অবরোহণ
দানা
দানা শুকনো বরফের মত নগ্ন বিষন্নতায় ঝড়ে পড়ছে খটখটে মরা চামড়া, কোষের গভীরে মিলিয়ে যাচ্ছে নখের দাগ।
আঁচড়ের
মুঠি আলগা হলেই পাঁজরের গোপন সুড়ঙ্গ চিরে স্পষ্ট ফুটে ওঠে সময়ের জঙ্গলে বহুদিন আগে
হারিয়ে যাওয়া এক ছেঁড়াখোঁড়া হলদেটে ম্যাপ।
ম্যাপের
শরীর বেয়ে আমি হাতড়ে বেড়াই আমাদের বাড়ি।
ঘরের
দালানগুলি সরে সরে গেছিল যে বিন্দু থেকে সেই ফাটলের মুখে আঁকা রয়েছে এক অচেনা
রাস্তা...
অনেক
রাতে ওই রাস্তার আলোগুলো নিভে গেলে ম্যাপের চোখ কানা করে প্রাণপণ শক্তিতে
হ্যাঁচড়াতে হ্যাঁচড়াতে টেনে আনি ভাগাভাগি উঠোনদুটো এক অক্ষত মসৃণ আকাশের নীচে।
তারপর
কোলজোড়া শীতলপাটি বিছিয়ে জোছনার উল জড়িয়ে নিই আমাদের মিশে যাওয়া আঙুলগুলোর
কুরুশকাঁটায়।
চাঁদের
গা থেকে রাঙতার মোড়ক সরে গেলেই কেমন আগ্রাসী তাপে চিরচির করে ভাঙতে থাকে বাড়িদুটোর
মুখ। পলেস্তারা খসে পড়ে পোড়ো-আদরের শরীর থেকে,
হু
হু করে সরে যেতে থাকে আমাদের বসত ভিটে দুদিকের দুই মেরুতে
অসহায়
চেয়ে দেখি মাঝের পথটা চওড়া হয়ে গেছে আরো।
শুধু
আঙুলের ডগায় দাগ রেখে গেছে প্যাঁচানো উলের নাড়িছেঁড়া আর্তনাদ।
আরোহণ
কবিতার
বিছানায় শব্দের মৃতদেহ পড়ে আছে
সাদা
চাদরে তার সারাটা নিরুত্তাপ শরীর ঢেকে দিয়ে এবার চিতার আয়োজন
আগুন
জ্বালানোর আগে প্রস্তুত এখন ব্যথার ন্যুব্জ মন্থন
জ্বলন্ত
ছাই কুড়োনোর উপসংহার অপেক্ষা করে আছে নীল স্তব্ধতার মধ্য-বিন্যাসে...
ভূমিকার
ঘর থেকে বেরিয়ে আসে পুরোনো অসুখের চাপ চাপ গন্ধ
জট
পড়া চুলের মতোই সময়ের ফাঁকে ফাঁকে আঙুল গলিয়ে সমাধান করি গন্তব্যের কুহেলিকা
শব্দের
গায়ে জ্বালাই আত্মাহুতি।
ঘি, চন্দন, মধুর ছিটে দিয়ে রাজকীয় করে তুলি শেষকৃত্য।
তারপর
বুকের নদীতে তাদের ভাসিয়ে দিই শান্ত হাতে...
:
অন্যপারে
নবজাতক শব্দের মস্তিষ্ক থেকে ভেসে আসছে স্নাত মন্ত্রের বিশুদ্ধ অনুরণ...
এক
ভোরের উন্মোচন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন