হার্টবিট
‘প্রিম্যাচিওর বেবি’
‘কত মাসের?’
‘পাঁচ মাসে জন্মেছে’
‘নড়ছে
অল্প-অল্প’
‘না,
না। হাসপাতালের বড় ডাক্তার বলল
যে মরা জন্মেছে’
‘না
গো! ছেলে আমার জিন্দা আছে’।
শান্তি
প্লাস্টিক প্যাকেটটা খোলার চেষ্টা করছে।
দিল্লির
একটি সরকারি হাসপাতালে শান্তির ডেলিভারি হয়েছে। বাচ্চা মৃত ঘোষণা করে ডাক্তার কাগজে
জড়িয়ে প্লাস্টিকের প্যাকেট সিল করে ফেরত দিয়েছে বাচ্চা। দিল্লির বদরপুরের বিলাসপুর ক্যাম্প। এরা সকলেই বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা দিনমজুর। মূলত হিন্দিভাষী। কালিরাম বাচ্চার ছবি তোলার ইচ্ছায় শান্তির
হাত থেকে প্লাস্টিক প্যাকেটটা নিয়ে খুলে দিল। কাগজটা খুলে মোবাইল ক্যামেরায় তুলে
নিল বাচ্চার শেষযাত্রার ছবি। হঠাৎ বাচ্চাটা কেঁদে উঠল। চারদিকে হৈ চৈ পড়ে গেল। সবাই মিলে জিন্দা বাচ্চা নিয়ে আবার
হাসপাতালে ছুটল। বাচ্চাটির বিশেষ যত্নের
দরকার। ওয়ার্মার-এ রাখা হলো তাকে ।
‘যে
মা বেশ মানসিক চাপের মধ্যে থাকে, তখন তার পেটের মধ্যে বাড়ন্ত বাচ্চা পর্যাপ্ত
অক্সিজেন পায় না। সে তখন কম অক্সিজেনেই বেঁচে
থাকতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। কারণ প্লাস্টিক প্যাকেটে
অক্সিজেন প্রায় ছিলই না’ ডক্টর প্রভাত মিশ্রা জানালেন।
গাইনোকোলজিস্ট
ডক্টর পুনম আগরওয়াল বললেন, ‘৪১০ গ্রাম ওজনের বাচ্চার বাঁচার আশা খুবই কম। তবুও আমাদের বাঁচাবার চেষ্টা তো
করতে হবে!’
ডক্টর
মুরলী সেঠ বললেন, ‘প্রিম্যাচিওর বাচ্চার শ্বাস নিতে অসুবিধে হয়। ইমিউন সিস্টেম
ভীষণ দুর্বল হয়।’
ডক্টর
সাক্ষী শেরাবত বললেন, ‘বাচ্চার ব্রেন পুরো ডেভালপ হয়নি।’
শান্তি
আর কালিরাম হাহাকার করে চলেছে, ‘লেকিন ডক্টর সাহাব, হামারা বাচ্চা তো আভি ভি
জিন্দা হ্যায়। উসকো আপ লোগ ক্যায়সে পলিথিন প্যাকিট মেঁ প্যাক কিয়ে থে?’
ইতিমধ্যে বিভিন্ন খবরের কাগজের রিপোর্টার হাসপাতালে
পৌঁছে গেছে। হাসপাতালের মেডিক্যাল
সুপারিনটেন্ডেন্ট ডক্টর আর. কে. রায় বয়ান দিচ্ছেন, ‘এসব মজুর মানুষ। বোধশক্তি কম। এটাকে বেবি বলা ভুল হবে। এটা একটা কুড়ি সপ্তাহের ফিটাস। বরং বলা যায়, ফিটাসটিকে প্লাস্টিক
প্যাকেটে রেখে প্যাকেটটির মুখ চেপে বন্ধ করার জন্য ওর হার্টবিট শুরু হয়ে গেছে!’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন