মঙ্গলবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

অরুণিমা চৌধুরী




দ্বন্দ্ব
 
সঙ্গম ফেরত হাওয়া দুয়েকটা মৃত্যুর কান ছুঁয়ে যায়।
 এরকম শীতল বোবা পাথর চোখ 
বমন উদ্রেককারী
আমিতো ডাকিনি তাকে!
  
নিষ্ফলা জেনেও বীজ গর্ভে ধরেছি

এও এক প্রকার ঝড় রমিত শরীর চেনে ঘৃণার ফারাক

কারও নি:ষ্প্রাণ চোখ পুড়ে যাক
বাগানের গাছটা তখনো ঠায় দাঁড়িয়ে থাকবে
শরীরী মৃত্যুর এই থেমে থাকা
  ক্লান্তিকর
না হয় নেমে যাও
 এই গর্ভ মৃত্যু প্রসব কারী
 
এ শহরে
  সেভাবে  বৃষ্টি পড়েনি, 
সকাল
  ততোটা বৃদ্ধ  নয় যে 
অনায়াসে ছুঁড়ে দেবে শোক

নিয়মের মতো সবকিছু
  স্বচ্ছ স্বাভাবিক  
যেন কোথাও কিছুটি ঘটেনি
 
যেন একটু পরেই ঢাকা খুলে উঠে আসবে
 
প্রণয় সম্ভাষ

ফেরানো মুখে ছায়া ফেলে
  সদ্য প্রয়াত রাত 
অথচ সেভাবে কিন্তু বৃষ্টি পড়েনি


এ গর্ভ বীজ নিলো
  
আর সহসা
  মৃত্যু নেমে এলো 
কে যায়!
 কে বলো তো! আমি তাকে ডাকিনি!
চিনি! কখনো দেখেছি!  

এই শোক, এই রমণ স্পৃহ অস্পৃশ্য দেহ
 
আহ! এখনো কেন কেউ
  বলছ না এ গর্ভ জন্মরহিত

কেউ ডাকে, নাম ধরে কেউ তাকে ডাকে
 
জন্ম আর মৃত্যুর মাঝখানে একটা সাঁকো
বীভৎস
  দুলে ওঠে...


বিচ্ছুরণ

শেষপর্যন্ত ব্যাপারটা এরকম দাঁড়াবে
ফিরে আসতে বল্লেও সাড়া দেবে না কেউ
কোথাও পাতাটি নড়ে না তুমি তো তুচ্ছ আলো!
 
এই অন্ধকার গাঢ় হবে
চোখের নিচের
  কালোর বিস্তৃতি যেমন! 

শেষপর্যন্ত পাহাড়ের কাছে হাঁটু মুড়ে
 
মহম্মদ বসবে
 
মনে করছ ব্যাস এতটুকু হলেই
কঠিন অঙ্ক মিলে যাবে!

"দাও ফিরিয়ে দাও যেখানে যাকিছু রেখেছি"...
দ্যাখো এই চোখ বিবর্ণ!
ছুঁয়ে দাও এই ঘৃণা,
 এই  রাত দীর্ঘতম বাঁকের দিকে ঘুরে যাক 

সামান্য কয়েকটা শব্দ আকাশ ছুঁয়ে
কতটা ভয়ানক হতে পারে তুমি জানো শুভঙ্কর!
আরও আরও বেশি ব্যাপ্ত হবে তো শোক!

শেষ পর্যন্ত
 বন্ধু নামে তুমি কিন্তু তাকে 
আর কখনো ডাকবে না।


জন্ম 

বহুদিন নিজের মৃতমুখের কথা ভেবে দু:খ পুষেছি
এমনকি শ্বাসবায়ু কৃচ্ছ  হল...   

খানিক দাঁড়াই! 
কী হবে মৃতের কথা ভেবে!

 এত কাজ! কে জানে মরবার ফুরসত
 মেলে কি মেলে না... 
  
ও অতীত! ও আমার ব্যক্তিগত কালো!
রে রে করে ছেয়ে ফেলছ বাহু 
তবুও তো  বহুকাল 
আষ্টেপৃষ্ঠে  জড়িয়ে থেকেছ! 

তবুও নোনাবালি, চোরাফাঁকে আলো আসে
 এত আলো! কী তীব্র চোরাস্রোত!

 রক্তের ভিতর থেকে তেতে ওঠে প্রাণ 
 আমার অভ্যস্ত আঁধার, গতজন্ম 
 ভাসিয়ে নিয়ে  যায়! 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন