নাজনীন খলিল
ঘুম
ঘুমের মতো এমন নিশ্চিন্ত পালানোর আশ্রয়;
কোথাও নেই।
অথচ
ঘুম এবং আমার মাঝখানে
পিচ্ছিল
কন্ঠকময়
একটি দীর্ঘ পথ পড়ে থাকে।
হিপনোসের বেদির সামনে ঘুরে বেড়ায়
স্মৃতির কোলাজ আর বাঁকা ছায়াগুলো।
প্রার্থনার হাত থেমে যায়।
একটি নিটোল ঘুমের বর চেয়েছিলাম।
ক্রস
কানেকশন
যখন খুলছিল পাতালপুরির শেষ দরোজাটাও,
পালিয়ে এসেছি। সব জানতে নেই--
এই কথা জানার পরেও
কোনো
নিষিদ্ধ গল্পের ভেতরে আচমকা-অনিচ্ছুক ঢুকে পড়ি।
কেন যে...
ক্ষয়াটে মুদ্রাগুলো বারবার নেচে ওঠে হাতের তালুতে।
নেচে যাও
নেচে যাও
তামার মুদ্রা
পিতল চাকতি
এভাবেই টুং টাং বেজে ওঠো।
ঘোর স্তব্ধতার হিমাগারে তুচ্ছতর শব্দই বাজনা।
স্বপ্ন বয়ে চলা চোখই তো জলের আধার
এ কথা জানার পরেই
ছবি আঁকতে চেয়েছিল অন্ধ মেয়েটি;
বাতাসের ইজেলে সাদা ক্যানভাস।
ঝরো,
অন্য সময়ে
না থাকাই ভালো ছিল এতোটা আগুন
মলাটের গোপনে
পাতা জুড়ে থাকে বিশাল প্রান্তরমাঠ,
আগুন?
আগেই বলেছি।
বুকের ভেতরে কেউটের বাস
তবু
তোমাদের বাগানে ফোটে বসরাই গোলাপ, ব্ল্যাকপ্রিন্স।
আর এখানে
এক বুক আগুন নিয়ে ক্লিষ্ট বসে থাকি
জ্বলতে পারি না
;
গাছের বাকলে শুধু লিখে রাখি,
'দহন, দহন'।
আজ আর এখানে এসো না
মেঘমল্লারে মন নেই
দেখো ডানার ছায়া কেমন মুছলো আকাশ।
এখন জারুল ঝরার বেলা;
ঝরো তুমি
অন্য সময় ।
একবার
কড়া নাড়লেই
আছি
এক মায়াবী স্বপ্নের কোলাহলে।
একবার কড়া নাড়লেই
আবার খুলবে দরোজা
বেজে যাবে সুর;
ধ্রুপদী গানগুলো মনে পড়ে যাবে।
সেই বিকেল
সেই গুনগুন
রবীন্দ্রনাথ।
দৃশ্যের ভেতরে ঢুকে পড়বে
গলির সমস্ত হৈ চৈ সহ দুষ্টু বালক-বালিকা,
কর্কশ কাকগুলো ডেকে ডেকে উড়ে যাবে,
দানা খুঁটে
খেতে ঘাসে নামবে শালিকের পাল,
দেওয়ালে জিমন্যাস্টের মতো হাঁটবে
পাশের বাড়ির
বেড়ালটা,
আচমকা ভেসে আসা বেলির সুবাস,
হর্ণ বাজানো গাড়ি,
ব্যালকনির রকিং চেয়ার।
তুমুল আলাপচারিতা।
সব।
অবিকল।
একবার কড়া নাড়লেই
আবার ছলকে উঠবে
চাঁদনি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন