শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০১৯

<<<< সম্পাদকীয় >>>>




কালিমাটি অনলাইন / ৬৫ 

    
সম্প্রতি একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের একটি প্রতিবেদন রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছে আমাকে। ‘ঢাকা টুডে’ প্রচারিত গত ১৭ই ফেব্রুয়ারী ২০১৯এর এই প্রতিবেদনের হেডিং ছিল “ভারতের প্রথম ‘ধর্মহীন নাগরিকে’র স্বীকৃতি পেলেন স্নেহা”প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ভারতের তামিলনাড়ুর তিরুপাত্তুরের বাসিন্দা  স্নেহা পার্থিবরাজের কাছে ৫ই ফেব্রুয়ারী ২০১৯ দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই বিশেষ দিনটিতেই তিনি তাঁর স্বপ্নের বাস্তব রূপ দেখতে পেলেন। কেননা তিনি স্বপ্ন দেখতেন এমন একটি মানব সমাজের, যেখানে জাতি-ধর্মের কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে নিতান্ত কম বয়স থেকেই সমাজে প্রচলিত তথাকথিত জাতি ও ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন না। তাঁর বিশ্বাস ও আস্থা ছিল মানবধর্মেএবং তিনি এই শিক্ষা পেয়েছিলেন তাঁর পরিবারের লোকজনদের কাছ  থেকেই। আর এই শিক্ষার পরিপ্রেক্ষিতেই স্নেহা ২০১০ সালে নিজেকে ‘জাতি-ধর্মহীন’ ঘোষণা করার জন্য আবেদন করেছিলেন সরকারের কাছে। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন সরকারী কর্মকর্তারা। কিন্তু পেশায় আইনজীবী স্নেহাকে হতোদ্যম করার ক্ষমতা কারও ছিল না। তাঁর যুক্তি ছিল, তথাকথিত জাতি-ধর্মে বিশ্বাসীরা যদি সরকার থেকে শংসাপত্র পেয়ে থাকেন, তাহলে যাঁরা তথাকথিত জাতি-ধর্মে অবিশ্বাসী, তাঁরা কেন শংসাপত্র পাবেন না! শুধুমাত্র মানবধর্মে বিশ্বাসী স্নেহা ২০১৭ সালে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে আবার আবেদন করেন সরকারের কাছে। যেহেতু স্নেহা ইতিপূর্বে সামাজিক শ্রেণীভিত্তিক কোনো সরকারী সুযোগ-সুবিধে কখনই ভোগ করেননি, তাই এবার সরকারী প্রশাসন তাঁর আবেদন গ্রহণ করতে বাধ্য হন। এবং অবশেষে দীর্ঘ ন’বছরের আইনি লড়াইয়ের পর গত ৫ই ফেব্রুয়ারী ২০১৯ তারিখে তিরুপাত্তুরের তহশিলদার টি এস সাথিয়ামূর্তি স্নেহার হাতে তুলে দেন সরকারী নথি। স্নেহা কোনো জাতি ও ধর্মের অন্তর্গত নন, নথিতে তা উল্লেখ করা হয়েছে।

তিরুপাত্তুরের সাব-কালেক্টর বি প্রিয়াঙ্কা পঙ্কজাম জানিয়েছেন, ‘আমরা তার স্কুল কলেজের সমস্ত নথি খতিয়ে দেখেছি। সেইসব নথিতে জাতি এবং ধর্ম এই দুটি কলাম সব জায়গায় ফাঁকা ছিল। তাই আমরা তার দাবিকে স্বীকৃতি দিয়েছি’ 

প্রসঙ্গত উল্লেখ করা প্রয়োজন, স্নেহা তাঁর এই লড়াইয়ে পাশে পেয়েছেন তাঁর স্বামী কে-পার্থিবরাজাকে। কে-পার্থিবরাজা নিজে সাহিত্যিক। তাঁরা তাঁদের এই  লড়াই পরবর্তী প্রজন্মে ছড়িয়ে দেবার জন্য তাঁদের তিন ছেলেমেয়ের স্কুলের ফর্মেও জাতি ও ধর্মের কলাম ফাঁকাই রেখে দিয়েছেন।

পরিশেষে, আরও একটি কথা উল্লেখ করা হয়তো বাহুল্য বলে মনে হবে না।  প্রকাশিত এই ৬৫তম সংখ্যার হাত ধরেই ‘কালিমাটি অনলাইন’ ব্লগজিন ছ’বছর পূর্ণ করে সাত বছরে প্রবেশ করল। এবং তা সম্ভব হয়েছে আপনাদের সবার সহযোগিতা ও শুভ কামনার জন্যই। আপনারা আমাদের কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা গ্রহণ করুন। 


আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের ই-মেল ঠিকানা : 

kajalsen1952@gmail.com / kalimationline100@gmail.com 

দূরভাষ যোগাযোগ :   
        
08789040217 / 09835544675 

অথবা সরাসরি ডাকযোগে যোগাযোগ :

Kajal Sen, Flat 301, Phase 2, Parvati Condominium, 50 Pramathanagar Main Road, Pramathanagar, Jamshedpur 831002, Jharkhand, India

1 টি মন্তব্য: