উদাসীন মল্ট
(২০)
দেবানন্দ, নড়ে উঠল।
রুমালটাও। আঁচলের ঝাঁঝ বিঁধে আছে, বেপরোয়া কাঁটা। নদীর কোন খবরই নেই, বৃষ্টিও
হাওয়াবরদারি কাঁকড়ার পিঠে, আর কাঁকড়ারা ওয়াহিদার জন্য লাল, বৃষ্টি নিয়েই বালুর
ভেতরে। আজ আবার বেঁচে উঠতে চাইছি। আজই আবার ইচ্ছে করছে মরে যেতে। গাইড কিন্তু
দেবানন্দ। আমি ক্লাস বাঙ্ক করা সাইকেলিক একটি ছেলে। রাস্তায় ফেলে দিতাম
ম্যাটিনি-শো। রাস্তা ফিরিয়ে দিত পাংচার। ছায়াক্কে ছায়ায় আমি টায়ারের সেই গভীরতাকে
জানি যা প্রায় তুমি হে ওয়াহিদা।
আর সেই দুপুরে মনে
হয়, আঁচলের সঙ্গে কাঁটা আর কাঁটার সঙ্গে পায়েলের টক্করে আমি পাংচার সারাবার কথা
ভাবছি কেন?
টিউব ফুটো। আকাশও।
ক্লাস নাইনে কি হৃদয় পেকে ওঠে, কাঁটা লাগলে কিছু হয়, এই যেমন এখন হচ্ছে।
আমি ফেল করে যাবো না তো?
(২১)
সঘনপ্রকাশ, লিখে
ভাবনাকে কিছুক্ষণ। ক’রে পন্ছিকে পাখি, তোয়ালেকে সুতোশ্রী, জলপল নিয়েও কিছুটা।
যাওয়ার পরে, সেগুনের পাশের বাড়ি মেহগিনির আস্তানায় আবার শব্দ। তারই টায়ে টুয়ে রাত
আবার আবার রাত্রির কোরানো বাড়িতে। যে চাঁদ পোষাকে নিভৃত একা। যদিও তার ডাক
পিঠোপিঠি সঘন, মর্মর। পাতার, পায়ে পায়ে পাতা সন্ধিদূরস্ত্ রাইফেল। তার ট্রিগার,
আঙুলের। সজাগ ব্যবহার আনে
স্তব্ধ তার বুকে নিংড়ে ওঠা স্তব্ধতা। মানে করুণাধারার শেষ। অবধি শব্দটা কেমন না?
একটা লাইন, যা দেখা যায় না। বলেই তো সাইরেন বাজে, বিউগলও। ভোরে, বা বিকেলের পাটায়।
বসে, উড়ে যায় ভাবনাখোরাকি পাখিরা, কিছু প্রকাশিত, কিছুটা সঘন ‘ঐ’কার...
(২২)
বাঁশি, মালাগাঁথা,
সমাধি। শুয়ে আছে। ওপরে ফ্লাইওভারি চাঁদ। আসিবে, ভালবাসিবে পারিনা, লিখতে পারি না।
সমাধিতে মালাগাঁথা, হাতে বাঁশি পারিনা। চাঁদ স্ট্রোক দেয়, কেঁপে ওঠে বাঁশবাগানে
হারিয়ে যাওয়া মেয়েটা।
মেয়েটার পায়ে কিছু
ছিলনা। চটির দাগ নেই। পায়ের ছাপ আর শিহরাপন্ন বাঁশবাগান। গাছে আটকানো আঁচলের
টুকরোয়, হলুদের দাগ, সলতের বিশীর্ণ আলোয় যা একেকদিন উজ্জ্বল হত, নিরন্ন ফুলের মুখে
কি যে হয়ে যেত তারপর, সামান্য বিদ্যুৎ, সামান্য কাজললতায়
লিখে মনে হল, কাজল তো
চাকরি করছে। টাকা পাঠাচ্ছে দুখিনী মা’কে। আর বোন ভাবছে, আগেকার বোনগুলো কি বোকা
ছিল, দিদিকে খুঁজতো আর বাঁশবাগান পেরোতেই চাইতো না
কাজল ফ্লাইওভারে।
পুরো অর্থনীতি। কিছুক্ষণ আগে পড়েছিল। এখন উঠেছে। হ্যালোজেনের আলোয় গুনছে টাকার রঙ,
দাগগুলো সরিয়ে...
(২৩)
পতাকা তোলার দিনেই
তুলল। লো ভোল্টেজ রোদ। দরাজদিল আবিশ্বে দাঁড়িয়ে। এই আমার তানতেহাই দেখা, চলে
যাওয়ার পরেই রুমালে কাজ শুরু হল। লং-স্কার্ট সেদিনো ছিল আনমনার সিলি সিলি কণিকায়।
আয়, যদিও বলেনি বা একথা যে তুললে কিভাবে অতিরিক্ত হয়ে যাবে আব্রু। ব্রু। রুমালের
আড়ালে ঢাকা অস্তভাণ্ডার। রাত যত বাড়ে ততদূর আলোমিস্তিরির খেলা।লহমায় ফেলে, আরেক
লহমায় মুছে ফেলে ও। ‘ও আলোর পথযাত্রী’ গানটাও
পুরনো হয়ে গেল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন