মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

অনিন্দিতা গুপ্ত রায়

বিপন্ন শব্দের কাছে যেভাবে আসি


(এক)

কাচঘরের ভেতরে এই হাওয়া পৌঁছবে না
এই নিঃশ্বাসের দ্রুততা, এই লবণজল
থেমে যাওয়া ঘড়ির ভেতর দুটো হাত দুপাশে ছড়িয়ে
শুধু পাতা ঝরে ঝরে নিঃস্ব হয়ে উঠবে পাঁজর
ছায়াদের অস্থিরতা অনেকটা বেড়ে গেলে একদিন 
চরম অবিশ্বাসের গা থেকে ঝরে যাবে লালনীল রেশম  
ক্রমশঃ অভ্যস্ত হয়ে উঠবে আবহাওয়া
আমাকেও সহ্য করে নেবে আলোর বিপরীতে     

(দুই)

এই দমবন্ধ কুয়াশার ভেতর
আমি গড়িয়ে পড়েছি, পিন্ডের মতো  
দেখতে পাচ্ছ না, জানছ না
অনুভূমিক পৃথিবীর দিকে একটা একটা করে
নুড়ি ছুঁড়ে ছুঁড়ে জানান দিচ্ছি বেঁচে থাকা
চেনা উপসংহারের দিকে ধাক্কা খেয়ে
ফিরে আসছে সেই সব বাতিল শব্দ
যাকে ঘিরে আশেপাশে শুধু সাদা স্তব্ধতা
মুঠোর ভেতরে ধুকপুক চেপে বরফপুতুল
হিমজলে বিন্দু বিন্দু ডুবে মরে যাচ্ছি
এত যে বাষ্পবিলাসিতা সে কি চোখের জলের, বল? 

(তিন)

নিজেকে এত বেশি অপরিহার্য ভেবে নেওয়া
পাখির স্বভাবে - অনুমতিহীন
তারপর ঝড় এসে ফিরে গেলে
কাঠকুড়নির ভিড়ে আদিখ্যেতায়
ভাঙা ডানা থেকে রঙ গলে পড়তে থাকে
আচমকা মাটির কাছে নেমে এলে
প্রকৃত দূরত্বে সরে যায় আকাশ  


নভেম্বর 

আসন্ন শীতের মধ্যে বসন্তগন্ধ নিয়ে
জানালার ফ্রেম, সাদা ক্যানভাস নীলচে ডুবুরি ও অবিন্যস্ত কুয়াশা
এসবই খুব অবিশ্বাস্য ভাবতে ভাবতে দেখতে পাই 
ইচ্ছাকৃত বিঁধিয়ে দেওয়া আলপিনের ডগায়
কীরকম রক্তদানা করবীর আকার নিচ্ছে 
কুয়াশার আখ্যানের মধ্যে
নাক অব্দি ডুবে থাকায় ওডিকলনের গন্ধ
আর ওই কোমল মাথাটি কোলে নিয়ে
ঘ্রাণে নিই দুধের ফেনার মতো
গাঢ় ঠোঁট, ক্লান্ত ও উদাসীন মায়ের শরীরে
নদীগুলো পরিপাটি - যা শুধুই দুই চোখ ভেদ করে
নিস্ক্রমণের পথ খুঁজতে থাকে, জলোচ্ছ্বাসের গল্পে    




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন