মুখোমুখি
একটি প্রাচীন সঙ্গীত ভালোবেসে নৃত্যের তালে তালে গভীর চুমু
খেয়েছিল একটি আঁধার
রাত্রির ঠোঁটে;
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতম পথে দাঁড়িয়ে থাকে দুটো জীবনের অসমাপ্ত
গল্প...
একদিন দুজনে মুখোমুখি হয় –
সিপ সিপ হেমলকে মসৃণ প্রেমের ফাঁদে আকণ্ঠ ডুবে মরে ভার্চুয়াল
প্রেমের শত শত চিঠি। শব্দের
চোরাবালিতে পা ডুবিয়ে থাকা অপেক্ষা; দুরন্তপনা, খুনসুটি মিহিজালে কাজল হয়ে লেপটে
আছে বিহঙ্গমনে।
বিভ্রান্তি আর কষ্টগুলো মুঠো মুঠো খই হয়ে ফোটে! অথচ কী ভীষণ
তীব্র সে ভালোবাসার সারেঙ্গীর সুর!
অতীত স্মৃতিরা দ্রাক্ষাফল হয়ে ব্যাধের ধনুকের মতো ঝুলে থাকে
গ্রীবায়।
জল
এত জল! এত জল কোথা থেকে আসে?
রঙিন ফোয়ারার মতো চরম সর্বনাশা আকর্ষণ নিয়ে!
যে দিগন্ত-ছোঁয়া ধানক্ষেত আজ উথালপাথাল নদী হয়েছে, সেখানে
হয়তো বা কারো আজীবন ধরে জমানো অল্পকিছু মূলধন ছিল। হয়তো বা ছিল কোনো স্কুলপড়ুয়া কিশোর কিশোরীর দু’চোখের স্বপ্ন! নববধূর কাচের
চুরির রিনিঝিনি শব্দের দোলা! মৃতপ্রায় বৃদ্ধের শেষ আশ্রয়!
কিন্তু জল যে ভীষণ বুভুক্ষু-ক্ষুৎপীড়িত! সে তো বোঝে না কারো
স্বপ্ন-ভালোবাসা, জীবনের আশা!
কেড়ে নেয় সব একটানে। কৃষকের শেষসম্বল জমির
ফসল, স্ত্রীর দু’চোখের ভরসা, শিশুর ভালোবাসার
মায়া।
এভাবেই নিঃস্ব অসহায় ভাবে কেটে যায় দিন। রাত-দিন এক হয়ে কালো মেঘের মতো
ভর করে চোখের পাতায়।
কোনো একদিন জল নেমে গেলে, এই নিষ্ঠুর প্রকৃতিতে নিস্তেজ হয়ে
পড়ে থাকে দুঃস্থ-পীড়িত কিছু মানুষ। প্লাবনের ভরাজল গর্বিত
পায়ে মাড়িয়ে যায় আঁকাবাঁকা পথ। হেলেদুলে হেঁটে যায় দূর
থেকে দূরে কোথাও ঝিনুক বিছানো সাগরবেলায় -
শুধু পিছনে পড়ে থাকে একরাশ হাহাকার।
আর নির্বিকার মানুষের নির্জীবচোখের সমূহ শূন্যতা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন