মনোলগ
(১)
বাইরের বাতাসে এখন প্রবল উত্তাপ।
স্বপ্নের বুদবুদ ফুটছে খইয়ের মতো। নতুন জামার
গন্ধ,
মেগাপিক্সেল চুম্বন, আর আঁতাতি মৌতাত...
আহা, যেন রূপকথা
নেমেছে স্তরে স্তরে।
তবু, আঁধার ঘরের
পর্দায় জ্বলন্ত আগুন। নিভে যাওয়া প্রদীপের কালো লিকলিকে সাপেদের মায়াজট সংলাপ।
আঁকাবাঁকা ধোঁয়াটে রাত-দিন...
নি:স্তব্ধতার চাদরে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে একশো আট পদ্মের
অক্ষর ছাপ। ভাষা নয়, বাঙ্ময় হয়ে
ওঠে মূর্ত কান্না আল্পনার প্রলেপে।
মানবীর পায়ে পায়ে হেঁটে চলে প্রতিদিন এক অনন্ত দেবী-অধ্যায়।
বোধন আর বিসর্জনের মাঝে কেবল এক অলীক কল্পসুখ...
জীবনের রাত-দিন, প্রতিদিন।
(২)
তোমার গলার স্বর অবিকল নিজের কন্ঠে শুনি আজকাল...
তুমি ঠিক যেমন করে ডাকতে আমায়
ঠিক তেমনি ভঙ্গীতে তোমার আদরের নাম ধরে, নিজেই নিজেকে ডেকে যাই, অবিরাম
যেন অনন্ত এক মৃত জ্যোৎস্নার পার বেয়ে হেঁটে চলা ছায়াপথের
সন্ধানে
পথে কুড়িয়ে নিই, তোমার দু’চোখের নিশ্ছিদ্র মগ্নতা, ঠোঁটের বাঁধভাঙা চুমুর মুখর কল্লোল
এগোতে গেলেই পায়ে পায়ে জড়িয়ে ধরে তোমার বুকের উন্মত্ত
মাদকতা
কী আদিম উজান ওই স্রোতে
মত্ত ঘোড়ার মতো লাগামহীন আবেশে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে আমায়
অবিচ্ছেদ্য তরঙ্গে
বাতাসময় ঘন হয়ে আসে তোমার নাছোড়বান্দা আবদারের গন্ধ
নিশ্বাস নিতে নিতে এক গোটা আমি আদ্যোপান্ত ডুবে যাই তোমার
বুকের চেনা নদীতে
কামড়ে খাই তোমার প্রতিশ্রুত স্পর্শের নিষিদ্ধ আঙুল।
হিম-যাপন
আলনায় পরিপাটি গুছিয়ে রেখেছি সমস্ত বৃষ্টিদিন
রোদে পোড়া দগ্ধতা রুটির মতো সেঁকে গিলে নিয়েছি ছেঁড়া ছেঁড়া
সূর্য
রসহীন শুষ্ক আগুনের দলা গলার নালিতে আটকে যেতেই
চলমান ড্রেনে বমি করে দিয়েছি গত বসন্তের সংলাপ
তারপর একান্ত ঋতুজল দিয়ে ধুয়ে দেবার আগে বাসি ক্ষতের
পচাগন্ধ বুক দিয়ে আগলে রেখেছি...
নখ দিয়ে চিরে দেখেছি তার টাটকা রক্তের স্রোত
ভয়ে কুঁকড়ে গিয়ে ক্রমশ তলিয়ে গেছি কুন্ডলীপাকানো সাপের
অন্ধকার গর্তে
খুব চেনা শরীরের গন্ধ ছুঁয়ে ছুঁয়ে বুঁদ হয়ে পান করেছি ভ্রম
পেয়ালায় উপচে পড়া তোমাকে...
ঠিক যেমন শহরের চাদরে হেমন্তের নিশ্বাস ছুঁয়ে নেয় রাতজাগা
নিষিদ্ধ তারারা, তেমন করেই
নিজেই নিজের থুথু গিলে চেটে নিয়েছি তোমার শেষ চুমু’র
স্বাদ...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন