নীলমাটির ইতিকথা
যে পথে আসে রূপ ও মৃত্যু
নিঝুম অচলায়তন,
কখনো শুয়ে যেও সেই
রুপোলী শূন্যতায় — ভিখারিনী,
আর ভাবতে থেকো, শুধুই ভাবতে থেকোঃ
এভাবে কে বুনে গেল কালো আকাশ
আর নিখর্ব রূপকথা — তারই নিচে
বিলীয়মান!
ওপারে অন্তহীন আঁধার,
তবু সেখান থেকেই হাতছানি কারোর
শ্বাস রাখে ধূসর স্বপ্নে
আলগা শিশির ভিজে ঘাসের নাভি ছুঁয়ে
মিলিয়ে যায় দ্যোতনার
শেষ রেখাটুকু—
অথচ
মানুষ যখন আর মানুষ থাকে না,
সাতপুরুষের ভিটেমাটি
দুয়ার খোলা রেখে দাওয়া ফেলে রেখে
ছুটে যায় সেই
অশান্ত দমকা’র পিছন পিছন,
তখনো যেন গুনগুনিয়ে ওঠে
সভ্যতার গান—
আমাদের অস্তিত্ব, প্রেম আর বসন্ত দিনেরা
বইতে থাকে গাছ-গাছালির ভেতর
মরাক্ষেতের ওপর দিয়ে
বহুদূর—
অনন্তের গভীরে,
কোনো গোস্পদে জমা শান্ত জলে
আমরা কান পাতিনি কতকাল!
শুনতে চাইনি নৈঃশব্দ্যের ভাষায়
কি লেখা ছিল এই ক্ষণিকের ঋতুরাগে,
আর বেদনায় বাঙ্ময় যত
কবরশায়িত গল্পমালা
শীতল জঠরে এসে মিলে যায় যে পথে
রূপ ও মৃত্যু ...
বিস্রস্ত
আরো একটি পাড় ভাঙার গল্প
কখনো আলোর সেতু হয়ে ওঠে
বুকের ভেতর রাতের আসা-যাওয়া
দাঁড়িয়ে থাকি আমরা জন্মান্তর,
আর চাঁদ ঢলে পড়ার আগে
সমস্ত অভিমানের জপমালা
ভেসে যায় বন্ধ্যা জলের যাপনে
শ্বাস নিতে শেখা-ও কৌশল
আস্তে আস্তে খোলে বাঁধনের ভার
উদাসী একতারা; সে-ও পথ ভুলবে
কোনো আলগা আঘাতের আতিশয্যে
এসবের পরও হেঁটে চলো তুমি
সেই সেতুর ওপর একাকিনী
আর, একটি পাড় ভাঙার গল্প—
দ্যুতি ও নিবিড়তার
কালো জলরাশির অতলে
আলো তলিয়ে যাওয়ার রূপকথা,
আমার গভীরে সিঁদুরপিয়াসী কেউ
উত্তাল রাত, মুমূর্ষু লন্ঠনের শিখা ভুলে
যেভাবে স্বপ্নেরা বেছে নেয়
প্রকৃতি আর সূর্যের সঙ্গমরাগ,
আলতো অসংলগ্ন সদ্য বিবাহিতা।
সময়ের বলিরেখা জুড়ে চুরমার
কত স্মৃতির অনুরণন,
শূন্যতার স্তরে স্তরে রক্তপাতহীন—
শুধু মহাকালই লিখে রাখে
সে মিলন,
সে মিলন
দ্যুতি ও নিবিড়তার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন