সমালোচক
বটতলার চায়ের দোকানে
আমি সমালোচকের কথায় নিবিড় কর্ণপাত করে
অনর্গল কাপের পর কাপ চা সাবাড় করে যাচ্ছি
সমালোচক এমন শ্রোতা পেয়ে
তার পকেট উজাড় করে যখন
হাতঘড়িটি বন্ধক রাখতে গেলেন
আমি তার সমালোচনার তুখোড় সমালোচক হয়ে উঠলাম
এবং সবার হাততালি পেলাম
আমার মনে পড়ে গেল, একদা
তার এরূপ সমালোচনার যারপরনাই অন্ধ ভক্ত ছিলাম আমি
তার মতো দক্ষ সমালোচক হতে
কত যে দিনের পর দিন তার বাড়িতে বসে বিড়িতামাক সাবাড়
করেছি!
আশ্চর্য যে, তখন সমালোচনার স-ও বুঝতে শিখিনি
সময়
ঘড়ির দিকে তাকালে
কোন কাঁটাটি কখন ঠিক বুকের মধ্যে বিঁধে যায়
এই ভয়ে ঘড়িকে বর্জন করেছি
অথচ রাত্রি হলে হৃৎপিণ্ডের উচ্চারণের চেয়ে
অধিক আপন হয়ে ওঠে ঘড়ির টিকটিক
তখন ব্যবহৃত বাসনকোসন ঘড়ির নিচে পেতে দিয়ে
ডায়াল থেকে টুপ টুপ করে ঝরে-পড়া সময় সংগ্রহ করি
ভোর অবধি এত এত সময় আমার সমস্ত ঘর উপচে
জানালা দরজা দিয়ে গড়িয়ে ছড়িয়ে যায়
আর সন্ধে নামার আগেই
সময়ের সাথে পৃথিবীর সম্পর্কের চিতায়
দাউ দাউ আগুন জ্বলে ওঠে
সম্পর্কের বাঁক
পুরনো সম্পর্কগুলো বেঁকে গেছে
বাজার-ফিরতি পথে
মোহনার কাছে ব্যক্তিগত সমস্ত আস্থা রেখেছি
এখন আমার পিঠভর্তি বেড়ালের ছানা
ওদের দৌড়ঝাপ প্রতিযোগিতায় মেতে উঠতে দেখে
সম্পর্কেরা নিজেরাই বরং এক একটা বেড়াল হতে চায়
আমার সম্পর্কের বাঁকগুলো এবার খরস্রোতে
ভাসিয়ে দিয়েছি
নদীতে জাল ফেললে
এখনো শত শত চিঠিপত্র, ইমেল, টেলিফোনের ক্রিং ক্রিং ধ্বনি
ডাঙায় উঠে কিছুক্ষণ ছটফট করে মরে যায়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন