আনন্দবনে
আনন্দ
বনে রিনিঝিনি বেজে যায় বিবশ কঙ্কন,
আশ্লেষে
তালহীন,
তুমি
কি এখনও কবিতা লেখো,
লেখো
কি জন্মকথা? যাবতীয় প্রাক্তন বিক্ষোভ?
মুঠোর
ভেতরে অজস্র মহিমা ভরে নেন যে মহাপুরুষ,
যাবতীয়
জাগতিক সংজ্ঞা তিনি বদলে দেন,
তার
কাছে নীল নদী উঠে আসে বারবার
পোষা
বেড়ালের মতো ছোট হয় উত্তরায়ণের দিন।
তোমাকে
বলেছি বারবার ফিরে এসো
ছলাত
জলের কাছে-
পরপর
নদীতীরে ফিরে আসে খেয়া,
মাঝি
এক শতাব্দী প্রাচীন মুখময় বলিরেখা নিয়ে
ভাসিয়ে
দেয় সদিচ্ছার আবছায়া হাসি।
আনন্দবনে
তুমি ফিরে এসো,
আমাকেও
খুঁজে নিও নিঃশব্দ আড়ালে।
উদ্ধত প্রেম
কোথায় এমন প্রেম বেড়া
ভেঙ্গে নিয়ে যাবে বিষয় আশয়?
নদীর উজানে কল্লোল তুলে
পেরোবে সীমানা?
আছে কি এমন? দেখেছ কেউ?
নগরীর পরিভাষা লিখেছে
বিগত দিন,
কঙ্কণ বেজেছে যে নারীর
পায়ে সেও বড় হিসেবী,
হাতে মেখেছে ভোরের শিশির,
অন্তরঙ্গ আঙুলে মোম মেখে
যুবক গুনে গেছে রাতের তারা,
চাঁদের আলোয় লিখেছে আবছা
পাণ্ডুলিপি সমস্ত ইতিহাস।
প্রেম কি আছে কোথাও, উন্মাদ বেহিসাবি প্রেম?
চেয়েছিলে যে সব অনাদায়ী
সুখ তার থেকে সরিয়েছি মুখ,
জমে থাকা স্মৃতির
আদ্যন্ত সুষমা নয় চেয়েছ বড় বেশি,
কোনোদিন মুঠোতে আনিনি
তোমার জন্য একান্ত রোদ্দুর,
তাই কি বারে বারে হারানো
জলের ধারে ছুটে এসে
খুঁজে দেখি মুখের ছায়া
জমে থাকা মেঘের মিনারে?
কে জানে কোন উচ্চতাতে
গেলে প্রেম আসে-
যে প্রেম দেরাজের গোপনে
থাকে না,
থাকে না অন্তরালে, হাঁটে চলে স্বাভাবিক,
সব বাধা তুচ্ছ করে
নিঃশব্দে খুঁজে নেয় গতি।
এ কোন গোধূলি
সেই ঘাসে ছায়াময় মৃত্যু লুকোয়
যেখানে দিনান্তে ফুটে ওঠে রহস্য,
যতই আগুন পুড়িয়ে ফেলে গাছের স্নেহ,
ততই ডুবে যায় সময় নিবিড় অন্ধকারে,
এক জাদুকর অহোরহ কোথায় গোপনে
মায়াজাল ছড়ায় চোখ দেখে না তাকে।
সে কি গোধূলির ঠগের মতো রচনা করছে,
আকাশের গায়ে সাদা অভ্রের চূর্ণ?
একি সত্যি না বিভ্রম?
এক একটি মানুষও কখন হয়ে যায় অচিন জাদুকর,
গভীর প্রশান্তিতে আকাশ মহাদেশের পাতায় পাতায়
লিখে চলে জীবনের সফরনামা,
ঘর গেরস্থালির নিবিড় কাহিনী।
ঐ যে দেখ পাশের বাগান ফুলের বন্দীশালা,
স্বপ্নের ঘর তার মাটির দেওয়াল ধুয়ে
যাচ্ছে জলে,
বর্ষণ বিধ্বস্ত শীত আর শীতের সকাল-
ক্লারিনেটে বেজে ওঠে অশ্রুত ধুন,
আধ খোলা দরজা হাওয়ার দাপটে বন্ধ হলে-
থেমে যায় সমস্ত শব্দের ঢেউ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন