বৃহস্পতিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৯

পদ্মাবতী রায় চৌধুরী




ধী

যে কোনো আগুনেই ধীরে ধীরে ধী জ্বেলে
ঘি ঢালতে হয়...
তারপর মন থেকে তোমার
পুরুষআঙ্গুল যেদিকে ঘুরেছে,
শিখাটুকু নারী হয়ে শিহরণে এঁকেবেঁকে
সে আঙ্গুলে আঙ্গুল ছোঁয়াতে চায়...
শীৎকারেরা ঘন নীলে নীল ছড়ায়, 
বাতাসের ধূলি ধূলিকণায়...            

আসলে আগুনও যে তোমার ইশারায়
নেশারুর মত ব্যথা পেতে চায়,
শুধু...
যেকোনও আঙ্গুল ধী দিয়ে আগুনের বুকে 
ঘি জ্বালতে জানেনা...

আর...

তোমার আঙ্গুল তো এখনও,
আগুনের ঠিকানাই জানে না ৷


সৃষ্টিসম্ভবা


এই অবস্থাটাকে সৃষ্টিসম্ভবা বলে, 
যখন তুমি পিছোতে পিছোতে একা ৷
দেওয়ালটাও তােমাকে দেখে,
অবজ্ঞায় ছুঁড়ে দিচ্ছে মরিচ মরিচ ঘৃণা
আর বিতৃষ্ণা করুণা ছড়ানো হাসির মকটেল...

তখন তোমার বুকের ভিতরে টগবগ করে হয়ত
ফুটছে খেজুর গুড়ের মত আর্তনাদ...

তোমার... তোর... আপনাদের...
দেওয়া কষ্টগুলো পাশাপাশি ঢেলে ঢেলে 
গভীর রাতের ঘুমজড়ানো চোখে,
সফেদ কাগজের খোলা উনুনে 
শব্দেরা এখন নীল আগুনে ফুটন্ত ৷
মাজুবিবি জ্বাল দিয়ে চলেছে ...
ঘড়াভরা অপমান আর কান্না ৷
রসের তার ঘন ঘন ঘনিষ্ঠ হয়ে 
ফুটে উঠছে স্বচ্ছ স্বচ্ছ লালচে আগুন
অথবা...
অজন্তার গুহাচিত্রের মত উল্কি...

এই অবস্থাটাকে সৃষ্টিসম্ভবা বলে, 
যখন...
জমে যাওয়া ব্যথাকে কবিতা বলে ভুল হয় ৷


আলাপ


মানুষকে আঘাত দিলে
ঝরে পড়ে রক্ত

খেজুর গাছে ব্যথা দিলে
কাঁটাশরীর বেয়ে ঝরে পড়ে রস
যত চিকন ব্যথা...
তত মিঠা রস ৷

রক্ত আর রসের তফাৎ কি জানো?
একটা জীবন দেয়,
আরেকটা কবিতা...

আসলে তোমার সাথে একটা খেজুর গাছের আলাপ হয়েছিল...
তুমি তাকে মানুষ ভাবার ভুল করেছো ৷



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন