ট্রমা
সুর হারালে গায়েন নিরাভরণ হয়ে যায়
রিচ্যুয়াল নৃত্যের মতোই সেই হারানো ট্রমা
সহসা ঝুঁকে পড়ে
নিঃসঙ্গতার দিকে
কামপ্রেষণায় যতটা উৎকণ্ঠা লুকানো থাকে
তারা অবিরাম দল পাকায়
চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে বলে
আর এই অবারিত মধ্যদিনে
তোমার পোস্ট মর্ডানিজম
বা মার্ক্সবাদ নিয়ে উৎকণ্ঠিত বক্তৃতা
শুধু বাচালতাই মনে হয়।
যে
ভাষা ভুলে গেছি
যতবার আমি চলে
যতে চেয়েছি
সমুদ্রের কাছে
সমুদ্রের কাছে
কে যেন আমাকে
পুঁতে রাখে গাছের শিকড়ের গভীরে
এই যে মৃত্যুর
মতো নিদারুণ এই বেঁচে থাকা
প্রতিদিন জলের
জীবাশ্ম আমার স্নায়ু কুড়ে কুড়ে খায়
অথচ আমি তো
ভালোবেসেছি রোদ্দুর
আর একদিন
দীর্ঘতম ছায়ার মতো বেজে ওঠে সময়
ভুলে যাই জলের ভাষা
ভুলে যাই জলের ভাষা
এখন আর সমুদ্র
আমাকে চায় না।
টেলিগ্রাম
“রাত্রির অন্ধকার আর হলুদ চাঁদের বদলে
প্রাণ ডুবে যেতে চায় ফসলের সবুজ বন্যায়”–
প্রাণ ডুবে যেতে চায় ফসলের সবুজ বন্যায়”–
হয়তো তুমি জানো না
বিষণ্ণ ছায়া কুঁকড়ে গেলে
শকুনের দঙ্গল নীলমণি ঠুকরে খায়
বিষণ্ণ ছায়া কুঁকড়ে গেলে
শকুনের দঙ্গল নীলমণি ঠুকরে খায়
আর অসংখ্য লাল গোলাপ
অপেক্ষায় থাকে হেমন্তের
চোখের দিকে চেয়ে
ঐ দিগন্তরেখা অবলুপ্তির পর
কিছুটা আলসেমি জলরঙ ছবিতে ঢেলে দিতেই
টেলিগ্রাম পেলাম –
কিছুটা আলসেমি জলরঙ ছবিতে ঢেলে দিতেই
টেলিগ্রাম পেলাম –
বহু দূরের ফাঁকা অন্ধকারে
বুলেটের পেলব স্পর্শের উষ্ণতায়
ধানক্ষেতগুলো আবারো ভরে উঠেছে।
একটি
মৃতগাছের গল্প
মৃতগাছটিকে গল্প শোনায় সাদা ঈগলটি –
ঐ দূর পাহাড়ের কোল ঘেসে আঁচল বিছিয়েছে উদাসী রোদ্দুর
সেখানেই পাইনবনের গহীনে গাঢ় নিঃশ্বাস শোনা যায় ঘোর শ্রাবণবেলায়
প্রান্তরজুড়ে ঢেউ তোলে ভরা জ্যোৎস্নার মাদল আর
আকাশগঙ্গা শাড়িতে মেঘ জমে
তারই গায়ে ঠেস দেয়া চাঁদের চোখ এখনো অপেক্ষার প্রহর গোনে আর শিষ দেয়
আকাশগঙ্গা শাড়িতে মেঘ জমে
তারই গায়ে ঠেস দেয়া চাঁদের চোখ এখনো অপেক্ষার প্রহর গোনে আর শিষ দেয়
“মুহুর্মুহু সাকি এ বিরহরজনী
জাগে ঘুম পূরবী বাজে
শ্রাবণদহন বরিষায়” –
হু হু বর্ষায় উথাল পাথাল চারিধার
কবে কোনো কুহকী হাওয়ায় হারিয়ে গেছে চেনাসুর
ডুবে গেছে না বলা কথা ব্যথার তরী নিয়ে
এখানেই কোনো একদিন ছিল আকাশের মতো উঁচু এক অশ্বত্থ গাছ
কিছু প্রেমহীন নামানুষ এমনি এক বর্ষাদিনের শেষে
গাছটিকে উপড়ে ফেলেছে আর টুকরো করে কেটে ছাই উড়িয়েছে বনের ভিতর
কিছু প্রেমহীন নামানুষ এমনি এক বর্ষাদিনের শেষে
গাছটিকে উপড়ে ফেলেছে আর টুকরো করে কেটে ছাই উড়িয়েছে বনের ভিতর
“সখি, হামারো দুক্ষকো নাহি ওর
এ ভরা ভাদর মাহ ভাদর
শূন্য মন্দিরও মোর।”
ভাঙচুর
এই যে প্রতিমুহূর্তে
ঠিকানা বদলে বদলে যাচ্ছে
সময় কি বোঝে
এই ভাঙচুর
আঙুলের ফাঁকে লুকানো থাকে যতটা জলতরঙ্গ
রক্তের স্রোতে প্রবাহমান মৃত্তিকা
বিপ্লব বা প্রেমের পথ ধরে
এই যে চলে যাওয়া
আর মৃত্যুর ডাক
কোথা থেকে আসে কে জানে?
তবু সুতোয় সুতোয় জড়িয়ে থাকা
দুটি দেহের মাঝে
সাদা মেঘের মতো জ্যোৎস্নার নির্যাস ভেসে থাকে
সঙ্গমের সুরের লহরে।
"
উত্তরমুছুনকবে কোনো কুহকী হাওয়ায় হারিয়ে গেছে চেনাসুর
ডুবে গেছে না বলা কথা ব্যথার তরী নিয়ে" বেশ ভালো লাগলো কবিতাগুলো।