শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৮

তৈমুর খান




কলসি 
           
পর্দা সরিয়ে নিলেই দেখি ছায়ার বাঁশি বাজে
দু একটা জোনাক ওড়ে, আগুনের দানা দানা
রূপকথাগুলি ওড়ে
সহিষ্ণু পাথর হয়ে বসে থাকে কাঙাল স্বপ্নেরা
তবু রথ চলে, ৠতুমতী নারীর কঙ্কণ বেজে ওঠে
ফিরে দেখি একাকী দাঁড়িয়ে আছি ঘাটে
কলসি একা ভেসে গেছে দূর
ও পাড়ার নতুন তরঙ্গের কাছে


মরীচিকা

মরুর পাহাড়ে প্রথম সঙ্গমদৃশ্য লেখা হলো
অভাবী ঘরের চাঁদ নরম স্তনের মতো
দূর থেকে ছুঁয়ে দেখা
দু একটা হরিণ শুধু ছুটে যায়
বাঁকা ও কাতর শিঙ্ তুলে
ব্যথাতুর ঝরনার খোঁজে

নিজেকে সামলে নিই
এইসব দৃশ্য বড় আবেগ মেশানো
রোদের ভাষায় লেখা অলীক নাটক
যদিও বাস্তব কিছু দৌড় সারাদিন
শোনায় পদধ্বনি


শিকারি

শাদা বক হয়ে দিন বসে থাকে জলে
জলের ভেতরে জটিল মাছের গান শোনে
দু একটা স্বরলিপি তুলে নেয় ঠোঁটে
কেননা, তারও জীবিকা আছে সময়ের স্রোতে

রক্তমাখা উল্লাস আর জৈব তাড়না
মাঝে মাঝে উন্মনা করে দ্যায় তাকে
জল তবু দেহ ঢেকে চলে যায় জলে
শিকারির ধ্যান বাড়ে সকালের প্রত্যাশায়


সমস্ত যুদ্ধের পর

অনেক মৃত্যুর পর এই বেঁচে থাকা
হেসে ওঠে মাঝরাতে
কোনও পিয়ানোর সুরে

খোলাচুল উড়ে আসে তার
বুকের ভেতর থেকে জ্যোৎস্নার ফণা
দেখি দেখি চাঁদ গলে গেছে সারা দেহে

সমস্ত যুগের রক্ত বয়ে গেছে
এই পথ প্রগলভ অতীত
তবুও নিহিত এক মর্মের জানালা

চেতনা ফিরে পায় মৎস্যমুখী মেয়ে
আকাশে গহনে জলে লেখে আলপনা
বিন্দু বিন্দু বেঁচে ওঠা ঘুম


ঈশ্বর                                                                   

লীলাকে ডাকিনি কাছে
শরীরই ঈশ্বর হয়ে আমার শরীরে শুয়ে আছে

নিজস্ব ফাঁকা আস্তাবলে আজ কোনও ঘোড়া নেই
সব ঘোড়া অশ্বিনীকুমার হয়ে গেছে

প্রাচীন পৃথিবীর রহস্য-আলোয় জল খেতে এসে দেখি
সব ঝরনায় আমারই ঈশ্বর হেসে ওঠে








কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন