ওঁম্ শ্রীদুর্গায়াঃ মিথায় নমঃ
(১)
আশ্বিনে
মাসি
দেবিণঃ
পক্ষে
ষষ্ঠ্যামস্তিথৌ
আরব্ধ
দুর্গাপূজার মহার্ঘ্য দিন কটি
কাটিল হে পাঠক এ সদ্য!
কাজল সেন খ্যাত এ কালিমাটিতেই এতৎ বর্ণনে প্রাক্কথা—
ধর্মসম্মত— মিথের আলোচনা, এছাড়া কিছু নেই অন্যথা।
ছন্দবিষয়ে একটি কথা শুধু, আল্গা ভাঙা মন্দাক্রান্তা।
কাজল সেন খ্যাত এ কালিমাটিতেই এতৎ বর্ণনে প্রাক্কথা—
ধর্মসম্মত— মিথের আলোচনা, এছাড়া কিছু নেই অন্যথা।
ছন্দবিষয়ে একটি কথা শুধু, আল্গা ভাঙা মন্দাক্রান্তা।
কস্মৈ
দেবায়
হবিষা
বিধেম’,
হিন্দুশাস্ত্রেই
এই
বলে;
দিব্য দুর্গার মহিমা অবসান করাচ্ছে না ভাই এই ছলে।
দিব্য দুর্গার মহিমা অবসান করাচ্ছে না ভাই এই ছলে।
ধর্মরক্ষক, গোরক্ষকদের কাছে
আগেই নিয়ে নিই অনুমতি;
পুরাণমতে কথা, দেবীরও তাহাতে
মহিমার কিছু নাই ক্ষতি।
তাহাঁরা রুষিলে সে রোষপাত্রের এ
মহাভারতে কী কী যে হয়,
দিব্য অবধান করেছে তার ফলে সে
এই ব্যাপারে অসংশয়।
(২)
কেনোপনিষৎ-এ যতেক দেবতারা অসুর জয় করে’ মাতোয়ারা;
ব্রহ্মাপ্রেরিতা জ্যোতির্ময়ী এক জানিতে চাহিলেন— জয়ী কারা?
পুছিয়া পরিচয়, গুচ্ছ তৃণময়, অগ্নিরে কন জ্বালাইতে।
বিফলমনোরথ হলেন হুতাশন; পবনে আজ্ঞেন উড়াইতে।
বায়ু তো কেবলই গালই ফুলাইল, শতেক ফুঁয়ে তৃণ উড়িল না;
বজ্রধর তারো শক্তি ফুরাইল, অশনি-অস্ত্রেও নড়িল না।
বরুণের আহ্বানে সপ্তজলধি তৃণকে রাখিলই অসিক্ত,
সকলে হতবাক, এতটা জল পড়ে’ ভিজিবে ঘাসটুক্ খানিক তো!
তখনই দুর্গা বলেন ‘দেবতারা প্রতীক ছাড়া আর কিছুই না,
একমেবাদ্বিতীয় ব্রহ্ম, জানিবা; অজ্ঞ তাই মুই খিচুঁই না!’
দুর্গা এই জ্যোতি! কেমনে বলো ভাই, তিনি মহাদেবপত্নী হন?
ভেজাল অন্য আর এক কাহিনীর শিক্ষা হেতু করি অন্বেষণ।
ব্রহ্মাপ্রেরিতা জ্যোতির্ময়ী এক জানিতে চাহিলেন— জয়ী কারা?
পুছিয়া পরিচয়, গুচ্ছ তৃণময়, অগ্নিরে কন জ্বালাইতে।
বিফলমনোরথ হলেন হুতাশন; পবনে আজ্ঞেন উড়াইতে।
বায়ু তো কেবলই গালই ফুলাইল, শতেক ফুঁয়ে তৃণ উড়িল না;
বজ্রধর তারো শক্তি ফুরাইল, অশনি-অস্ত্রেও নড়িল না।
বরুণের আহ্বানে সপ্তজলধি তৃণকে রাখিলই অসিক্ত,
সকলে হতবাক, এতটা জল পড়ে’ ভিজিবে ঘাসটুক্ খানিক তো!
তখনই দুর্গা বলেন ‘দেবতারা প্রতীক ছাড়া আর কিছুই না,
একমেবাদ্বিতীয় ব্রহ্ম, জানিবা; অজ্ঞ তাই মুই খিচুঁই না!’
দুর্গা এই জ্যোতি! কেমনে বলো ভাই, তিনি মহাদেবপত্নী হন?
ভেজাল অন্য আর এক কাহিনীর শিক্ষা হেতু করি অন্বেষণ।
(৩)
মহিষাসুর যবে প্রতাপে দীপ্র, বিষ্ণু দেবায়ৈঃ সূত্র দেন,
নিজ-স্ত্রী রমণে সঞ্জাত তেজ, পত্নী থেকে যেন সবাই নেন।
বীর্যশিবিরে তাদের সংযোগে প্রবলা নারীর হবে আবির্ভাব।
‘স্বপ্নগুণ’ নয়, কিম্বা ফ্যান্টাসি; টেস্ট টিউব বেবি? বাপ রে বাপ!
(সেযুগে ছিল বুঝি ‘ইনভিট্রো’-র
ওই ধরণের কোনো প্রযুক্তি?
সাধে কি সকলই ব্যাদেই ছিল শুনে
করিনা কখনোই দ্বিরুক্তি!)
সেসব শুক্রেরই যৌথ জাইগোটে দুর্গা মাই যদি জন্ম লন,
শিবানী কেমনে হবেন তিনি ভাই, শিবের বীর্যেও জাত যখন!
সাগরমন্থনে জলধি-সম্ভূতা কমলা তিনিও কন্যা কই?
একথা পড়েছো রামায়ণেই তুমি, ভুলেই মেরেছো! তাহাই সই।
পড়েছি (শতপথ ব্রাহ্মণে হবে) তিনিই প্রজাপতি-সম্ভূতা
দক্ষ-খ্যাতিরও তনয়া নাকি তিনি, পুরাণে লিখিতং দশ কথা।
আরেক শাস্ত্রেও কমলা, বাগ্দেবী, দুর্গা মহাদেবীর মতই,
ব্রহ্মাদুদ্গতাঃ। তদেব ‘জননী’ ছিলেন কোথায়? ভগিনী বই?
সৃষ্টিকালে যে প্রধানা শক্তি ঈশ্বরেচ্ছায় পাঁচভাগে
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে বিভক্তা হন— তাক্ লাগে—
রাধা ও পদ্মা, সরস্বতী, দুর্গা, সাবিত্রীর নামে —
মনে কি রাখবো না বোধনপূর্ব মহাপঞ্চমীর যামে?
কার্তিকেয়র জননী পার্বতী সোজাসুজি! তুই একটু থাম্—
সেসব শুক্রেরই যৌথ জাইগোটে দুর্গা মাই যদি জন্ম লন,
শিবানী কেমনে হবেন তিনি ভাই, শিবের বীর্যেও জাত যখন!
সাগরমন্থনে জলধি-সম্ভূতা কমলা তিনিও কন্যা কই?
একথা পড়েছো রামায়ণেই তুমি, ভুলেই মেরেছো! তাহাই সই।
পড়েছি (শতপথ ব্রাহ্মণে হবে) তিনিই প্রজাপতি-সম্ভূতা
দক্ষ-খ্যাতিরও তনয়া নাকি তিনি, পুরাণে লিখিতং দশ কথা।
আরেক শাস্ত্রেও কমলা, বাগ্দেবী, দুর্গা মহাদেবীর মতই,
ব্রহ্মাদুদ্গতাঃ। তদেব ‘জননী’ ছিলেন কোথায়? ভগিনী বই?
সৃষ্টিকালে যে প্রধানা শক্তি ঈশ্বরেচ্ছায় পাঁচভাগে
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে বিভক্তা হন— তাক্ লাগে—
রাধা ও পদ্মা, সরস্বতী, দুর্গা, সাবিত্রীর নামে —
মনে কি রাখবো না বোধনপূর্ব মহাপঞ্চমীর যামে?
কার্তিকেয়র জননী পার্বতী সোজাসুজি! তুই একটু থাম্—
সপ্ত
ঋষির
পত্নীদের
প্রতি
অগ্নি
পুষিতেন
গোপন
কাম,
সে কথা জেনে স্বাহা, তাঁহার ডেরাতেই অঙ্গিরার স্ত্রী সাজিয়া যান।
সে কথা জেনে স্বাহা, তাঁহার ডেরাতেই অঙ্গিরার স্ত্রী সাজিয়া যান।
অগ্নি সঙ্গত হয়েও সেই কথা কখনো
একবারো টের না পান!
নিম্ফোম্যানিয়াক ধরণে কামাতুরা, অরুন্ধতী ছাড়া, বাকিগণের
ছয়টি-পত্নীর রূপধারণ করে’ মেটান স্বাহা তৃষা সঙ্গমের।
তাঁরই বীর্য সোনার কুণ্ডে ছোঁড়ায় জন্ম যে স্কন্দের।
তাঁকেই ঋষিগণ ছেলে না মানিলে, ষড় ঋষির সে ধন্দের
উৎস সরাতে দেবেরা ঝট্সে প্রথমে হত্যা করিতে যান,
ব্যর্থমনোরথ হয়ে তো স্কন্দেই দেবসেনাপতি পদে বসান।
ব্রহ্মবৈবর্ত ওই পুরাণেই পার্বতীর সাথে শিব বিহার,
চলিছে সেই কালে মাটির ধরাতে, মহাদেব-তেজ পড়িল আর,
তপ্তা-বিভীতা পৃথিবী আগুনে-বীর্য অগ্নিরে ধরিতে কন,
শুক্রাগ্নিতেই তাপিত বহ্নি শরবনে করেন নিক্ষেপণ।
শরের কাঠিতেই শিখিধ্বজ তাঁর প্রথম শ্বাসটি নেন যখন,
‘আম্বিকেয়’ কেন? সে ‘শরজন্মা’র মা নন অনামা শরের বন?
পালিকা মাতা নন বা ষড়কৃত্তিকা, তাঁরাই স্তন্য দেন যখন?
এতেই বোঝা যায় দুর্গাপরিবার, ভিত্তি তাহারও অ্যাডপ্শন,
একা সে গণ্শাই পার্বতীসূত, বাকিদের পিতা কাহারা? কন!
নিম্ফোম্যানিয়াক ধরণে কামাতুরা, অরুন্ধতী ছাড়া, বাকিগণের
ছয়টি-পত্নীর রূপধারণ করে’ মেটান স্বাহা তৃষা সঙ্গমের।
তাঁরই বীর্য সোনার কুণ্ডে ছোঁড়ায় জন্ম যে স্কন্দের।
তাঁকেই ঋষিগণ ছেলে না মানিলে, ষড় ঋষির সে ধন্দের
উৎস সরাতে দেবেরা ঝট্সে প্রথমে হত্যা করিতে যান,
ব্যর্থমনোরথ হয়ে তো স্কন্দেই দেবসেনাপতি পদে বসান।
ব্রহ্মবৈবর্ত ওই পুরাণেই পার্বতীর সাথে শিব বিহার,
চলিছে সেই কালে মাটির ধরাতে, মহাদেব-তেজ পড়িল আর,
তপ্তা-বিভীতা পৃথিবী আগুনে-বীর্য অগ্নিরে ধরিতে কন,
শুক্রাগ্নিতেই তাপিত বহ্নি শরবনে করেন নিক্ষেপণ।
শরের কাঠিতেই শিখিধ্বজ তাঁর প্রথম শ্বাসটি নেন যখন,
‘আম্বিকেয়’ কেন? সে ‘শরজন্মা’র মা নন অনামা শরের বন?
পালিকা মাতা নন বা ষড়কৃত্তিকা, তাঁরাই স্তন্য দেন যখন?
এতেই বোঝা যায় দুর্গাপরিবার, ভিত্তি তাহারও অ্যাডপ্শন,
একা সে গণ্শাই পার্বতীসূত, বাকিদের পিতা কাহারা? কন!
(৪)
এবার
যদি
আমি
নয়টি
দুর্গার
কথায়
এইবার
ফিরে
আসি!
যদিই বলি ভাই ও তিন স্তবকের পরেও একটু ঝেড়ে কাশি!
শতেক জায়গায় মোদের ভারতেই সে নবদুর্গার অনেক রূপ।
এসো না খুঁড়ি তায়, সরিয়ে দুটি হাতে জমাট বাঁধা ওই ‘মিথের’ স্তূপ,
নিজের চোখে ‘পড়ে’, নয়টি দুর্গার কত না রকমের বর্ণনা;
মেথড হোক্ ‘টেক্সট্’ পড়ার স্ট্রাটেজি, তাতেও ফল হবে মন্দ না।
অনেক গূঢ় কথা উঠবে শাস্ত্রের, কেবলই আলতো ছন্দ না।
যদিই বলি ভাই ও তিন স্তবকের পরেও একটু ঝেড়ে কাশি!
শতেক জায়গায় মোদের ভারতেই সে নবদুর্গার অনেক রূপ।
এসো না খুঁড়ি তায়, সরিয়ে দুটি হাতে জমাট বাঁধা ওই ‘মিথের’ স্তূপ,
নিজের চোখে ‘পড়ে’, নয়টি দুর্গার কত না রকমের বর্ণনা;
মেথড হোক্ ‘টেক্সট্’ পড়ার স্ট্রাটেজি, তাতেও ফল হবে মন্দ না।
অনেক গূঢ় কথা উঠবে শাস্ত্রের, কেবলই আলতো ছন্দ না।
(৫)
নেপালে
ভক্তপুরেতে
যাইয়া যে নবদুর্গা
জপিতে
চায়,
শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘন্টা কোথায় পায়?
স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী নাই!
কূষ্মান্ডা বা সিদ্ধিদাত্রী তাঁরাও নাই দেখে পায় ব্যথাই।
মহাকালী, কুমারী, বারাহী, ব্রহ্মায়ণী, মহেশ্বরী,
শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘন্টা কোথায় পায়?
স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী নাই!
কূষ্মান্ডা বা সিদ্ধিদাত্রী তাঁরাও নাই দেখে পায় ব্যথাই।
মহাকালী, কুমারী, বারাহী, ব্রহ্মায়ণী, মহেশ্বরী,
মহালক্ষ্মী বা সিফাদ্যহ, ত্রিপুরাসুন্দরী, গড় ক’রি
বৈষ্ণবী আর ইন্দ্রাণীদের
মুরতিগুলান চোখে ভ’রি,
বঙ্গহিন্দু ভাববে
নাকি
মনে,
নিজের
চোখ
দিয়ে
কি
দেখছি?
নেপালে
অষ্টমাতৃকার মাঝে বৎসলা,
গুহ্যেশ্বরী,
জয়বাগীশ্বরী থাকিবেনই, আর বাকিদের
নামে লড়ালড়ি।
অষ্টমাতা, নবদুর্গা মিলে সতেরো নয়, কেন তেরো ধরি?
তেরো যে একটি চান্দ্র মাস ভাই, দক্ষিণ এশিয়ায় যাদুকরী!
সঙ্গে রক্ষাকারিণী সিংহী (‘সিমা’), ব্যাঘ্রী (দুমা), আর গণেশ,
শ্বেতভৈরব, তিনিও সহগামী। গুজরাটে ভাবি কারে স্মরি?
আমেদাবাদের ধনী ভক্তরা নয়টি নিশায় পূজে কাদের?
কুমারিকা, ত্রিমূর্তি, রোহিণী, কল্যাণী, কালী, চণ্ডীদের!
সম্ভবী আর দুর্গা, ভদ্রা, তাঁদেরই পূজন ভিন্ ছাঁদের?
তেরো যে একটি চান্দ্র মাস ভাই, দক্ষিণ এশিয়ায় যাদুকরী!
সঙ্গে রক্ষাকারিণী সিংহী (‘সিমা’), ব্যাঘ্রী (দুমা), আর গণেশ,
শ্বেতভৈরব, তিনিও সহগামী। গুজরাটে ভাবি কারে স্মরি?
আমেদাবাদের ধনী ভক্তরা নয়টি নিশায় পূজে কাদের?
কুমারিকা, ত্রিমূর্তি, রোহিণী, কল্যাণী, কালী, চণ্ডীদের!
সম্ভবী আর দুর্গা, ভদ্রা, তাঁদেরই পূজন ভিন্ ছাঁদের?
(৬)
এবার
৯এর
ব্যাপারে
কিছু
কথা
বলে অমর্ত্য,
দার্শনিক;
বৃহত্তম ৯, চরম সংখ্যা; শূন্য তার পর, নয় কি ঠিক?
সকল সংখ্যাই ৯-এর অভিমুখে নিজের পূর্ণতারে যে পায়,
সব ঐতিহ্যেই ৯-ই ‘নিখিল শিক্ষক’-এর ন্যায় পথ দেখায়।
ন দিনই ধরাতে, সব অস্তিত্বের বিকাশ চক্রের পরিসীমা;
সৃজন ও ধ্বংসের উদ্দীপনার এক মহান ও বিরল ভঙ্গিমা।
নয়টি রাত্রির প্রতিটিতেই তাই আলাদা দুর্গার অর্চনা।
বৃহত্তম ৯, চরম সংখ্যা; শূন্য তার পর, নয় কি ঠিক?
সকল সংখ্যাই ৯-এর অভিমুখে নিজের পূর্ণতারে যে পায়,
সব ঐতিহ্যেই ৯-ই ‘নিখিল শিক্ষক’-এর ন্যায় পথ দেখায়।
ন দিনই ধরাতে, সব অস্তিত্বের বিকাশ চক্রের পরিসীমা;
সৃজন ও ধ্বংসের উদ্দীপনার এক মহান ও বিরল ভঙ্গিমা।
নয়টি রাত্রির প্রতিটিতেই তাই আলাদা দুর্গার অর্চনা।
তাহার জন্যেই সে নবপত্রিকা,
নয়টি উৎসের জল আনা।
নয়টি গ্রহের, নয়টি দুর্গার, নৃত্য ‘নেপালমণ্ডলে’,
নয়টি মাস ধরে দুর্গার আহ্বান, উপত্যকায় তাই চলে
দশম মাসে, নদিন পার করে, জগৎশিশু ডাকে ‘মা’ বলে! —
নয়টি গ্রহের, নয়টি দুর্গার, নৃত্য ‘নেপালমণ্ডলে’,
নয়টি মাস ধরে দুর্গার আহ্বান, উপত্যকায় তাই চলে
দশম মাসে, নদিন পার করে, জগৎশিশু ডাকে ‘মা’ বলে! —
নয়ের সূত্র অতীব সুকঠিন, মনন ছাড়া
কি গাছে ফলে!
(৭)
দুর্গা
প্রতীকে জড়িয়ে
রয়েছে
‘মাদার
কাল্ট’-এর যে ব্যাখ্যান,
সহস্রাব্দের প্রথমটির ঠিক মাঝামাঝি হয় তার উত্থান;
সহস্রাব্দের প্রথমটির ঠিক মাঝামাঝি হয় তার উত্থান;
পিতৃতান্ত্রিক সমাজে এনে দেয় শক্তিময়ীদের
মাতৃগান;
পুরুষ-প্রধান এ দেবমণ্ডলে কিছুটাও করে ভারসাম্য দান।
তাতেও দেখ এই ভারতভূমেই ভিন্ন কত তার ট্র্যাডিশন—
পূর্ব ভারতে পাঁচটি দিন ধরে অসুরদলনীর বীরগাথা,
সঙ্গে নবমীর রাত্র থেকেই মেনকার বিয়োগব্যথা।
দক্ষিণে দেখ নয়টি রাত্রির অর্থ নয় মাস গর্ভ দান,
পিতৃগৃহেই প্রসব বাসনায় দুর্গা এসে যান সসন্তান;
জীবনচক্রের প্রতিটি আঙ্গিকে যাঁদের প্রত্যেকে রাখেন স্থান।
তাতেও দেখ এই ভারতভূমেই ভিন্ন কত তার ট্র্যাডিশন—
পূর্ব ভারতে পাঁচটি দিন ধরে অসুরদলনীর বীরগাথা,
সঙ্গে নবমীর রাত্র থেকেই মেনকার বিয়োগব্যথা।
দক্ষিণে দেখ নয়টি রাত্রির অর্থ নয় মাস গর্ভ দান,
পিতৃগৃহেই প্রসব বাসনায় দুর্গা এসে যান সসন্তান;
জীবনচক্রের প্রতিটি আঙ্গিকে যাঁদের প্রত্যেকে রাখেন স্থান।
(৮)
পঁচিশ
শতকের
প্রতিটি
জুড়ে
আছে
প্রত্নবতী
নারী
সব
দেশে।
ভেনাস ফিগারিনে, কুমারী মেরিরে, য়ুরোপে এশিয়ায়, ভালবেসে,
দত্ত সম্মান তেমনটাই পান ভারতে কন্যাকুমারী আম্মান,
তাঁকেও ঋষি দেন পুরুষ দেবতার যতেক সামরিক শক্তি সন্ধান।
দুর্গা প্রতীকে শক্তির সাথে, উর্বরতা মুনি তাই মেশান।
তিনটি গুণেরই সমন্বয় ত্রয় নবপত্রিকার প্রতি লতাতে পান:
শ্রীফল কুচযুগ, দাধিমহমী বা বেদানায় স্তনবৃন্ত তাঁর;
কদলী-মানের পাতা চামুণ্ডার, প্রতীক শিশ্নে যোনিকার;
কৃষ্ণকাণ্ডের কাচ্বী; লক্ষ্মী বা ‘সিফাদ্যহ’র সে অলিয়্যাণ্ডার;
অশোকে প্রকাশ রজঃস্বলতার, হলুদে ইঙ্গিত উর্বরতার;
জয়ন্তী যব, তাহাতে গর্ভ, সৃষ্টি ভাব দেখ অন্বিত।
ধান্যে তাহারি পরম পরিচয়; ধান্য, সেই তো অমৃত।
ভেনাস ফিগারিনে, কুমারী মেরিরে, য়ুরোপে এশিয়ায়, ভালবেসে,
দত্ত সম্মান তেমনটাই পান ভারতে কন্যাকুমারী আম্মান,
তাঁকেও ঋষি দেন পুরুষ দেবতার যতেক সামরিক শক্তি সন্ধান।
দুর্গা প্রতীকে শক্তির সাথে, উর্বরতা মুনি তাই মেশান।
তিনটি গুণেরই সমন্বয় ত্রয় নবপত্রিকার প্রতি লতাতে পান:
শ্রীফল কুচযুগ, দাধিমহমী বা বেদানায় স্তনবৃন্ত তাঁর;
কদলী-মানের পাতা চামুণ্ডার, প্রতীক শিশ্নে যোনিকার;
কৃষ্ণকাণ্ডের কাচ্বী; লক্ষ্মী বা ‘সিফাদ্যহ’র সে অলিয়্যাণ্ডার;
অশোকে প্রকাশ রজঃস্বলতার, হলুদে ইঙ্গিত উর্বরতার;
জয়ন্তী যব, তাহাতে গর্ভ, সৃষ্টি ভাব দেখ অন্বিত।
ধান্যে তাহারি পরম পরিচয়; ধান্য, সেই তো অমৃত।
(৯)
এসব পড়িয়াও কাহারো মনে যদি থেকেও রয়ে যায় এ সংশয়,
দিব্য বানিয়েই বলছে সব কথা, নবদুর্গা তো একটা হয়!
স্কন্দপুরাণের কাশীখণ্ডে একটি শ্লোকে১ নবরাত্রিতে
চতুঃষষ্ঠী যোগিণীদিগের পূজাও হোতো গৃহে চারিভিতে;
তাঁদের নাম সাথে এ নবদুর্গার একটুখানি সাদৃশ্য নেই;
দ্বিতীয় শ্লোকেও২ শৈলপুত্রী ছাড়া আরেকটিই রাখো জেনেই—
চিত্রঘণ্টা বা বিশ্বভুজা, চন্দ্রঘণ্টা না; কর মনে!
তৃতীয়টায়৩ আছে দুর্গা-স্থানিকতা, ন কোটি শক্তির সমুল্লেখ,
জ্বালামুখী, ত্রৈলোক্যবিজয়, শেষ ও শুরুতে, তাই ‘অনেক’।
দিব্য বানিয়েই বলছে সব কথা, নবদুর্গা তো একটা হয়!
স্কন্দপুরাণের কাশীখণ্ডে একটি শ্লোকে১ নবরাত্রিতে
চতুঃষষ্ঠী যোগিণীদিগের পূজাও হোতো গৃহে চারিভিতে;
তাঁদের নাম সাথে এ নবদুর্গার একটুখানি সাদৃশ্য নেই;
দ্বিতীয় শ্লোকেও২ শৈলপুত্রী ছাড়া আরেকটিই রাখো জেনেই—
চিত্রঘণ্টা বা বিশ্বভুজা, চন্দ্রঘণ্টা না; কর মনে!
তৃতীয়টায়৩ আছে দুর্গা-স্থানিকতা, ন কোটি শক্তির সমুল্লেখ,
জ্বালামুখী, ত্রৈলোক্যবিজয়, শেষ ও শুরুতে, তাই ‘অনেক’।
[তিন শ্লোকের প্রথম (১) ৪৫. ৩৪-৫৪, ৪৫: ৪৭-৫৪; (২) ৭০.২৩-৪২, ৭০: ৩৭, ৭০.৩৮-৪০,৪২; ৩-৭১-৭২.১-৮০-৯১]
(১০)
ধান্য
ভানতেই
যেমন
শিবগীত
এসব
দুর্গারই
‘মিথ’
ভাঙা;
দুর্গা ‘আইডিয়া’ একথা মানিলেও, মা দুর্গাটা মিথ্যা না।
মেনেই নাওনা, প্লেনে বা ট্রেনে আসে শরৎকালে বাপ-সোহাগীটা,
মার হাতে রান্না বছরে একবার শ্রীমুখে লাগে তাঁর খুব মিঠা।
আসা ও যাওয়ার তারিখ জানিতে ‘নির্ঘণ্ট’ আর কার লাগে?
নবম মাসের ভিন্ন তারিখে পিতা ও মাতা, ভ্রাতা রাত জাগে।
মেসেজে, ফোনে, মেলে, থাকিবে কন্যা কয়টা দিন তা গেছে জেনে।
দুর্গা ‘আইডিয়া’ একথা মানিলেও, মা দুর্গাটা মিথ্যা না।
মেনেই নাওনা, প্লেনে বা ট্রেনে আসে শরৎকালে বাপ-সোহাগীটা,
মার হাতে রান্না বছরে একবার শ্রীমুখে লাগে তাঁর খুব মিঠা।
আসা ও যাওয়ার তারিখ জানিতে ‘নির্ঘণ্ট’ আর কার লাগে?
নবম মাসের ভিন্ন তারিখে পিতা ও মাতা, ভ্রাতা রাত জাগে।
মেসেজে, ফোনে, মেলে, থাকিবে কন্যা কয়টা দিন তা গেছে জেনে।
থাকাটা বাড়াতে করুণ মিনতি
জামাইটাকেও আনিয়ে নে!
হিমালয়ের মনে মেনকা ঢুকে গেছে, মেনকারো বুক হিমালয়িক,
এর যে পুলক, বেদনা বুঝিবে না ভণ্ড, শঠ আর কুতার্কিক।
শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, পার্বতী, তাকে যাই ডাকো,
উমারা থাকিলে ফ্ল্যাটই হিমালয়, নামে তা বদলায় কিছু নাকো।
হিমালয়ের মনে মেনকা ঢুকে গেছে, মেনকারো বুক হিমালয়িক,
এর যে পুলক, বেদনা বুঝিবে না ভণ্ড, শঠ আর কুতার্কিক।
শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, পার্বতী, তাকে যাই ডাকো,
উমারা থাকিলে ফ্ল্যাটই হিমালয়, নামে তা বদলায় কিছু নাকো।
২৬শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ পঞ্চমী-ষষ্ঠী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন