রবিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৮

তাহিতি ফারজানা




পৃথিবী

দীর্ঘ নিঃশ্বাসটা গিলে ফেলো
প্রজাপতির পাখা থেকে
গলে পড়ছে উড়াউড়ি,
মাখো গায়ে চমকিত উল্লাসে
এ সকল উড়বার শখ!

নিগূঢ়তম কৌশলগুলো অনভ্যাসে ফুরিয়ে যায় বলে
আমাদের থামতে নেই কোথাও

দিন মানে যেকোনো দিন নয়—
দিন মানে দু’ঠোঁটের বিচ্ছিন্নতা থেকে আসা আলো।

চোখ ফেটে বেরনো লবণ
বাষ্পের হাতে তুলে দিয়ে
খানিক জিরিয়ে নাও—
পৃথিবী


প্রতিজ্ঞা

বিস্তীর্ণ আকাশের
কোন প্রতিজ্ঞা নেই তোমার কাছে।

নিঃশ্বাসের দিকে তাক করা তৃষিত শর,
দীনতা কিংবা ঐশ্বর্য দিয়ে
তাকে ফেরানো যাবে না।

এই বেঁচে থাকা
অ-পুনরুচ্চার্য ঘ্রাণ!

বেঁচে থাকো মুখ চেয়ে
-যে মুখে ক্ষণিক এক অনন্ত আভা,
-ভ্রান্তি থেকে ছেঁকে তোলা হাওয়া স্পর্শে ভিজে,
-যেখানে ঘুম হয়ে ঝরে পড়ে সহস্রাব্দের শোক।

কিছুটা আরও বেঁচে নাও
এরপর সময় করে-
হন্তারকের অস্ত্রের আগে
নিজের মাথা তুমি নিজেই যত্নে খুলে রেখো।


যৌথসন্তরণ

অসংখ্য আলোকবর্ষ যৌথসন্তরণ চলুক,
আমার রূপান্তরের পর—
তোমার রূপান্তরের পর—
পৃথিবীর রূপান্তরের পর—

অন্য কোন গ্রহের
আন্তরিক পর্যটক
হয়ে;
দুটি মানুষের কাঁদাময় শরীরে
একটি অফুরন্ত মুখ এঁকে দিয়ে
রূপান্তরিত জীবনে টিকে যেতে চাই।


ঝরে গেছি

তির্যক বৃষ্টি এলে মনে পড়ে
একদিন ঝরে যেতে চেয়েছিলাম।

কলার কাঁদি জড়িয়ে শুয়ে ছিল যে সাপের ফণা
বেদম প্রহারে তাকে ফেলে দেয়া হল ঘাসে
এভাবে সমস্ত মৃত্যুর সাক্ষী থাকে জীবিতরা
আড়ালে এবং প্রকাশ্যে-

রক্তের ভেতর প্রবাহিত
বাতাস আর সমুদ্রের সম্মিলিত গর্জন।

ঘুমন্ত লাইটহাউজ
যেন প্রজ্বলিত তারাগাছ এক—
বেদনাকে অস্বীকার করে।

ওহে মৃত্যু,
তুমি কি সাদা?
নুয়ে পড়ো জবার কেশরের ঢঙে!
আকণ্ঠ উন্মাদ বৃষ্টি ফুরোলে মনে হয়—
ঝরে গেছি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন