শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৮

ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত




ক্ষমা করো  

আমার ধৃষ্টতা ক্ষমা করো, আঁকতে পারিনি উল্লাস,
গতরাতে শুনেছি এক আইস ট্রে ভর্তি মাতালের প্রলাপ।

হাওয়া আর নিশ্চিন্ত নিঃশ্বাসের আওয়াজ,
ঘরে থাকতে পারি না-
জেব্রাক্রসিং পার হয়ে দাঁড়িয়েছি মোড়ের মাথায়,
কুয়াসার ক্যানভাস ছিঁড়ে সকালের রোদ এলে
কষ্ট আসে মনে-
কারা যেন গতকাল সভা করেছিল,  
এখনও মঞ্চ বাঁধা; 
যথারীতি রয়ে গেছে বিগত ফ্ল্যাগ ও ফেস্টুন।

জানালার পর্দা নিয়ে খেলা করে হাওয়া,
রোদ্দুর নিয়ে খেলে গাছ;
এ হেন সকালে যদি কষ্ট আসে মনে
যদি দেখ, বিছানায় নেই আমি,
মনে ভেবো কেউ সুখী নয়, 
স্মরণ কর শুধু উড়ে যাওয়া শঙ্খচিলের আর্তনাদ।

মেয়েটির ফেলে শব রেখে চলে গেছে ছেলেরা,
ছেলেটির সাপ লুডো স্বপ্নের মই, উত্থান ও পতন,
নতুন করে শুরু করা উভয়ের! বারবার কতবার?

দিলখুশ গ্যালারীতে খুঁজেছি প্রাণের অক্ষর,
আঁকতে পারি নি উল্লাস, 
স্মৃতির ক্যারমবোর্ডে টরে টক্কা টরে ধাক্কা মারে স্ট্রাইকার

তুমি

এতটাই ঘৃণা যদি ধরেছ শরীরে, প্রশস্ত করো তবে ক্রুশবিদ্ধ মাথা,
চাই না নিরাপদ গমন; তোমার বিঘ্নিত চরাচর জুড়ে ঢেউ ভাঙ্গে তরল বর্ণমালা

শিখছি কাব্যিক ভাষা, যথা গাছের প্রাণ আবহমণ্ডল; এদিকে বিধ্বস্ত 
ভূমিকম্পে নড়ে ওঠে পৃথিবী, জনপদ ভাসিয়ে নেয় প্রবল সুনামি
      
মানস ভ্রমণে তাই প্রান্তিক, তাই খোয়াই, তাই অজয়ের চর,   
তথাপি এত ঘৃণা জমেছে সারাবেলা-
হাতের ওপরে আঘাত করুক ঘৃণার কীলক, তৈরি আমি


মগ্ন মধুশালা  

উন্মুক্ত প্রান্তর, দক্ষিণে সাগর, বামে বেলাভূমি-
ঝিনুকের সারি ছড়িয়ে আছে এধারে ওধারে
আছে দূর দ্বীপ থেকে ভেসে আসা বৃক্ষশাখা

এও এক অনবদ্য দ্বীপ যেখানে দাঁড়িয়ে আছি,
শেষ রাতে ভোরের গালচে পাতা,
ছলছলাত জল ভূমিতে প্রকৃতির মগ্ন মধুশালা;
সুইমস্যুট ছুঁড়ে ফেলে
চলে এস দাগ ধরে ধরে         


গ্রীষ্ম মাঠে

গ্রীষ্ম মাঠে খরা স্থিতি মোকাবিলা,
ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে হেলিকপ্টার নামা;
তখনই
রামধনু কী সুস্পষ্ট আকাশ জুড়ে,
হঠাৎ বৃষ্টির ফসল উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর
অতঃপর যাচ্ছে উড়ে           


সরলরেখার গল্প

রলরেখার গল্প বলছি,
কাজল ধুয়েছে জলে,
বইয়ের পাতার ভাঁজে
শুকনো গোলাপ ফুল
আজও ডাকে

নীল অভিমান সয়ে সয়ে,
সম্পর্কের জামদানি ছুঁড়ে ফেলে
উঠে দাঁড়াল সে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন