উদাসীন মল্ট
(১২)
ডুরে কমনরুম, খুললাম। উড়ে গেল দূর।
আটকে থাকা কিসব জাল, মাকড়সার হতে পারে বা বাসি অন্ধকারের। দূরে ওড়া ওড়া একটা গল্প।
স্কার্ফ আটকে আছে ঝাউয়ের গায়ে, তাতে সামান্য হিম। র-চা র-চা গন্ধটাও। খুলে মনে হল,
আমি খুলতে পারি। বন্ধ করতে পারি। তাতে কী? চাউনি ঢোকে। আলোর টুকরো, স্যাঁতস্যাঁতে
হয়, ওই ঢুকেই। খোলা আর বন্ধের ভেতরেই আমার মনে হয় সে ছিল।
সে বা শ্রেণিসংগ্রাম, ছটফট করছিল ‘ইশতেহারা’
মেয়েটি। স্কার্ফটা কী ওরই, ‘রেপড অ্যান্ড ডুমড’ একটা মেয়ে জালের ভেতরে, খালের
ভেতরে, মাকড়সাদের তিলককামোদে, একটাই মেয়ে। ডুরে-পাড়, কমনরুমের দেয়ালে আটকানো
‘মেনু’ দেখতে দেখতে যে ভেবেছিল। যে গেয়েছিল। যার প্লেটে বসত সিংগাড়া, ফুটে উঠত
‘কমসিন’ ‘নাদান’ এক খিদে।
সে নেমে আসে। আমার হারিয়ে যাওয়া
টেলিগ্রাম। সিপিয়া আকাশের যদি হয়, রোজানা ‘গজল’ই সে।জগতচোরা আলো ফিনিক দিল, কুর্তিময়।
স্টেশন ছিল উপোষি চানাওয়ালার, ‘চানা জোর গরম’ বললেই এখানে সেভাবে জল নেই, সংকট আছে
বোঝা যেত।
(১৩)
উপুড় হয়ে আছে। পড়ে নেই। এটা খুন। উপুড় হয়ে আছে। ফিরে না যাওয়া ঢেউ, এই
বসন্তে। খুন হতে পারে। তেমন ইচ্ছেও ছিলনা যে ঝাউ থেকে বন আলগা করে প্রিন্ট বসাবে
শাড়িতে। শাড়ি যখন, মেয়ে। সমুদ্রের ধারে। মেয়ে যখন, রেপড হয়নি তো?
(১৪)
সে ভরে ওঠে। শব্দখুন আর সালিশিতে। ভোরমায়েশি এসব,
কার যেন দুল থেকে, ভোরের অপসৃয়মান আঁচল থেকে পড়ে যাওয়া। দাগটা মুছে যাবে। রক্ত অমর
নয়, মরে। শুকনো হয়। সমুদ্রে মাছের পেটে চলে যায়। নানা সাইজের পেট। হাঙ্গর থেকে
তিমি। সে এই বালুচরের নির্জন, আবার খবরও। পড়ে আছে, ছবি উঠছে, বডির নানা জায়গায়
আতসকাচ। নোনতা ঘাম গড়িয়ে পড়ছে , সে নিচে, তার উপরে তদন্তে আসা তরুন
ইন্সপেক্টর।দেখছে শরীর, রহস্যকে দেখছে বলে ভ্রু-এ ভাবনার ওঠাবসা।আর সে অপেক্ষা করে
মাছছোঁয়া সমুদ্রের, আসবে তো, নিয়ে যাবে তো?
(১৫)
নোনতা হওয়ায় যে গন্ধটা। সেটা, সিলেবাসের
সামান্য বাইরে। ঢেউসমগ্রে। নৌকো ভাসছে দেখে মনে হল ‘এইতো জীবন’, এরকমই একটা
মুহূর্ত গন্ধে বয়ে গেল। সূর্য ডুববে এবার। হাঁটুর নিচে নেমে যাবে, আর হাঁটুর উপরে
সন্দেহভরা রাতের প্রথম ভাগ। খুলবে একটু। না। একটু? রাত খুললে আরো রাত, যাও খুলে
দিলাম। আটটা বাজলো। সমুদ্রের আর কী, ঢেউয়ের বেণী আছড়ে দিয়ে আলোর গায়ে বলবে আরেকটু
দেবো? রাত ঘরের ভেতরে ভয় পায়। সিলেবাসের ভয়। আলোকিত প্রশ্ন আর উত্তর, ভয় হয়। ভয়টাই
ছড়িয়ে যায় বালুর ভেতরে, কাঁকড়ারা আরো নড়ে, ঢোকে, বালুর ভেতরে। ‘উদাসীন মল্ট’ সে
নাম দেয় বইটার...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন