কাকাতুয়ার
দোকান ৯
আমাদের মতোই
কাকাতুয়ারাও শ্রেণী বিভক্ত।
ল্যাদ আর
উদ্যোগী,
বোকা আর
ধান্দাবাজ,
বড়লোক আর
গরিব টাইপ।
ওদের ভেতরেও
আছে
লাল গড়ানো
লোভী চামার
আর নিরাসক্ত
শিব।
নিশ্চিন্ত
জীবনের লোভে দাঁড়ে বসে
শেখানো
শ্লোগান দিয়ে থাকে তারা,
ঘাড় ফুলিয়ে
দেখায় কপট বিপ্লব
যাতে আমরা হৈ
হৈ করে হাততালি
দিয়ে উঠি,
ছুঁড়ে দি এটা ওটা
খাবারের দু’এক টুকরো।
তাই
কাকাতুয়ার জন্য মন খারাপ করতে নেই
ওরা একদিন
বাড়ন্ত হবে
অধুনালুপ্ত
প্রাণীর ফসিলের মতোই
ছবিতে থাকবে
কেবল।
এই ছিল
আমাদের কাকাতুয়া ভেবে তখন
একই রাস্তাতে
দোকান দেবে এক
কাকাতো কাকা
আর তার প্রেমিকা তুয়া,
যাকে পাণ্ডে
বলবে মছলি বাঈ।
নাম হবে তার
কাকা আর তুয়ার দোকান
বা কাকা
তুয়ার দোকান।
এবং ধীরে ধীরে আরও গজাবে সব স্মৃতি
আসল
কাকাতুয়ার দোকান
কাকাতুয়ার
আসল দোকান
আসল কাকা আর
তুয়ার দোকান
কাকা আর
তুয়ার আসল দোকান।
সত্যি মিথ্যা
এভাবে গুলিয়ে যাচ্ছে দেখে
আমরা হু হু
করে কাঁদব কি আরেকবার?
নাকি ছিপ
ফেলে বসে থাকব অন্য কোনো
কাকতাড়ুয়ার
জন্য।
কাকাতুয়ার
দোকান ১০
ভর দুপুরে
একদিন এক সাধুবাবা
আমাকে বলেছিল
চুপি চুপি
এ জীবনে যে
আত্মারা ঘিরে আছে আমায়
তারাই নাকি
বহু জন্ম ধরে
রয়েছে আমার
সাথে সাথে।
থাকবেও আরও
কিছু জন্ম এরকম।
মানে
ভবিষ্যতে হু হু একা মনে করার
কোনও কারণ
নেই স্যার।
কিন্তু ভাবো
এই একই দাদা যদি বাবা হয়ে জন্মায়
আগামী জন্মে,
খুব মনকষ্ট পাব।
এতটাও মানা
যাচ্ছে না কিন্তু।
তো এসব শুনে
আবেগ তাড়িত আমি
এক বন্ধুকে বলে
বসি
এই যে তুই
ভাবছিস আমার সাথে সম্পর্ক করলে
তোর অসুবিধে
কি কি
এসব ভাবিস না
আর
আমাদের
ডেস্টিনি বহু জন্মের আঠা দিয়ে জোড়া
সামান্য
মনুষ্য তুমি কি করে খুলিবে সেই জোড়?
এসব শোনার পর
সে আর আমার বাড়ির
চৌকাঠ
মাড়ায়নি কোনোদিন।
পাগলামো কতটা
মেনে নেওয়া যায়
সে বুঝতে
পারছিল না নির্ঘাত।
কাকাতুয়ার
দোকান ১১
যেভাবে কাকা
আর তুয়ার দোকানের
মছলি বাঈ
নিরামিষ আর মছলির ব্যবধান
ঘুচিয়ে একটা
প্রেম সাগর রচনা করেছে
যার নাম
তুয়া,
ঠিক সেভাবেই
এক বৈষ্ণব বাবাজী
কলকাতায়
আমাকে বোঝান
মাছ আসলে
জলের গাছ।
তাই বৈষ্ণব
মতে মাছ খেতে বাধা নেই কোনও।
গুরুদেব তো
স্বয়ং মহেশ্বর
তাকে
অবিশ্বাস করে কে!
আমি পাপী
তাপি মানুষ
বেড়ালের মতো
মুখ মেরে বেড়াই।
আমার পেট তো
মহাশ্মশান হে
মৃত মাংসের
ভিড় লেগে আছে।
আমি তো মাথা
নেড়ে নেড়ে মাছ
খেতে খেতে
হাসবই।
ভক্ত
বিধবারাও এ ওর গা টেপাটেপি করে
হাসছিল
আনন্দে মনে মনে,
সামনা সামনি হাসার
সাহস করবে না তারা।
কাকাতুয়ার
দোকান ১২
‘মদ খেয়ে
নেশা করতে এসেছ শালা’-
চাপ বোঝো, মদ
আবার কি কারণে খায়,
কেন খায়
অতরকম মুদ্রায়?
আমি কি জানি
ছাই।
আমি স্রেফ কাচের
গ্লাসে খেতে ভালোবাসি।
গ্লাস একটু
দামি আর ভারী হলে আর কি চাই
ব্যাপারটা
বেশ খোলতাই হয়।
দু’একটা বরফের পাথর যদি পড়ে তার উপর
আহা আহা।
অবশ্য অভাবে
তো স্টিলের গ্লাস বা মাটির খুরিতেও
খেয়েছি
বহুবার এমন কি প্লাস্টিক জলের বোতলেও।
আমি আর কপাল
পাত্র পাব কই?
মুদ্রার কঠিন
সব প্যাঁচে গ্লাস ধরতে গেলে ফসকে যায়।
সে জন্য তো
সাধু হওয়া হলো না আমার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন