রহস্যময় বেডরুম থেকে
(১)
সারাজীবন কুড়িয়ে বেড়াই শ্রান্তিগুচ্ছ। প্রতিটি ভোরাই
জন্মদিনে বিস্ময়চিহ্নের মতো জেগে দেখি এখনও আমার স্পন্দন রয়েছে শরীরে। এখন শেষ
হয়ে যাইনি। এখনও ফুরিয়ে যায়নি আমার আত্মিক চেতনাগুলো। সন্ন্যাসের ব্রতের মতো
শুদ্ধচারে জেগে ওঠেন তিনি। আমার পরমপুরুষ। তাঁর পাদপীঠে অসীম সাজাই। অলঙ্ঘ্য
মসীচন্দনে পত্র সাজাই। যন্ত্রণার দাগগুলো তুলে ধরি। স্নেহের হাতে তিনি প্রলেপ
সাজান ক্ষতে। অনন্ত আরগ্যের গন্ধ। স্পর্শ। প্রেম। যে সমস্ত গবেষণার কাজে ধূর্ততার
সাথে একজন পুথিচর্চা থেকে আমায় দূরে চলে যেতে বলেছিল। আবিষ্কার করে ফেলি তাঁর
পুথিগত চর্চার ফাঁক। পারস্পরিক দ্বন্দ্ব সাজে। ধীরে ধীরে। সেজে ওঠে একটা শীতল
দ্বন্দ্বসমাসের অধ্যায়। পাঠচক্র বদলায়, পাঠক্রম বদলায়, অভ্যাস বলে
আসে। অমিত বিক্রমে জেগে থাকে ইউনিভার্সিটির ঘর। কার্নিশে তার ঝুল জমছে...
(২)
চেতনার রঙের ঢেকে ফেলি সেই ধূর্তের কর্মদাগ। আমার ঈশ্বর হাত
মেলে ডাকেন। সাড়া দিতে শিখি। একে একে জেগে ওঠে নব্যমার্গ। জানি, সব পথে চলা নিরাপদ নয়, তবু সব পথ অগম্যও নয়। যে পথে তাঁর পাদচিহ্ন আঁকা, কুমকুমের দাগ স্পষ্ট, সে পথে জমিয়ে রাখি যাপনের সঞ্চয়। কোনো এক প্রাগৈতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা
সাজানোর অভিপ্রায়ে এখানে আমার যাতায়াত। হয়তো ক্ষয় হবে একদিন সমস্ত লুকোচুরির, সমস্ত ব্যভিচারের। দিন গুনি। বর্ষযাপন শিখি। আমার চেতনার
পতাকা উড়িয়ে দিতে থাকেন পরমপুরুষ। প্রতিটি অবক্ষয়কে সারিয়ে তোলেন নিজ হাতে।
অলৌকিক আভিজাত্যের মতো বেড়ে ওঠা আত্মশক্তির হাতে হাত রাখি। একটি দীর্ঘ পথরেখার
মানচিত্র এঁকে দিচ্ছেন সম্মুখে। অজস্র যশস্বী একাকীত্বের চেয়ে এপথের কাঠিন্যে আমার
নবজীবন লেখা আছে। তাঁর ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। মধুরতায় ঋতঃ তাঁর প্রতিটা স্বর...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন