সমগ্র রচনাবলী
কারো সমগ্ৰ রচনাবলীর সামনে দাঁড়ালে নিজের মুখটাকে
দেখতে পায় মুকেশ। সারা পৃথিবীটাকে ও সংলাপে জারানো দেখতে পায়। এ তো মানুষের
কথাপৃথিবী। মুদির দোকানে গিয়ে দাঁড়াল মুকেশ। দুই তরুণ বন্ধু বেশ বুদ্ধিদীপ্ত পোষাক।
: ফেসবুকে দেখছি না তোকে অনেকদিন, কী ব্যাপার?
: এই তো খাতা দেখার কাজ চলছে। শরীরটাও ভালো না।
: কেন কী হয়েছে? শীতটা জাঁকিয়ে পড়েছে
বলে অসুবিধা হচ্ছে, না?
: না না, শীতফিত কিছু না। আমার গ্যাসের প্রবলেম। বিকেলের
দিকে একটা অস্বস্তি হয়। গ্যাস অম্বলে একটু কাবু হয়ে আছি।
মুকেশ সরে এলো। সামনে শনিমন্দির। দুজন রিক্সাওয়ালা।
: কী রে, কেমন আছিস?
: হাঁটুতে ব্যথা। ডাক্তার দেখালাম। ব্যথা মারার ওষুধ
দিয়েছে। তাই এখন ভালো আছি। রিক্সা নে বেরুলাম আর কী।
: আজ এক মজার ব্যাপার হয়েছে জানিস। স্টেশন থেকে এক
হাফবুড়ি ভারিক্কি মেয়েছেলে
উঠেছিল। নামার সময়ে শাল জড়িয়ে দুম করে পড়ল। ভাড়া দু’টাকা বেশি নেব ভাবলাম, সে
আর হল না।
যেতে যেতে যতটুকু কথা কানে আসে। শনি মন্দিরে একটাকা ছুঁড়ে দিয়ে মুকেশ একটু আনমনেই বাজারের দিকে চলল। হরিবান্ধবের দোকানে মাছভাত ডিমভাত নিরামিষ মিলের দাম ওর মুখস্থ হয়ে গিয়েছে। খেয়ে নিতে হবে হরিবান্ধব ভোজনালয়ে। মুকেশ মনে মনে হাসে। সন্ধিবিচ্ছেদ করতে করতে চলে। ভোজন যুক্ত আলয় সমান সমান ভোজনালয়। চোদন যুক্ত আলয় সমান সমান চোদনালয়।
এক বাজারি তোলাদার আর সব্জিওয়ালী।
: গতমাসের টাকা এখনও পাইনি রে। এর মধ্যে যদি না পাই
তোর কি হবে জানিস?
: কি হব্যা?
: তোর প্যাংলা শরীরে আর কিছু হবে না। তোর মাকে নেব রে। টাকা
রেডি রাখিস। পকেটে ঢুকিয়ে নিল কালো তেলচিমসে একটা ডাইরি।
মুকেশ সেদিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিজের খাওয়ায় মন দিল।
: একটা গর্ভবতী মাছ দাও দিকিনি!
শিক্ষিত বাবুদের সঙ্গে কাজ করে মুকেশ। তার খাতির
আলাদা হরিদার কাছে। পাতে পেটমোটা পার্শে পড়ল। মুকেশ শব্দ করে হাসল।
: বাঃ এ তো একেবারে সেরিনা উইলিয়ামস। খেলার পাতায়
ছবিতে দেখেছি গো। হরিদা একপ্রস্থ চওড়া হাসল। খানিকটা বুঝে নিয়ে বলল-
: ভালো বলেছ। তোমার বৌদি তো কর্পোরেশনের হাসপাতালে
লেবার পেন নিয়ে। বিকেলে দেখতে যাবো।
দেখতে দেখতে হরিদার পকেটে মোবাইল বেজে উঠল। হরিদা মোবাইলে কথা বলার সময়ে চোখ বন্ধ করে দাঁত মুখ সিঁটিয়ে থাকে। সেই হাজার মাছি পড়া মুখ নিয়ে সে কন্যাসন্তানের আগমনের সুসংবাদ শুনল।
মুকেশ মগের জলে হাত ধুল।
: আজ গোপালচন্দ্র সমগ্ৰ রচনাবলীর বাইন্ডিংটা শেষ
করতেই হবে হরিদা। ভালো খবর শোনালে। আমি কিন্তু তোমার প্রথম জামাই হবো। হাহাহা।
তারপর সে একটা টুথপিক তুলে নিয়ে জীবনের নানা সুখ খুঁচিয়ে তুলতে থাকে মুখগহ্বরের।
তারপর সে একটা টুথপিক তুলে নিয়ে জীবনের নানা সুখ খুঁচিয়ে তুলতে থাকে মুখগহ্বরের।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন