ওরফে পিছুটান
মনে
হচ্ছিল বটে সেদিন...
মন
খারাপও হয়েছিল...
যাওয়াটাও
সেদিন স্বাভাবিক ছিল না, বরং বলা ভালো, ফেরাটা একটু
অন্যরকম হবে বলেই মনে হচ্ছিল।
এখন
আপাতত কিছুটা বিনা অনুমতিতে ঢোকা কৃষ্ণনগর লোকালের লাস্ট লেডিসে। সঙ্গে সুগ্রীব দোসর হিসেবে দিন দুয়ের পারিবারিক লাগেজ। আর কাঁধে না হোক, হাত
দুটোতে চুঁইয়ে পড়া দায়িত্ব তখন চোখে পড়ার মতোন। তখনও কে জানত, রণে ভঙ্গ হবে!
কালোবাজারির হাতযশ ততক্ষণে সাবার করে দিয়েছে আমার পাঁচ হাজারির সেলফোন। আমার যত্নশীল মনোভাব তখন বিরোধীদের পছন্দের ট্যাগলাইনে পরিণত হয়েছে।
হারিয়ে গেল...
মুহূর্তের সব সংজ্ঞাকে ব্যর্থ করে দিয়ে হারিয়ে
গেল আমার আভ্যন্তরীণ সংসার। আমি আপাতত একা হলাম,
আর আমার মোবাইল
অনাথ।
এতক্ষণে বোধহয় শিখিয়েও গেছে বাজারী আদব-কায়দা।
মনে মনে স্কেচ কষছে, চাঁদনির অলি-গলি।
ও সত্যিই সত্যিই বিকিয়ে যাবে এত তাড়াতাড়ি?
মালিকহীনতায় ভুগবে না একটুও?
সত্যিই সত্যিই বোধহয় ও এবারে যন্ত্র হবে...
তাই হোক... তবে ফেরত দিক্। ফেরত দিক, পিক্সেলে বোনা স্মৃতি, যার দায়...
দায় না হোক যার বহনভারে সামিল ফাইভ-বাই-ফাইভ ডিসপ্লে।
মিউজিক-প্লেয়ারের সাফেল-অল্-এর সঙ্গে মিলে মিশে যাওয়া ইমোশান,
নোটপ্যাডের
সিক্রেট কনফেশান, প্রথম লেখার স্ক্রিনশট্। ফাইল এক্সপ্লোরারের
ভেতর বন্ধুটির আদর।
ভ্যাগিস...
ভ্যাগিস,
ফোন
নম্বরটা... তোমার ম্যাসেন্জার...
হ্যাঁ,
তো...
দিক
ফেরত... ফিরিয়ে দিক...
মাঝরাতের
ফোন কল ছিল না বটে, তবে জেগে থাকা তো ছিল!
আচ্ছা
কী নামে সম্বোধন করা উচিত আমার?
ফেলব
ক্লীব লিঙ্গের মধ্যে? বলব যন্তর?
মুঠোফোন...!
ডাকটা
একটু অন্যরকম, কিন্তু ও তো অনেকেই বলে। তবে!
এর
আগে তো কোনোদিন আমার পাঁচ হাজারির ডাকনাম নিয়ে ভাবিনি!
বরং
ভাবলে ভালো হতো। সেই নামে জোরে জোরে ডাকতাম। নিজের মতো করে খোঁজার একটা কারণ থাকত এই যা...
কত
কত দোষ আমার ঢাকা ছিল ওর জাঙ্ক ফাইলের ভেতর।
র্যাম ক্লিয়ারের সঙ্গে সঙ্গে ফোনের সাথে, মনের কিছুটা বোঝও হাল্কা হতো বুঝি...
সব চলত..
ভারচুয়ালি প্রেম করা, আদর... আর...
আরে, বস্... ইচ্ছেমতো গোঁফ-দাড়ি জুড়ে মিছি-মিছি সাজানো যেত বেশ।
কাকে আবার!
ইয়ে মানে...
তো...মা-কে।
মন-ফোন সমান্তরাল হতে হতেও হয় নি।
কত অপমান
কত আঘাত
কত অভিশাপ একে একে জমা করেছে ওর ইন্টারনাল মেমারিতে।
অ্যাডজাস্ট তো ও করেছে,
আমার মা-বাবার সঙ্গে;শুধু আমার সঙ্গে ঘর করবে বলে।
আর আমি, প্রয়োজনমতো চার্জ দিয়ে হেডফোনটার মতো কোনোমতে গুটিয়ে রেখেছি নিজেকে। দিন চলে গেছে ডিজিটাল ক্যালেন্ডারের মারফত। ভ্যালিডিটিও শেষ হয়েছে আমার সেলফোনের।
তবু তো চলে যায়নি... হারিয়ে গেছে...
কখনও কখনও হারিয়ে যাওয়াটাও বোধহয় বাধত্যামূলক!
না বলে কয়ে, কোনো কোনো সময় দায়িত্ব নিয়ে হারিয়ে যেতে হয়।
হারিয়ে যেতে হয়, অ্যাটলিস্ট, কাছের মানুষগুলোর কাছে নিজেকে খোঁজার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য
হারিয়ে যেতে হয়।
যে ভাবে হারিয়ে
গেছে পোশাকি নামের ‘আমার’ রেডমি
2; ওরফে পিছুটান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন