উদযাপন
কত আলো, কত লোক,
আজ যে আমি বড় কুটুম!
প্যান্ট শার্টের লোকটা বলে, "আপনার স্বর্গীয়া মেয়ে
গণধর্ষিতা।
আপনার কী বক্তব্য এখন? মনের অবস্থা কেমন?"
হ্যাঁ, আজ তো আমারই বলার দিন!
আমার মেয়েকে শেয়াল কুত্তায়
ছিঁড়ে খেল
আজ যে আমার বড় সুখের দিন গো!
আমাকে তো আজ বলতেই হবে
শয়তানরা ঠিক কোন কোন জায়গায়
আঁচড় মেরেছে!
গোপনাঙ্গের ক্ষতি শতাংশ কত!
জামাকাপড়ই বা কত দূরে ছিল!
তবে না হিসেব হবে!
আমার মেয়ের ইজ্জত, জীবনের দাম আমাকেই ঠিক করতে হবে যে!
কত কত লাখ!
মেয়েটা মরেছে মরুক গে! আজ তো
আমারই বলার দিন!
আমাকে দাঁড় করাও শিগগির, মোম-মিছিলে এসো সবাই...
আমরা উদযাপন করি।
বিসর্জন
মা তুমি কিন্তু কথা দিয়েছিলে
আমায় নিয়ে পুজোয় ঘুরতে যাবে
এবার...
না না
দাদুর ঘরে রোজ রাতের ঘুরতে
যাওয়ার মত নয়
ওতে যে বড্ড
ব্যথা হয়!
একটু অন্য কোথাও অন্যভাবে
যাবে বলেছিলে...
দাদু আমায় খুব আদর করত জানো
তোমাকে আমাকে একভাবেই তো
ভালবাসত!
অবশ্য তুমি তো জানবেই
তুমিই তো ওঘরে হাত ধরে নিয়ে
যেতে!
দাদু যখন একটা একটা করে ছুঁচ
ফোটাতো আমার ওখানে
আমি চেঁচিয়ে বলতাম,"মা রে... তুই কোনখানে?"
আমি যত কাঁদতাম তুমি তত
হাসতে
আমি যত মরতাম তুমি তত
বাঁচতে।
ওরা বলেছিল ছুঁচ আমার ফুটো
করেছে যকৃৎ অগ্ন্যাশয়
তোমরা কেউ বোঝোনি...
জবাই হয়েছিল এই কমদামী হৃদয়!
মা তোমায় ছুঁতে চেয়েছিল আমার
চিৎকারেরা...
দাদু তোমায় জাপটে ছিল
তাই হয়ত নাগাল পায়নি বেচারা...
বড়রা বড্ড বোকা... মুখ্যু সব!
আমাকে খালি শেখাত
"কুসন্তান যদিও বা হয়,
কুমাতা কদাপি নয়।"
তোমাকে আমি স্বপ্নে দেখেছি কতবার...
একটা টুকটুকে লালশাড়ি
কপালে একটা ছোট্ট লাল টিপ।
কত খেলেছি সেখানে তুমি আর আমি...
সে স্বপ্নে দাদুর আঁচড় নেই
খিমচে ধরা আদর নেই।
ওখানে তুমি আমার ভাল মা।
তুমি তবে জেগে উঠলে এত নোংরা
কেন মা?
সাধনঠাকুর তোমার ঠাকুর ছিল
না?
তোমার ঠাকুর আমায়
মৃত্যুশান্তি দিয়েছে মা...
তুমি এবার তবে খুশি তো?
এখানে আমি বেশ আছি মা
এখানে কেউ ছুঁচ ফোটায় না
এখানে কেউ ব্যথা দেয় না
এখানে শুধু একটা কথাই ফিরে
ফিরে কানে বাজে --
"ঠাকুর থাকবে কতক্ষণ
ঠাকুর যাবে বিসর্জন!"
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন