সহস্রাব্দের পাখি
রাত্রির যুগল ভ্রুর মাঝখানে জেগে
ওঠে সমৃদ্ধি-প্রবণ সূর্য
সহস্রাব্দের পাখিরাই ওকে ডেকে তোলে
এবং ঠেলে দেয় কর্পোরেট আকাশে।
নৈবেদ্যের থালায় যে সংশয়
রোজ
অজান্তেই জমা হয় মহন্তের,
সেই মেঘ,
সেই ছায়া, ঢেকে দেয় দুপুর, বিকেল...
তটরেখায় বিস্তৃত ভ্রুর নিচে
দুটি নদী
টলমল করে আসন্ন সন্ধ্যায়।
রঙের মেলা
চোখ দুটো ড্রয়ারে রেখে ঘুমিয়ে পড়ি
তখন বিচিত্র মানুষ আসে স্বপ্নের উঠোনে
ওদের খিস্তি, ছুঁড়ে দেওয়া থুতু, প্রস্তরখন্ড, যে শব্দের
তরঙ্গ তোলে
তা থেকে আমার মস্তিষ্ক বেশ কিছু রঙের ঢেউ আঁকে
আবার কেউ কেউ স্তবগানে মগ্ন হলেও আরও কিছু
তরল রঙ ক্যানভাসে ঢেলে দেয় অবচেতন।
টের পাই বিচিত্র রঙের মিছিল আমার চারপাশে
ওরা নিজ নিজ মুখ ও মুখোশ নিয়ে
ক্রমশ নিকটবর্তী হতে থাকে...
কিন্তু আমার চোখ নেই বলে ওদের মুখগুলো দেখতে পাচ্ছি না।
বাংলাদেশ ৫
প্রত্যহ আহার করি আমি পাহাড়পুর
পাঠ করি ইলিশের রুপালি গতর
তৃষ্ণায় চুমুক দেই সাঁওতাল রমণীর
সবুজ-গহনে
আমি লিখি যমুনা ও ধলেশ্বরী
শরতের আসমান আমার বিছানা
নিদ্রা অশ্বত্থের পাতার ভেতর।
মেঠো সড়কের দু’পাশে যে সারি
সারি কলাঝাড়
স্বপ্নের ঠিকানা ওখানে আমার
পরিধান করি আমি সোনালি ধানের
বিস্তৃত জমিন
হেঁটে যাই বৈশাখের বুক চিরে
চৈত্রধূলির মাঠে
আমার আকাশে ফোটে শিউলি, ঈদের
চাঁদ ওঠে কালো মহিষের শিঙ।
আমি মুখ দেখি তিতাসের জলে,
নাড়ার আগুনে
পোড়ে প্রতিদিন পরবাসী শীত
আমার অতীত খুঁজি কুচিলা পাতার
গায়ে শিশিরের জলে।
তুফানের রাতে নানাজান তারস্বরে
হাঁকেন আজান
আমি শুনি রক্তের ভেতরে সেই
ধ্বনি
প্রতিটি অশনি মেঘ যখন পাখনা
মেলে স্বাধীন আকাশে
সংবিধান থেকে যখন ‘মানুষ সত্য’
নিরুদ্দেশ
আমার আহত হৃৎপিণ্ড
জপমন্ত্রধ্বনি তোলে বাংলাদেশ,
বাংলাদেশ, বাংলাদেশ!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন