পাঁচটি কবিতা
(১)
ছড়িয়ে দিলুম
দ্রোহের গুঁড়ো
নাইসিল রোদে ভেঙে
পড়লো তাসের দেশ
নিয়ন পলকে উড়লো
বিষণ্ণতা
নাভিতে যে নদী
জ্যোৎস্না পোহাতো
পশমের চাঁদের মতো
সেও গুঁড়িয়ে গেল দরবারি কানাড়ায়
কাচপোকা টিপ
পৌঁছল না পৃথিবীতে
তার আগে তুমি
ছুঁলে গর্ভকেশর
বুকের পিলসুজ
থেকে ভেসেছে সুবর্ণরেখা
আশ্চর্য কথা!
চোখের ঝাড়লণ্ঠনে
জ্বলছে আকাশের জলসা
(২)
ঘুমের নদীরঙ দেখে
ছাড়াছাড়ি মেঘ ও ময়ূর
একটানা বিরহ
চোখের কোলের নুন
গ্রহণের গুটিপোকা
মাটিতে লুকিয়ে রাখে
একা হবার ভয়
না কথা বলা রোদ
বুনে রাখছে মেঘ
আমাদের বদলে
যাওয়া সাত/সতেরো রক্ত খুলছে
চামড়ার ছত্রাক
আর প্রতিটা অসফল
সঙ্গমের শেষ প্রান্তে
উৎরাই কুয়াশা
(৩)
হে প্রভু
যখনি বলেছ পুড়েছি
নক্ষত্রে
সিঁথিতে জমেছে
একশত মাইল দাবাখেলা
আপাতত সামান্য
ল্যাটিন মদ্যপান
সংক্ষেপে বলি,
এখন বিশাখায় থাকি
ঠোঁটের ঝিনুকে
গোপন দস্তাবেজ আমাকে ঠুকরে খায়
তুমি চাইলে বলে
মৃত্যুর আগে এবং
পরে কতবার স্ত্রীনদী হলাম আলিঙ্গনে
বোধিজিন্ম
মেলছে প্রাপ্তবয়স্ক রেটিনা
ফাঁক ফোকর একটু
ডুবো জাহাজ আর নির্লজ্জ পোশাকে স্বাতীমেয়ে
হে প্রভু, বলো আমি
কোথায় আর কতটুকু
বিশ্বাস হারাই না
তবু বিশাখায়
কোণঠাসা গোধূলিতে
বুকে নেব হরিণের ঝংকার
ত্বকের বাইরের
মণ্ডপে উৎসব বৃদ্ধ হবে একা একা
হে প্রভু, আর কোনোদিন
আমাকে ছুঁয়ো না...
নাভির সূর্যাস্তে
আমি বারবার নষ্ট হয়ে যাই...
(৪)
তিনি আমাদের ডেকেছেন প্রথম ঋতুতে
আলো জ্বেলে দরজা খুলেছেন
আয়ুর
আমরা প্রদীপের চাষ করেছি
তাঁর পিঠে, বুকে
চকমকি মাটি, ম্যুরাল উপচে সলতের আল
অনেক বৃষ্টির হেরিং বোরিং
উল্লাসে ডুবে যাওয়া রূপোলী
আবেগের রানফোঁড়ে ফুটে ওঠা
মেঘ, মেঘ ভেঙে অস্ত
তিনি আবার ডেকেছেন হেমন্তে
ফেরিওয়ালার ঝুরিভর্তি
কমণ্ডলু উপবীত
হোমজলে ভেসে আছি যেন অলৌকিক
নৌকো
আশ্চর্য রাত্রিসকল ডানা
মেলে উড়ে যায় প্রেক্ষাগৃহে
কাড়া নাকাড়ায় আঁকা ভোররঙ
চর্যাপদ
আভরণহীন এ আকাশ ও নদী
অবশেষে গানের এপার ওপার
ঘুরে
আমরা দীক্ষিত হলাম
কুরুস কাঁটায় তিনি বুনলেন
শীত
কুয়াশার প্রাকার থেকে দেখা
গেল
যিশুর মাথায় চুড়ো করে বাঁধা
বেথেলহেম্
ক্রুশকাঠে মিনে করা আলো, উচ্চারণের সৌরকুচি
প্রখর স্তবের মতো কথা বলা
গ্রহটি জানিয়ে দিলো
আঙুল গুচ্ছ মোমবাতি...
ছলাত থেকে তুলে নেওয়া
আগুনলহর
তিনি বললেন, জ্বলুক, ওরা জ্বলুক...
(৫)
মুখে চোখে ছাঁটা হলো
পরীক্ষাহল...
উড়ে গেল বিরল
ডাকবাক্স, আটপৌরে অটোগ্রাফ, ফিনফিনে হাতঘড়িতে বাঁধা টেক্কা, রুইতনের পা...
প্রশ্নগুলো ছড়ানো
ছিটানো অচেনা হাতবোমা। উল্লসিত, আহ্লাদের সেরাটি পাল্টে দিচ্ছে প্রতি মিনিট। আঁচড় কেটেছি যেসব প্রশ্নে, তাদের গায়ে ঘুড়ি
ওড়ানোর হসন্ত, সেমিকোলনের নীল সর... সারাবেলাটির কাঁধে স্নান কাটলো মৌরিফুলের কলম...
আবছা বালির স্নায়ু... টেরাকোটা পেন্সিল...
নিজের ছায়াটুকুর
উত্তরে অবশ্য তেমন কিছুই লিখিনি...
হোমটাস্কের সরু
গলিতে চশমাধারী একটি দু’টি ছাত্রীবেলা লিখে এসেছি শুধু...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন