কার্ল প্লেস পার্ক
আমার শূন্য অন্ধকারে তুমি ফিরে এসো, অর্থাৎ তোমাকে টেনে আনি। প্রলম্বিত অন্ধকারে মেঘকণা আয়না হয়ে ওঠে। আমার জন্যে নেমে আসা নক্ষত্রআলো তোমাকে প্রতিফলিত করে
— আশ্চর্য গতিময় প্রতিফলন খুলে দেয় সমস্ত দরজা । আমি সিঁড়ি বেয়ে নেমে পড়ি কার্ল প্লেস পার্কে। সবুজ লতায় বা বাঙ্ময় হয়ে ওঠে নক্ষত্রফুল; কর্তিত ঘাসের শরীর শোনায় নবজন্ম উপাখ্যান। অলৌকিক গন্ধে কেঁপে উঠে পার্ক, বাতাস, বসবার কাঠবেঞ্চ। আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে প্রার্থিত ফলের দীপ্তি। আমার সমস্ত কোষে তখন গন্ধদীপ্তির অদৃশ্য আলোড়ন।
ত্রিকোণমিতি উত্তাপ
তোমার প্রথম প্রসূন কালস্রোতে ভেসে এলো আজ। ভিটেবৃক্ষের নিচে দাঁড়িয়ে বাতাসে শুনি কৃষ্ণচূড়া কলরব। এখানে তোমার পিতামহ অমল জলে ধুয়েছিলেন হাত। এই জল আর হিজলের দেশে রেখে গেছো কি তুমি ত্রিকোণমিতি উত্তাপ? দূর সৈকতে আজ জেগে উঠছে উন্মন ঢেউ। হিজলগন্ধহীন জলে ভিজে একবার তুমি গেয়ে ওঠো সুরমাশিহরিত সঞ্চারী!
ফ্লাওয়ার ডোম
অনির্ধারিত যাত্রাকাল আমার জন্য ফ্লাওয়ার ডোমে রংধনু রচনা করে। আমি চিরকাল ফুলের আগুনে ভস্মীভূত প্রাণী। ভস্ম আমার অস্তিত্বে মেখে রাখে রূপাগ্নি। তুমি যখন অপার ছায়ার ভেতর আমাকে ঢেকে রাখো আমার বিকাশ ও স্থায়িত্ব দীর্ঘায়িত হয়। বস্তুত তুমি অসীম ফ্লাওয়ার ডোম। তোমার আগুন আমার সত্তাকাল গ্রাস করে
— আমি মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে উঠি।
সর্ষে ফুলের কাছে
আকাশ নেমে এসেছে ধানগন্ধ আর সর্ষে ফুলের কাছে। কুয়াশা আকাশকে উন্মাদ করে তোলে, যুমনার সাথে শেষ হতে চায় না তার অন্তরঙ্গপর্ব। ট্রেনের হুইসেলকে আকাশ তরঙ্গিত হতে দেয় না;
জলের মগ্ন রসায়ন টেনে রাখে ফেরির দ্রুতি। ফ্যাব ল্যাবে নির্বাধ শব্দ-তরঙ্গায়ন কিংবা জলমগ্নতা মোচন নিয়ে যে কোনো গবেষণা মূল্যহীন হতে পারে। কেননা ধান,
নদী, ফুলের সাথে আকাশের রয়েছে অনির্বাণ সম্পর্ক; কবিরক্ত তার একমাত্র সাক্ষী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন