জলের উঠোন
(১)
সময় থমকে আছে রক্ত ভেজা কপালের পেরেকে
এপার-ওপারের ব্যবধানে সেতু
পার্থক্য সরল দু’ধারের শ্রেণিভেদে।
কেন্দ্রবিন্দু কালো তিল - ফুলস্টপ
পূর্ব পশ্চিম বাহুর ইশারা - কালের রথ চক্রের দিকে হলেও
বৃত্তাকারের
বিন্দুতে উঠে আসেন ঈশ্বর অজান্তেই
উদাসীন মনের
সংখ্যায় হেঁটে চলে
জল আর স্হলের
নৈতিক আর অনৈতিকতার প্রশ্ন।
(২)
সমান্তরাল আর সমানুপাতিক প্রতিশব্দ হলে
আকাশ নেমে আসে
লালায়িত চুম্বন।
চিরসবুজ প্রেমের
মিথ
প্রতীক
সাংকেতিক গূঢ়গম্ভীর রহস্যের পসরা গুটিয়ে
রাধাকৃষ্ণ সাঁটা বৈষ্ণবপদাবলীর কভার পেজে।
সবকিছু বোঝার দায়ভার
সবকিছুই জানার দায়ভারে উত্তেজিত
আমার নামের জায়গায় নতুন নামের ইনস্লাইকোপিডিয়া
যদিও ঈশ্বরই শেষ কথা - সত্য ও সার্বজনীন।
(৩)
মাথা ঠুকে ঠুকে চকমকি আগুন
অল্প আলো ছড়িয়ে দাবানল-
পশুদের হৈ উল্লাস শহরের জঙ্গলে জঙ্গলে।
প্রণাম ও প্রণতি
ঝুলতে থাকা মেঝেতে
প্রদীপ শিখার অন্ধকার নেমে আসে চোখের নীচে।
‘আদম ইভ’ আউট অফ
সিলেবাসের ফাঁকে
উঁকি দিয়ে ঝুঁটি নাড়ে
খাঁচায় পোষ মানা টিয়ার শান্ত প্রেম ও মৈত্রীর শূন্যগর্ভে
অকৃত্রিম বাক্য।
(৪)
সংখ্যা বদলের পরিমাপ কাজের চক্রাকারে শেষ
অথবা নতুন করে সূচনা
উপসংহারের শেষ অধ্যায়ে যেতে যেতে কিছুক্ষণের বিরতি
উঠে আসে পাওয়া না-পাওয়ার গাণিতিক ডায়রী;
অভিযোগ অভিমান বড্ড বেমানান-
ক্যালকুলেশনের পাতার শেষে সবার মুখ সাঁটা
শব্দেরা
ধ্বনি তোলে মৌমাছির গুঞ্জনে
মধু আর বিষ একই ঠোঁটের ভাঁজে
শতাব্দী পর শতাব্দীর গর্ভে
আজও লুকিয়ে চাতকের চোখ।
(৫)
নিস্তব্ধ রাতেরা নিঃশ্চুপ
প্রশ্নোত্তরের ফেনা মিশে গিয়েছে অনেক আগেই
নীরব দর্শক আর সরব সমালোচকের ভূমিকায়
আওয়াজ পার করে
দুপুরের আলস্য ঘুম হতবাক প্রশ্নে।
কন্ফিডেনশিয়াল শব্দটির ব্যবহার অফিসিয়াল
ভাজে ভাজে জড়িয়ে থাকে গাণিতিক শূন্য
রোজনামচার জীবনে বেমানান।
সম্বল শুধুমাত্র
সম্পর্কের অহেতুক কোন্দল
আর
আঁচল ছোঁয়া উদাসীনতা।
(৬)
বিষণ্ণ দেওয়ালের ভাঁজে ভাঁজে
সবুজ শ্যাওলার উঁকিতে যন্ত্রণা সতেজ
গলতে থাকা সাবানের টুকরোয় অসময়ের গাঁথ।
মেঝেতে ধূলোমাখা মুখে জুতোর দৃষ্টিতে কৌতূহল
কচ্ছপের মাথা উঁচু করে বেরিয়ে আসে অসময়ে উত্তর।
পেলব স্পর্শ রেখে গেছে মহাকাল
অতীতের সেতু ভবিষ্যতের দরজায়
নিয়ম রক্ষার তাগিদে কোষগুলো শ্বাসবায়ু ভরে নিচ্ছে
মুদির দোকানে ঘাঁটি
জন্ম দেবে পুরাতন সুসভ্যতার ।
(৭)
দৃষ্টি বদলের খেলায়
তোমার নাম লেখালাম
যদিও বয়সের গড় হিসেবের হোঁচট
ভূমিকার নীচে।
ইচ্ছে আর অনিচ্ছাগুলো নিশ্চিন্ত ভাবে দুলে দুলে আসে
রেজিস্টারের খাতায় লাল কালি অনুপস্থিত
তৃতীয় কারণ হতে পারে তোমার অনাগ্রহ-
টেনে নিয়ে যায় প্রেমের পাঁচটি ফরমূলার সমীকরণে।
ভাব আর ভাবনাগুলোর লুকিয়ে আচার খাবার মুহূর্তে
পোস্টম্যানের হাতে সিঁদুর-হলুদ ভরা খামে
কল্পনার
ডালপালার শাঁখা নিজেকে ভাঙে।
বৈধব্যের দৃষ্টিতে
সাংসার-সমাজ। নিয়মাবলী।
(৮)
ঘোলা জলের দুধ
স্পিড পোষ্ট করা হয়েছে
স্নায়ুতন্ত্রে
লোহিত ও শ্বেত কণিকার দ্বন্দ্ব মিটিয়ে
আস্তে আস্তে পাপড়ি মেলেছে
লজ্জাবতী
বড় শিমূলগাছের পায়ে
তুলোতে টান টান সময়
রোমকূপের
আত্মবিশ্বাস চিড়ের আড়ালে
গাঁথা হয়েছিল তুলোট অলংকার।
ঢেউ ভেসে যাচ্ছিল জলের উঠোন দিয়ে
পূর্বপুরুষের পদচিহ্ন
উঠোনে সিঁথির ধার ঘেঁষে।
অপমান আড়াল করে নতুন এক্স-রশ্মির
জেগে ওঠা-
আরও
একবার
ঘুণপোষা কাঠের মুখোমুখি।
যদিও স্থাপত্য ও ভাস্কর্য আজও
গাঁথা রয়েছে পাথরের খোদাই করা
গুরু মস্তিষ্কের দেয়ালে দেয়ালে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন