প্রতিবেশী
সাহিত্য
মারিয়া এলেনা ওয়ালশ-এর কবিতা
(অনুবাদ : জয়া চৌধুরী)
লেখক
পরিচিতিঃ
কবি, ঔপন্যাসিক, সঙ্গীত পরিচালক, নাট্যকার,
সাহিত্যিক, গীতিকার, কম্পোজার মারিয়া এলেনা ওয়ালশ ১৯৩০ সালে
আর্জেন্টিনায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে ‘লা প্লাতা’ শহরে সাহিত্য আন্দোলন গড়ে
তোলেন তিনি। আর্জেন্টিনায় তাঁর সবচেয়ে বেশি খ্যাতি শিশু সাহিত্যিক হিসাবে। পুরষ্কার পান নি সেভাবে কখনোই,
অথচ তুমুল জনপ্রিয়তা
ছিল
তাঁর। জীবদ্দশাতেই তাঁর তাঁর জীবন নিয়ে চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়। তিনবার বিবাহ করেন তিনি। ৫০টি বইয়ের লেখক ও ২০টি ডিস্কের রচয়িতা
মারিয়া ২০১১ সালে দীর্ঘ অসুস্থতার পরে ৮০ বছর বয়সে মারা যান।
Ahora (এখন)
এখন এক দেবদূতের মতো তুমি আবির্ভূত হও
এবং মুখে কিছু না বলেই আমাকে
চারপাশে বেষ্টন করে ফেল।
দেবদূত আমি যে কতবার আগলেছি সেসব
কিছুই না জেনে, শান্তভাবে।
দৃষ্টিপাতেই বইতে থাকা সুখী
বাতাসের মতো
আমি যা চেয়ে দেখি তার সবটাতে রয়ে
যাও তুমি।
তোমার অনুপস্থিতিকে আমার মতো মনে হয় এবং তোমাকে
আমার মতোই পুনর্বার বেঁচে উঠেছ বলে বোধ হয়।
কারণ আমি যখন মরে যাচ্ছিলাম তুমি
দেখতে পেয়েছিলে
জীবন্ত দয়াদাক্ষিণ্য আমাকে ফিরিয়ে
দিতে;
কেননা আমার বোবা রাত হয়ে উঠেছিল
দিনের আলো
তোমার আলোময় কন্ঠস্বরের কৃপায়,
এই অনন্তে যখন তুমি আমাকে ভেদ করে
প্রবেশ করো
আমার যেন কখনও অস্তিত্ব ছিল না,
আমি তোমারই প্রেমিকা মাত্র।
Como la Cigarra (ঘুরঘুরে পোকার মতো)
ওরা আমায় কতবার মেরে ফেলেছে
আর আমি কতবারই না মরেছি
যাইহোক মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে
আমি তবু এখানেই।
আমার দুর্ভাগ্যকে আমি ধন্যবাদ দিই
আর চেটোতে ছুরি বিঁধিয়ে দিই আমূল
কারণ ওটা আমায় বড্ড বিশ্রী ভাবে মেরেছিল
এবং তারপর গাইতে থাকি গান।
ওরা আমায় কতবার মুছে ফেলেছে
কতবারই না হারিয়ে গেছি
আমার নিজের কফিনের ভেতর পড়ে ছিলাম
কান্নামাখা একাকী।
রুমালের এক কোণে গিঁট দিয়ে রেখেছিলাম একটা
কিন্তু পরে ভুলে গিয়েছি যে
ওটাই শেষ বারের মতো নয় আর
তারপর আবার গাইতে শুরু করেছি গান।
ওরা তোমায় কতবার না মেরে ফেলেছে
কতবারই না তুমি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসবে
কত রাত কেটে যাবে
প্রতীক্ষা করে থাকতে থাকতে।
জাহাজডুবির সময় এবং
অন্ধকারের ক্ষণটিতেও
তোমাকে উদ্ধার করে আনবে কেউ
যাতে তুমি গেয়ে যেতে পারো গান।
ঘুরঘুরে পোকার মতো এক বছর মাটির নিচে চাপা
পড়ে
থাকার পরেও সূর্যের দিকে চেয়ে গেয়ে যাওয়া তো
যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে আসা ও
বেঁচে ওঠার মতোনই ব্যাপার।
El Viaje (যাত্রা)
আমি শুধু তোমার নরমসরম বাড়িটা চাই,
তোমার উষ্ণতায় বেঁচে থাকা।
তুমি এক নিরাপদ সমুদ্র ও ঢেউরাশি
কেননা একটি বিশেষ যাত্রার নাম তো
ভালোবাসা।
তোমার আত্মাকে চিনে ওঠা,
যা ইন্দ্রজালের মতো স্বাদে অভিযান করে।
ওখানেই গভীরতা পাব এবং উত্তুঙ্গতাও
কেননা একটি বিশেষ যাত্রার নাম তো
ভালোবাসা।
বন্দরের মতো অজানা চুম্বনেরা
দৃষ্টির আকাশের তলায় অপেক্ষা করতে
থাকে।
বাকী সব কিছুই তো যন্ত্রণা।
কোনো সমুদ্র যখন আমায় কিছু বলল না
তারপরে
আমি আজ মৃত শহরগুলো থেকে ফিরছি,
কেননা একটি বিশেষ যাত্রার নাম তো
ভালোবাসা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন