যন্ত্রণা
ব্লেড হাতে তিথি অন্ধকার ছাদের এক কোণে বসে মৃত্যুর প্রহর গুনছে, আর ভাবছে সেই সব মুহূর্তগুলোর কথা। কীভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা এক সাথে কেটে যেত সেই ছোট ঘরটায়, যা কিনা তাদের স্বর্গ ছিল। জীবন ছিল। ভাবতে ভাবতেই কান্নায় ভেঙে পড়লো সে। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে কাগজ কলম হাতে ভাবছে কি লিখে যাবে। ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়!’ কি করবে? তারপর হঠাৎ লিখে ফেলল, ‘আমি এখন মৃত্যুকে ভালোবাসি তাই তার কছে চলে যাচ্ছি...!’ মোবাইলে মেসেজ গেল শুভর কাছে একটা ফুলস্টপ। ব্লেড চালিয়ে দিল হাতে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে অন্ধকার ছাদ। হঠাৎ সে চিৎকার করে উঠল যন্ত্রণায়।
মা কিছুদিন যাবৎ কিছু একটা বুঝতে পারছিল। গানটাও করছে না মন দিয়ে।
--চুপচুপ, সবাই শুনতে পাবে। এমন করলি কেন?
--মা আমি ভালোবেসেছি।
--সে তো জানি। ভালোবাসলে কাউকে এভাবে দেখাতে নেই মামনি!
--মা গো, অতীতের স্রোতে স্রোতে যে অঙ্কুরিত হচ্ছে গাছ! জানো মা শুভর তো আজ বিয়ে...
--চুপ কর মুখপুড়ি।
--সব অর্থহীন হলো মা।
--কাল ভোরের আজান শুনে সুরের সাম্পানে ভাসিয়ে দিবি নিজেকে। তোর সুরেই বেঁচে থাকবে তোর ভালোবাসা।
বলতে বলতেই হসপিটালের সামনে চলে এসেছে গাড়ি। ডাক্তারবাবু দেখেই আঁতকে উঠলেন, ‘মামনি এ কি করেছিস?’ তিথি নৈঃশব্দের হাসি হাসলো শুধু। তারপর আর কিছু জানে না। পরদিন ভেজা চোখে বলিরেখা আঁকা মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘তুমি ঠিক বলেছ। আমি নিজেকে এখন থেকে সুরের সাম্পানে ভাসিয়ে দেব। আর…
--আর কি বল,
থেমে গেলি কেন ?
--থাক না মা,
পরে কখনও…
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন