হকিকত
পেরাইমারী ইস্কুলে গাঁয়ের বউদের জড়ো করে এক দিদিমণি
বক্তিমে দিল।একটাই
জেবন, নিজের
মতো বাঁচো। সোয়ামীর
মারধোর গালমন্দ শুনতি হবে বলে আল্লাহ তোমার জনম দেয় নি। কাজ করতি হবে, কাজ! তারা
যে রাতদিন গাধার সমান খাটতিছে সেসব নয়, অন্য কাজ! নেখাপড়া শিখতি হবে, বাচ্ছাদের
সহবত শেখাতি হবে, মাথা তুলি বাঁচতে হবে।
কচি বউ নাজমাটা বলে ফেলেছেল – ডর
লাগে, এট্টু
ইদিক উদিক হলেই তালাকের কতা বলে। মাথা তুললি নেঘ্ঘাত তিন তালাক দে দেবে! বাপের
ঘরেও ঠাই দেবে নি। তেখন
যাব কোথা?
তা দিদিমণি কইলে, সরকার
নাকি তিন তালাকের নেয়ম বদলে দেছে। তালাক দিলি সোয়ামীগুলোর জেল হবে, বউগুলারে
খাওয়াপড়া দিতি হবে। আরো
কত কি যে বকলে বাপের জন্মে সেসব শোনেনি কেউ। সক্কলের মন উচাটন, মাথা
বনবন করতি লেগেছে।
বিবিগুলাকে এককাট্টা হতি হবে। বেপদে পড়লি নাকি সরকার পেছনে থাকবে। মনের ভিতরি উথাল পাথাল। ভরসা করতি ইচ্ছে জাগে। ভয়ের পাশে টুপ করে বসে পড়ে সাহস। হাসির ঝলক মেখে ঘরে গেছে সব্বাই।
দাওয়ায় পা দে চোখ গেল উঠোনময় ছেটানো সেদ্দ করা
ধানগুলাতে। উপুড়
হয়ে গড়াচ্ছে পেছন কালো কড়া। তার পাশেই খসে পড়ল জিন্নত বিবির কুড়িয়ে আনা সাহস। পিছন ফিরে বিড়বিড় করে - হা
আল্লহা! দিদিমণি
গো, তোমার
সরকার কোথা!
|
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন