মঙ্গলবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

নন্দিনী পাল




বটফল 


তুমি অবহেলা করেছিলে বলে
 
আজ আমার অবলম্বনের প্রয়োজন নেই 
প্রতিটা আঘাত আজ এক একটা বটঝুরির মত
হৃদয়ে গেঁথে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছি
ঝরে পড়া অশ্রুজলে স্নাত গোলকচাঁপা
সুবাসিত বাতাস ভেসে বেড়ায় বটবৃক্ষের ছায়ায়
কেউ লিখে রাখেনি প্রাতে বিকশিত গোলাপের কন্টকিত কাহিনী
সমস্ত বেদনা আজ ঝরে পড়া ফলের 
রক্তিমভায় উৎসারিত। 


ফেরে না


কেউ ফেরে না পুরোপুরি
কোথাও একবার হারিয়ে গেলে সবটা আসে না আর ফিরে
সময়ের প্রস্তরে, শৈল্পিক বিন্যাসে
কিছুটা রয়ে যায় স্মৃতির দেওয়াল জুড়ে
কাঠ বালি পলেস্তারার মত
বৈরাগী রঙ মাখা মধ্যাহ্ন বাতাসও ফেরে না
ঘর ভুলে যে বেরিয়েছে পথে
নৌকার ছই শুধু বাঁধা হয়
বহমান নদীর কিনারে, অস্থায়ী নোঙরে।

 
বৃষ্টির পরে    


বৃষ্টির পর কিছুটা ক্লান্তি ঝরে গেছে

গাছপালা তাজা সূর্যের আলো মাখে
বিকেল যেন প্রজাপতি রঙা ভোর
পাখিরাও আজ আনন্দ কলতানে
স্নান সেরে নেয় মুঠো ভরা শ্রাবণ জলে
তারপর চুপচাপ শাখাপ্রশাখার ঝুপসি কোণে  
কানাকানি কিছু সুখদুঃখের কথা 
স্মৃতিতে যা কিছু কষ্ট লেগেছিল
ধুয়ে নিয়ে গেছে সজল বর্ষণরেখা।


 বিচ্ছেদবেদনা


বুকের ভিতর মুচড়ে ওঠে নৈঃশব্দ

কোলাহল মুখর শহরের উপর 
থেমে আছে বিষন্ন  কালো মেঘ
চাপা রোদনের দীর্ঘশ্বাস 
দু-এক ফোঁটা ঝরে যায় 
শুকনো বুকের মাঝে, দখিনা বাতাসও 
মুছে দিতে পারে না
হতাশায় ভরা চোখের কালিমা
মিলিয়ে যায়, আবার আসে ফিরে
বিনিদ্রিত রজনী এপাশ ওপাশ করে 
শুভ্র সজ্জায় এঁকে যায় 
দুঃস্বপ্নের অস্পষ্ট কিছু রেখা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন