেঙে গেছে! জড়ত্বের ভেতরেও তো প্রাণ খোঁজো!

কেমন করে জানতে পারো, শ্মশান বলতে শেষ--
জল দেহ ছেড়ে মাটির কাঠপুতুলির ভেসে থাকে নিঃশ্বাস,
খুঁজতে খুঁজতে কতগুলো আলো নিভে গেলো
আবার কোথাও জেগে উঠেছে বাড়িঘর, ফসলের মাচা!

পুরনো পাড়ায় জানালায় জংপড়া আকাশ, 
পাঁচিলের ডিঙিয়ে যাওয়া পাখি, বাতাসে দলছুট
দুপাশে হেলানো পশ্চিমের কার্নিশের রোদের নিঃশ্বাসে
আমরাও ছুঁয়ে বাঁচি রোজের আগুন সুখ--


স্বীকারোক্তি

তুমি কাল কিছু অপরাধ করেছিলে,
তোমার আঙুল, চোখ বলে দিয়েছে সে কথা
আমি শুধু তাকিয়ে দেখেছি, সে নত মুখ
কথার ভেতরে কথার যন্ত্রণা, অস্থিরতা;

কোনো শব্দ ছাড়াই, সব ক্ষমা হয়ে যায়!
নিঃশব্দ সব বুক পেতে, আড়াল করে দেয়
যখন সমস্ত নিষ্ঠুরতা শিশুর মতো জড়িয়ে ধরে,
খুব কাছে এসে সমর্পণ দু'চোখের ভারে,
আমি ভোরের আলোয় মিলিয়ে দিই সব-


অপেক্ষা

তুমি একবার আমার মুখের দিকে তাকাও--
আমিও তোমার দিকে তাকিয়ে রয়েছি,

যেভাবে একটা মৃত্যু আর একটা মৃত্যুর দিকে তাকায়
অসহায় ভয়ংকর দৃশ্যের সাক্ষী থাকে পৃথিবী!

আমাদের সেই শেষ মুহূর্ত জানতো আমরা কার, কে?
আমাদের বুকের ভেতরে কেউ পেনসিল দিয়ে মানচিত্র
আঁকেনি,
আমাদের ধমনীতে পরস্পরের বিরোধী স্রোত বয়নি, তবুও--

আমরা হারছি, একটু একটু করে আরো মৃত্যুকে ছুঁয়ে নিচ্ছি
ঘাত প্রত্যাঘাতে নিজেদের ভেতরে পুরেছি লক্ষ টন বারুদ--

শুধু সংকেতের অপেক্ষা, আর একটা মিশন সাকসেস হলে
আমরা সাদা ছাইয়ের আকাশে পায়রা ওড়াবো, অপেক্ষা--

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন