বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৬

রেটিনা রশ্মি

অসম্পূর্ণ বর্ণমালা...

গারো পাহাড়ের কোলে 
প্রতিটা পাথরবুকে তোমার আমার মিলন 
বাসন্তী রঙে লেখা থাক। 
 
ওই শোন! ম্লান আলোয়
নির্জন বনানীর অস্ফুট  ডাক
নীল... আ...  চল...

ছায়ালীন পথে প্রবাসী  হলে
অস্তায়মান সূর্য বিদায়ী হাতে
অশ্রুপাঠ করে;  
অসম্পূর্ণ বর্ণমালায়।
দাহ শেষে নদীজ  অস্থি হয়ে -
ফিরে  আসবোই!
স্বরবর্ণ  ব্যঞ্জনবর্ণ...   
অথবা জাতিস্মরের বর্ণমালায়

আলো আঁধারের বুকে গোপন সংলাপ...

একটা ভাঙা শ্লেট হাতে বসে আছি। পেয়ারা ফুলের গন্ধ। আবছা বর্ণ নিয়ে আকাশে গল্প লিখছি। আজও বলা হয় নি কাউকে কতবার ভাঙা মই থেকে পড়তে গিয়েও প'ড়া হয়নি। শুধু হলুদ পাখিটা ভয়ে ছটফট করত... খাঁচার ভেতর থেকে। শুধু দেখতে পেত ছাদের কার্নিশ... হাত ধরে তুলে আনত পাখিটার কাছে। মাঠের পর মাঠ পার করেছে অঘ্রাণের দুপুর... বড়ডাঙ্গার মেলায় দোকানীদের ভাতের গন্ধ নিতে নিতে হৈ হৈ করে একদল দুরন্ত ছেলে মেয়ের কেনাকটা। চালতা, আমের আচার চুষতে চুষতে  হাত ভরা একডজন কাচের চুরিবারবার গুণে নেওয়া... এক দুই তিন চার পাঁচ ছয় সাত আট নয় দশ এগারো! আর... একটা! কোথায়! ভাঙা টুকরোটা খুঁজছে চোখ, মন। হঠাৎ শীত করছে।মন খারাপি শীত। পাতাঝরা গাছ গল্প বলছে উদাস বাউলের পথে পথে নিশি নামার। কাচের চুরির ভাঙা টুকরো ফিকে করে দিচ্ছে  ঝনঝন আওয়াজ। প্রতিদিন একটা একটা টুকরোর সন্ধান। আজ বকুল কুড়াচ্ছি শান্তিনিকেতনে... হয়তো হলুদ পাখির ডানা ঝাপটের টানে। স্মৃতির দেওয়ালে সেই চিরচেনা বকুলমালার ছাপ... ঝাপসা দেখতে পাই... নেশা নেশা লাগে। হলুদ পাখিটা অভিমানে উধাও। ভাঙা চুরিগুলো রিনিঝিনি বোলে গভীর অন্তরের গহীনে... হারানো কথা চেনা সুর শুনতে পাচ্ছি। বিবশ শরীরে ঝড়ের দংশন; খুব খুব ক্লান্ত হয়ে উঠছি... ও...হ! আমি ক্লান্তিবিহীন অনন্ত নিদ্রার অপেক্ষায়। কত চিঠি লেখা হলো না! কেননা আমি তো প্রতিটা ঘুমে এক একটা চিঠি লিখি। পাকা পেয়ারার গন্ধ এসে লাগছে নাকে। তবু একটাও বর্ণ নেই.... পেয়ারা ফুলের। আজও তাকিয়ে আমি ভাঙা শ্লেটের দিকে। তাই তো রোদপোড়া গল্পগুলি জেনেছে, যেভাবে আগুন জানে আজ আমি কত উপেক্ষার... আলো আঁধারের বুকে একটা গোপন সংলাপ হয়ে থেকে যাক।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন