সোমবার, ৭ মে, ২০১৮

মৃণালিনী




আগ্রাসী অঙ্কুর সিরিজ


(১)

ভোরের আকাশের রামধনু
পাপড়ির বুক চিরে নিয়ে আসে গুটোনো সোহাগ

মিউনিসিপ্যালিটির সরু গলি পার করে-
ম্যানহোল প্রেমিক,

গন্তব্যস্থলে শীতের শেষ রাতের জমানো লজ্জা নিয়ে
বারবার
ফুটে উঠে উজ্জ্বল ছবির অক্ষরের মধ্যে অবনত নারীমূর্তি

পারস্পরিক বোঝাপড়ায় নিশানা জড়িয়ে সম্প্রতির মিলনস্হল

(২)

আশাগুলো মিনিস্যাসের  চকোলেট, জ্যাম
মোড়ক খসিয়ে উন্মুক্ত দরবারে হোঁচটে হোঁচটে

ক্যাকট্যাস ফুলের পাপড়িতে উন্মক্ত হবার আশ্বাস
ক্যামেরা শক্তিশালী

রামধনুর উজ্জল রঙে
বারবার  ক্লিক...
প্রযুক্তির শক্তিশালী ফ্লাইবার চামড়ার চোখ

(৩)

আকাশের একবার নিলর্জ্জে সভয়ে চোখ তোলে মন
বিশালতা বাঁধা দাস
ফুটপাতে পড়ে থাকা কালো ভাবগুলো
পাতার বিছানায় স্হানহীন

নাম পরিচয়হীন, গোত্রহীন

ভাবগুলো অতীত আর্যবাহুর সান্ত্বনায়
অকেজো তৈল চিত্রে নিস্পাপ হাত বাড়িতে দিতে চায়

আবার--
পুরনো নাটক জমে উঠে
ক্যাকট্যাস ক্যামেরা ম্যানহোল...
নতুনের জল পড়ে
টুপ টুপ
টাপুস টাপুস
উজ্জ্বল ছবির অক্ষরেরা হৈ চৈ করে
বিজয়িনীর আড্ডায় অভ্যস্থ
চিরকাল ম্যানহোল অপেক্ষা করে...

(৪)

সব একই সরলরেখায় সময়-কাল-ঘটনা পরম্পরা
চরিত্রের চেহারা বদল
উজার করা ভালোবাসার সুরে পুরনো  প্রতিশ্রুতি
স্বপ্নের বাগানে আকাশের চাঁদ আঁচলে

উত্তপ্ত কামনা
মনের দেয়ালে বরফ

কল্পনার প্রশান্ত সাগর জলে
কল্পনা
গলে গলে জল
আর
জমে জমে বরফ
চিড়- টা অকালেই ভরে যায়--
দেয়ালে জমা শ্যাওলার মতো নরম পরতে পরতে

(৫)

কায়া কথা বলে
আওয়াজ শোনে রাতের মরা চাঁদটাও
মাইক্রোফোনে বাঁধা বিশাল গহ্বর ছেড়ে
উঠে আসে পোষা টিয়ার বুলি

সময়ের  তিরতির বয়ে যাওয়া
বয়ে যায় অনেক কিছু
আবার
বারবার এক ফরমূলায় কাজে ব্যস্ত কায়ার ছাইয়ের মস্তিষ্ক

ভায়োলিন মিষ্টি সুরে বাজতে থাকে
ছন্ ছন্ আওয়াজের পাশাপাশি
কায়ারাও স্তব্ধ হয়
মায়া লুকিয়ে কাঁদে ভরা জ্যোৎস্না রাতে

(৬)

মন পাখি খাঁচায় দুলে দুলে ওঠে  চোদ্দ বছরের যুবতীর
টেপ জামায় স্তন ফুটে
গন্ধ ছড়িয়ে ইচ্ছেমতি নদী

ছেঁড়া জামায় ঢেকে রাখে শরীরের লোলুপ অংশগুলি
শহুরে কারখানায় কাপড় কম  তুলনায়
পথে পথে ধর্ষক আজ বেশি

(৭)

মেয়েলি শরীর বেরিয়ে পড়ে পেটের জ্বালায়
কামুকের যৌনাঙ্গ
কামের  জ্বালায়
লোভাতুর মনে কচি স্তন, কচি পাছা
গোলাপী যোনিতে সুবাসিত গোলাপের শোভা

দু'টো ভাতের বদলে মেয়েটির ল্যাংটো শরীর
কামুকের কামের খোরাক মেটে মাংসপিণ্ড শিথিল

(৮)

ল্যাংটো হয়ে পড়ে থাকে অন্ধকার গুদাম ঘরের কোণে
সামাজিক নিয়ম বা অঙ্ক শাস্ত্রে পাটিগণিত চক্রাহারে

হাত-পা চলে  না  তার শুধুই  শুয়ে  থাকা
শরীরে না কী স্বর্গ সুখ মিথ্যে তাই গতরে খাটা?

দাস বিনিময় প্রথা ইতিহাসের ভাঁজ ছেড়ে
কাজের মেয়ে মেয়ের দায়ে নিজের শরীর বেচে

(৯)

বিশ্বাস কড়া নাড়ে,
ঢুকে পড়ে সুদক্ষ অভিনয়ে  ভেতরে
আবার
বারবার
আঘাত আসে
পুনরাবৃত্তি চলতে থাকে ধমনীতে
শিরায় শিরায়
মজ্জায় মজ্জায়
সব চরিত্রগুলোই স্টেজে
নীরব দর্শকের ভূমিকায় পাঠক-শ্রোতা আমি

(১০)

সাতটি সাগররের তোলপাড়
উচ্ছ্বাস বুকে
আনমনা পাড়ের বালুচর
ছোট্ট ছোট্ট ঢেউ প্রবল স্রোতে
কল্পনা কল্পনায় রাজার হাজার রানী
বাকহীন ঘড়িতে সময়স্তম্ভ
অকারণে দেখে যাই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি

(১১)

গর্ভ নিরোধক পিল নিতে শুরু করেছি
জন্ম নেবে না অভিযোগ আর কোনো প্রতিবাদ

বাকরুদ্ধ ভাব-ভাষা
হাতের আঙুলগুলো ধর্ষিত হচ্ছে
শুকনো রক্তে লেখা ইতিহাস

জীবাশ্মও সত্যি জানাতে কথা বলে বিচিত্র ভাষায়
পড়তে পারবে কী প্রবীণ-নবীন নতুন ভাষা!
আগামীর নবীন ভবিষ্যৎ...

ইতিহাস তোমার প্রতীক্ষায় আজও
রক্তমাখা নখের কান্নারা লুকিয়ে রেখেছি গর্ভ জীবাশ্মে

(১২)

গিরগিটির অভিনয়ের ভারে কাঁধে অ্যাপেনডিক্স
শূন্য সিঁথি
লাল রক্ত সিঁদুরে ভরে যায়
যখন রক্তচোষা মশা ছুঁয়ে যায় কপাল








কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন