খেয়ালি
রঙচটা ছাদ’টা জুড়ে এখন
তোমার ক্রমশ বদলে যাওয়ার ফ্রেম, আর
ছিটিয়ে রাখা বৈচিত্রহীন দুপুরের স্পটলাইট
আলসে’র বুকে বেড়ে
ওঠা বিকেলে
চিলেকোঠা’র ছদ্মনাম
নাকি ‘ভরন্ত দীঘি’,
তবু ইচ্ছে করেই ডুবসাঁতার দিতে শিখি নি
জানো, সান্ধ্য-অভ্যাসের
সেতার ছুঁয়েই
ভাঙাবাড়ি’তে জোনাকির
মেলা বসে রোজ,
গড়ে ওঠে অস্পষ্ট অতীতের কোনো অবয়ব
তোমার না ফেরা’র ছায়ামুখ তবু
ফুটিয়ে তুলি না ক্যানভাসে — বেঁধে রাখি না ক্লান্ত কোঁচড়ে,
প্রেমচিঠি লিখে শুধু ভাসিয়ে দিই,
শেষ হেমন্তে’র মেঘমহল-খামে...
এলোমেলো সিরিজ
(১)
তোমার-আমার সাজিয়ে রাখা গল্পগুলো
মুঠো ভরে ছড়িয়ে দিই ভেজা নীলসন্ধ্যে’র কার্নিশে,
দেখো রঙ ছুঁয়ে যাচ্ছে শব্দমালা, আর
উত্তরের বারান্দা জুড়ে খুনসুটির ঢেউ,
চলো মিশে যাই নদীপাড়ের কৃষ্ণচূড়ায়,
অথবা ব্যস্ত ট্রাফিকের বেরঙ ভিড়ে—
মেঠোপথের বুকে সহস্র জোনাকি জ্বললে
আঁকড়ে-থাকা দুটি হাত,
ভালোবাসার কুটিরে ঠিক ফিরবে একদিন
(২)
কিছু প্রেম গল্প হয়ে ওঠে না,
শুধু মেঘলা সন্ধ্যে’র ক্যানভাস হয়ে ওঠে অনায়াসে
বৃষ্টির তুলি’তে ক্ষণিকের রঙবদল,
খোলা বারান্দা ছুঁয়ে তার কবিতা হয়ে ওঠার প্রচেষ্টা
তবু রাত বাড়লেই সে অগোছালো,
আমার বালিশ জুড়ে তার উষ্ণতার গন্ধ,
আমিও বেনামী অভিমান একে একে খুঁজে
সযত্নে সাজিয়ে রাখি তার শিয়রে
(৩)
তোমার চৌকাঠে যে সন্ধ্যে নামে রোজ,
তার ব্যাগভর্তি জোনাকির সমুদ্র, আর
বারান্দার পিঠ ছুঁয়ে পড়ে থাকে হেমন্তে’র খাম,
শুধু খুলে দেখার সময়টুকু তুমি নিরুদ্দেশ
জানো, পরিত্যক্ত
পুকুরে যে ভাঙাবাড়ির ছায়া পড়ে,
তার উঠোনেও খেলা করে আস্ত একটা মেঘমহল
আঁজলা ভরে বৃষ্টি পাঠাতে গেলেই
তুমি বাড়ির পথ ভুলে যাও, তবু
আমার কুটিরের পিদিম নেভাও নি কোনোদিন
(৪)
যে মেয়েটি ব্যস্ত প্রেমিকের ঠোঁটে কবিতা খোঁজে,
যার বদ্ধ স্টাডি জুড়ে অবিন্যস্ত ছন্দের সিলমোহর,
তার শূন্য দুপুরের খাতায় বরং রূপকথা ছুঁইয়ে দাও
জানো, সন্ধ্যের বুকে
এলোমেলো নদীও ওম খোঁজে,
আগ্রাসী জলছাপ রেখে যায় ভাঙা নৌকার পাটাতনে
তবু ফিকে হতে থাকে সন্ধ্যাতারা -- উপেক্ষার পাখনা মেলে
কিছু কিছু দিন যেন বেবাক কেটে যায়,
রঙহীনতার গল্প লেখে বিকেল-শহর জুড়ে, তবু
তুমি-আমি কেবল ফেলেই আসি — খুনসুটি, আড়ি-ভাবের বসন্ত, আর
ইচ্ছেপালকের হিজিবিজি’র সংসার
(৫)
আমার ঘুমের উপত্যকায় বিষাক্ত সরীসৃপ,
নাম দিয়েছি, ‘তোমার বদলে যাওয়া, হঠাৎ’
মুঠো খুললেই আজকাল বরফকুচি ছড়িয়ে পড়ে,
পড়ার টেবিল হিমশীতল, বিকেলের কাচে ধোঁয়াশা
পরিত্যক্ত গুহায় সযত্নে লেগে সোহাগী আঁচড়,
আগ্রাসী নদী তবু পাল্টে ফেলে স্রোতের মুখ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন