জীবন জুড়ে
যা চাই তা নাই।
জীবন জুড়ে এই সুর-বেসুর বিরক্ত করে তোলে সব কিছু।
যা বলতে চাই তা সব পারি না।
যা শুনতে চাই তাও পাই না।
যা যা করি তা গ্রহণযোগ্য হয় না অনেকেরই কাছে।
যদিও যা যা ভাবি তার স্রোত, গন্ধ, রঙ পারে-
শূন্যস্থান সমূহ পূরণ করে দিতে।
তবুও অন্ধকার
অন্তঃসারহীন বিষয় ও ব্যক্তির প্রবল কলরব।
যা যা অলিখিত
ধর্ম বলছে-
‘জীবনের যা কিছু সব লিখিত হয়ে আছে’।
কিন্তু ধর্ম বলছে না-
এই যে, ‘জীবনের সবটাই অলিখিত’!
পৃষ্ঠা খুলে দেখি,
লিখিত-অলিখিত বিষয়ের ছড়াছড়ি।
যা লিখছি বাস্তবিক তা সামান্যই।
যা লিখছি না প্রকৃত তা অসামান্য।
অর্থাৎ জীবনের বেশির ভাগ বিষয়ই-
অলিখিত রয়ে গেছে।
যেমন, প্রথম বোধোদয়,
ভালোবাসা
দুঃখ
কাঁদা
প্রথম লেখা
পড়া,
দৃশ্যমান থেকে পালাতে-
প্রথম অদৃশ্য হওয়া।
এরকম নানা অনুভব, প্রায়োগিক দক্ষতা-
জীবন জুড়ে অলিখিত রয়ে গেছে।
নিশ্চিত যার উল্লেখ, কখনই ঘটবে না।
দুঃখগুলি আমারই থেকে গেছে
আর কোনো প্রশ্ন নেই। থাকার অবকাশ ভোঁতা, অনেকটা দুঃখিত।
যেভাবে হেঁটেছি পথে, জনপদে তৃষ্ণার মেঘ জ্বেলে ঘুরেছি অযুত বছর।
সেভাবে কেউ নয়! তুমি নও!
তোমার প্রেম কেবল মননে, খাম-খেয়ালীর দস্যুপনায় মজেছে।
নিষ্ঠুরতায় হরণ করেছে একান্তে গড়ে তোলা স্বপ্নগুলো, কল্পনার
সম্ভ্রান্ত পাহাড়। যেন ভূমিকম্প, জলোচ্ছ্বাস
দূরন্ত টাইটানিক বারবার তলিয়ে গেছে হিমশীতল সমুদ্রের বুকে।
প্রশ্নগুলি তোমার, কিন্তু দুঃখগুলি আমারই থেকে গেছে।
স্বর্ণালী ভেনাস
রাত্রিদিন স্বর্ণালী ভেনাস, নিজেকে আউট-রান-
দু’চোখ জুড়ে চেয়ে রও স্মৃতিশব্দ মেঘে;
অনাদৃত অতীত ফোকাসে বিষণ্নদেশ তুলে আনে।
কীর্তনখোলার ঘাটে ব্যস্তযাত্রীর ঢল,
পণ্যের সারিবদ্ধ উজ্জ্বলতা; যেন মহাকালীক পরিক্রম;
আদান-প্রদানের ভাষা প্রবাহিত স্রোতে বিজয়গুপ্তের কাল,
ফণিমনসার ছায়া শীতলতা ছড়ায় প্রখর রোদ্রের বনে।
সন্ধ্যা-সুগন্ধ্যার বুকে ঘোলাজলের মেলা,
শাহরীক মগজে ভাষার কারিস্মা;
আঞ্চলিকতা উষ্ণতর কখনো-সখনো।
কুসুম কুমারীর ছেলেরা নৌকাবাইচে, মৎস্যশিকারে;
নানাকার্যে হুল্লোড় তুলে, মেয়েরাও শহর-বন্দর ঘুরে-
মাটির গুণকীর্তন ছড়ায়।
মাটি ও মানুষের গন্ধ শুঁকে শুঁকে,
শুধু জেগে রয় অগণন নক্ষত্ররাশি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন