বর্ষা সংবাদ
সহজ মুখগুলি হাওয়ায় ভেসে উঠল
পরিজ্ঞাত নীলিমায় অবগাহন হোক
ঈশ্বরের কাছাকাছি উপলব্ধির চোখ
আত্মনিবেদনে চেয়ে থাকে। যদিও
বিরহমায়া অনালোকিত প্রয়োগে
অন্ধকারে উড়ে যায় বিশেষণ
তাকেই বিশেষ্য বলে জানে সব লোক
মৃগরাজের পদচারণায় কারও পতাকা কেঁপে ওঠে
দেখি অরণ্য সঞ্চার হয় গার্হস্থ্য জীবনে
ঘন ঘোর বিহ্বল পৃথিবীতে সব প্রেমিকেরাই
মেঘদূতের পোশাকের রং চিনে নেয়
দিগন্তের এপারে ওপারে দ্বিপ্রহর
মাটির ফাটলে জমে শোক
অবশেষে কান্নার ভেতর বর্ষা আসে
দুই কূল থই থই ভাসে আনন্দলোক।
সভ্যতাচারী
সভ্যতার রাস্তায় পেচ্ছাবের দাগ পড়ে আছে
কিছুক্ষণ আগে পায়রা উড়ে গেছে
বন্দুকের নল তাক করে আছে নিস্তব্ধতার দিকে
যেসব যুবতী-নিস্তব্ধতা ছিল আমাদের
তারা সব ধর্ষিতা হয়ে গেছে পরস্পর
আমরা লাশ বহন করে নিয়ে চলেছি
রাস্তায়, ক্রমান্বয় চিৎকারের ভিড়ে
আমাদের বিব্রত করোটি ঘুরপাক খায়
সংকেতের ভেতর কয়েকটি প্রাগৈতিহাসিক মাছি
উড়ছে
যদিও আমাদের কারও কাঁদার অবসর নেই
যদিও আমরা আরোগ্য চেয়েছি নষ্ট হৃদয়ের
সব উবুড় হয়ে যাওয়া বেদনার কলসিতে
সময়ের ঢেউ লেগে ভাটিয়ালি দুলছে
এ কোন্ সদর্থক ক্রিয়া?
কিছুই বুঝিনি তার...
ইক্ষুক্ষেতের পাশে
ইক্ষুক্ষেতের পাশে আমাদের সোনালি বৈরাগ্য
উদ্বাহু দাঁড়িয়ে আছে
কী কথা শুনতে চায় এত?
উদ্গত কথাদের বিরামহীন অস্ফুট ধ্বনি
বিমূঢ় কল্লোল তুলে ভাসাতে চায়
আমাদের আলোকিত পরবশ
মেধাবী মৈথুনের দেশে
উড়ে যায় বিদগ্ধ চতুর হাঁস
কৌতুকের অভ্যাস থেকে আমরা ফিরি
আমাদের অন্ধ পিতার কাছে
যেখানে অন্ধকারে গৃহগত পাপ
আত্মসুখের বিনুনিতে লুকায় অভিশাপ
ইক্ষুক্ষেতের পাশে সবুজ নদীতে
লখিন্দর ভেসে যায়
আমরা রতির আক্ষেপ দেখে বিকেল গড়াই
সৌভাগ্যরা
সৌভাগ্যরা কে কোথায় গেল?
সারা বিকেল তন্ন তন্ন খুঁজে
কারও দেখা পাচ্ছি না
আলোর রোশনি মাখা কিছু যুবক যুবতী
দ্রুত যানে চলে গেল
আর কোকিল ডাকল বাগানে
শব্দগৌরবে পৃথিবী ভরে গেল
কিন্তু কী আশ্চর্য! আমাদের ঘরের চৌকাঠে
পড়ে থাকা মরচে ধরা চাকু
সমস্ত বসন্তকালেও ফুল হয়ে ফুটল না
শরৎকালের নদীতে নৌকা হয়ে ভাসল না
রোদের আকাশে পায়রা হয়ে উড়ল না
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন