কালিমাটি
অনলাইন / ৪০
সম্পাদকীয়তে একই বিষয়ে বারবার আলোচনা করতে ভালো লাগে না। পাঠক-পাঠিকাদেরও
একই আলোচনা বারবার পড়তে বিরক্তি লাগা স্বাভাবিক। কিন্তু মুস্কিল হচ্ছে, বারবার একই সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেও
সমস্যাটা যখন সেই সমস্যার গভীরেই থেকে যায়, তখন বাধ্য হয়েই আবার একই আলোচনায় ফিরে
আসতে হয়। বলা বাহুল্য, এর আগে সম্পাদকীয় কলমে ঝুরোগল্প সম্পর্কে বেশ কয়েকবার
আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু ‘কালিমাটি অনলাইনে’ প্রচলিত ধারার গল্প প্রকাশ করা হয়
না, বরং বাংলা কথাসাহিত্যে গল্পের এক নতুন
‘ফরম্যাট’ বা আঙ্গিকের সূচনা করে ‘ঝুরোগল্প’ প্রতিটি সংখ্যায় প্রকাশ করা হয়, তাই খুব
স্বাভাবিক কারণেই প্রিয় পাঠক-পাঠিকাদের অনেক প্রশ্ন থাকতেই পারে। বস্তুতপক্ষে
ঝুরোগল্প সম্পর্কে যেমন পাঠক-পাঠিকাদের কোনো পূর্বধারণা ছিল না, অনুরূপে
লেখক-লেখিকাদেরও কোনো পূর্বঅভিজ্ঞতা ছিল না। বিশেষত অনেকেই ব্যাপারটা গুলিয়ে ফেলেন
অণুগল্পের সঙ্গে। আমরা আগেও বারবার উল্লেখ করেছি, আবার উল্লেখ করছি, অণুগল্প ও
ঝুরোগল্প কখনই একই ‘ফরম্যাটে’র গল্প নয়। প্রত্যেক ‘ফরম্যাটে’র গল্পের আলাদা আলাদা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আছে, আলাদা আলাদা গল্পভাবনা
আছে। আর তাই অণুগল্প লিখে তাকে ঝুরোগল্প নামে প্রকাশ করাও অত্যন্ত আপত্তিজনক।
আমাদের স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, অনেক গল্পকার বিষয়টা ঠিকমতো অনুধাবন করতে না
পেরে ‘কালিমাটি অনলাইনে’র জন্য যে ঝুরোগল্পগুলি পাঠান, অনেক ক্ষেত্রেই সেগুলি ঝুরোগল্পের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হয় না,
বরং তা অণুগল্পের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বহন করে। সম্প্রতি ‘কালিমাটি’র নিয়মিত
ঝুরোগল্পকার সোনালি বেগম আমাকে জানালেন যে, লেখক ও পাঠকমহলে ঝুরোগল্প সম্পর্কে
যেহেতু কোনো স্পষ্ট ধারণা নেই, তাই আমাদের আরও উদ্যোগী হয়ে ঝুরোগল্পের প্রচার করা
খুবই জরুরি। প্রসঙ্গত জানাই যে, ইন্টারনেটে ইতিমধ্যে ‘কালিমাটির ঝুরোগল্প’
শিরোনামে ৪৭টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। বিগত ২০১৫ কলকাতা বইমেলায় ‘সৃষ্টিসুখ
প্রকাশনা’ থেকে প্রথম ঝুরোগল্পের সংকলন ‘ঝুরোগল্প ১’ প্রকাশিত হয়েছিল। এই সংকলনে
২৪ জন ঝুরোগল্পকারের মোট ২৪০টি ঝুরোগল্প আছে। আবার আগামী ২০১৭ কলকাতা বইমেলায় ‘সৃষ্টিসুখ
প্রকাশনা’ থেকে প্রকাশিত হবে ২২ জন ঝুরোগল্পকারের মোট ২২০টি ঝুরোগল্পের সংকলন
‘ঝুরোগল্প ২’। আগ্রহী পাঠক-পাঠিকা এবং লেখক-লেখিকাদের এই দুটি ঝুরোগল্পের সংকলন ও
‘কালিমাটি অনলাইন’এর ‘কালিমাটির ঝুরোগল্প’ বিভাগটি পড়ার জন্য বিনীত অনুরোধ
জানাচ্ছি। এই প্রসঙ্গে আরও জানাই, ‘ঝুরোগল্প ১’এর ভূমিকা লিখেছিলেন প্রয়াত
শ্রদ্ধেয় সমীর রায়চৌধুরী এবং প্রকাশিতব্য ‘ঝুরোগল্প ২’এর ভূমিকা লিখেছেন ড.
অমর্ত্য মুখোপাধ্যায়। ঝুরোগল্পের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অনুধাবন করার জন্য এই দুটি
ভূমিকা অবশ্যই পড়া প্রয়োজন। আর পরিশেষে খুব অল্প কথায় ঝুরোগল্পের চারিত্রিক
বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানাই, ঝুরোগল্প সব সময় ‘ওপেন এন্ডেড’ হয়, কখনই ‘ক্লোজড
এন্ডেড’ নয়। গল্প যে কোনো বাক্য থেকে হঠাৎই শুরু হয় এবং হঠাৎই শেষও হয়ে যায়।
গল্পের কোনো নির্দিষ্ট পরিণতি থাকে না। গল্পের মধ্যে নিটোল কোনো গল্প বলারও আদৌ
প্রয়োজন নেই। আর গল্পটি ৫০০ থেকে ৬০০ শব্দ সংখ্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা বাঞ্ছনীয়।
গত অক্টোবর মাসে ‘কালিমাটি অনলাইন’ প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি কিছু অসুবিধের
কারণে। নভেম্বর সংখ্যা যথাসময়ে প্রকাশ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। তবে এই সংখ্যায়
একটি অসম্পূর্ণতা থেকে গেল। নিয়মিত বিভাগ ‘চারানা আটানা’র লেখক অমিতাভ প্রামাণিক
সম্প্রতি চোখের অসুস্থতার জন্য লেখালেখি থেকে দূরে থাকতে বাধ্য হয়েছেন
ডাক্তারবাবুর নির্দেশে। অমিতাভ জানিয়েছেন, নভেম্বর সংখ্যাতে লেখা তাঁর পক্ষে আদৌ
সম্ভব নয়, এমনকি ডিসেম্বর সংখ্যাতেও হয়তো সম্ভব হবে না। আমরা কামনা করছি, অমিতাভ
তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন এবং জানুয়ারী সংখ্যায় আবার লেখা পাঠিয়ে তাঁর অনুরাগী পাঠক-পাঠিকাদের
প্রসন্ন করুন।
ইতিমধ্যে শীত এসে রীতিমতো জাঁকিয়ে বসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আপনারা সবাই
সাবধানে থাকবেন। কেননা শীতের অত্যন্ত
প্রিয় সঙ্গীসাথী সর্দি-কাশি-হাঁচি অহেতুক আপনার পেছনে লাগতেই পারে। সেদিন হোয়াটস অ্যাপে একটা মজার
চুটকি পড়ে মুগ্ধ হলাম এবং আমার বন্ধুবান্ধবদের কাছে বিতরণ করলাম। চুটকিতে লেখা ছিল
– ‘জীবনে চোখের জল মুছে দেওয়ার জন্য অনেককে পাবেন, কিন্তু নাকের জল মুছে দেওয়ার
জন্য কাউকে পাবেন না। তাই বলছি... শীত আসছে, সাবধানে থাকুন, ঠান্ডা লাগাবেন না!’
সবাই ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। খুশিতে থাকুন।
আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের ই-মেল ঠিকানা :
দূরভাষ যোগাযোগ :
0657-2757506 /
09835544675
অথবা সরাসরি ডাকযোগে যোগাযোগ :
Kajal Sen, Flat 301, Phase 2, Parvati
Condominium, 50 Pramathanagar Main Road, Pramathanagar, Jamshedpur 831002,
Jharkhand, India
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন