জীবনমুখী দু’লাইন
গত শ্রাবণের মেঘ এখনও আমার ডায়েরির পাতায়
আঙুল ছুঁলেই দরদর করে বৃষ্টি নামে রোজ
ভিজে যায় জলছবি, জ্বরে পোড়া দু-ঠোঁট
পাখির আদর দিয়ে বাসা বুনে দিয়েছিলাম ওই চিলেকোঠায়
পাঁজরের পাঁচিল দিয়ে ঘিরে রেখেছিলাম সেই নরম গন্ধের রেশ
গন্ধ আর নেই, কবেই উদ্বায়ী নেশায় অন্য জানালার পর্দা ছুঁয়েছে সে
শুধু বুকের ঘরে ধারালো তীরের মতো ফণা তুলে আছে
ভাঙাচোরা পাঁচিলের জংধরা ইতিহাস
এ শ্রাবণে দু’মুঠো সবুজ ভিক্ষে দিও
লাল রঙের ভেজা মৃত্যূ পেরিয়ে জীবনমুখী দু’লাইন
ডুবুরি
মায়ের আঁচলে হলুদ মোছা দাগটায় আমার শৈশবের সীমারেখা।
কখন সে আঁচল উড়ে গেছে হাওয়ায়
আমি ছুটেছি পিছু পিছু...
আদুরে চিবুক একলা কুয়াশায় ঘন হতে হতে
শক্ত হয় রোজ...
কত পাহাড় নদী ঝর্ণা সাগর পেরিয়ে দাঁড়ায় আয়নার মুখোমুখি।
প্রতিবিম্ব জুড়ে কেবল মুখোশের ভূতনাচ
টান মেরে ছিঁড়তে যেতেই কাচের বুক ঝনঝনিয়ে ওঠে।
সোহাগী শিশুকাল
কেমন ফ্যাকাসে মুখে ভেংচি কাটে...
আমি ডুব দিই আমার হারিয়ে যাওয়া বিপন্ন
‘আমি’র ভাসমান সাগরে...
ঢেউ ছুঁয়ে
কোমরের ভাঁজে ঘুনসি নাচন মাতলে
বুঝি, নারীত্বের
শিরায় লেগেছে আগুন।
শরীর জুড়ে জ্বরের ধূপছায়া নামলেই...
শিশির চেটে নেওয়ার ধারালো তাগিদ দেখেছি তোমার জিভে
মুঠো উষ্ণতায় বিন্দু জীবন যখন নদী হয়ে
করেছে সমুদ্রের খোঁজ
তখন ভয়ার্ত মরুভূমি হয়ে তোমায় পুড়িয়ে দিতে দেখেছি
নি:শেষে...
তবুও আধপোড়া চোখে কবোষ্ণ প্রেমের চাদর জড়িয়ে
গভীর মায়ায় মেপেছি ঘনত্বের প্যারামিটার
হয়েছি ছায়া, কেবল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর ছায়া...
আমার পোড়া শরীরের প্রতি তোমার ঘৃণার কুঞ্চন
দেখতে দেখতে অবাক মায়ায়
তোমার তোমাকে ফিরিয়ে দিয়েছি সবটুকু 'তুমি'
বুঝেছি
যে সমুদ্রের খোঁজ করেছিল বানভাসি মুখর নদী
তা রয়েছে আমারই এই পোড়া বুক জুড়ে
ঢেউ আর ঢেউ, ঢেউ আর ঢেউ...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন