শূন্য. শূন্য. পনের
কবিতার সাথে ল্যাম্পপোস্টের রূপময়তার দ্বন্দ্বে তিনি
বরাবর আঙুল তুলেছেন পুবের দিকে। মুখে বলেছেন, দিশি মুরগির পাতলা ঝোল, আর পিজোফেন
১.৫ এমজি। এর ভিতরই ভালো থাকা যেতে পারে। বোর্হেস আর কাফকার মতো জাদুর জগৎ হলে অত বড়ো বড়ো (বড় না লিখে বড়ো লিখলে নিজেকে কেমন রবীন্দ্রনাথ লাগে না?) কথা কেন?
তারপর তো তিনি শেহেরজাদির কথা বললেন।
শেহেরজাদি,
শেহেরজাদি! জানো, তিনি চলে যাবার আগে চাঁদ হতে চেয়েছিলেন! আর যেতে যেতে কিছুটা নারীও! অথচ তাঁর অন্য
কোথাও যাবার ছিল না। তিনি যেই চাঁদ হতে চাইলেন, প্রস্থানের কাল তরাণ্বিত হলো তাঁর। সমস্ত চিরকূটের শব্দপুঞ্জ ভেসে গিয়ে সেই প্রস্তাবিত সন্ধ্যায় সন্ধির সাদা রঙে মিশে থাকল কিছু শোণিত। আর সোমেশ্বরী থেকে হাওয়া উঠল। তাঁর হৃদয় চিরে আয়ু বরাবর
সেই হাওয়া আমূলে বিদ্ধ হলো।
আ... মি... রেখে যাচ্ছি... আর কিছু নয়, আর কেউ নয়, কেবল
কিছু চিরককূট। কাকতলীয়ভাবে তাঁর খেলার মাঠটি তখন তাঁর শোবার ঘরে ঢুকে পড়েছে আর স্বমেহনের
প্রস্তুতিপর্বে সহসা তিনি চিৎকার করে উঠছেন, গো-ও-ও-ল!
দুঃস্বপ্ন
সে ছিল ঝুলন যাত্রার রাত। তুলসী আরতির শেষে পুবের বড়
মাঠটায় আলো জ্বলেছিল খুব। খোকন তখন সবে আকাশ হতে শুরু করেছে। বুলেট, পিন্টু, খোকন,
রেবা সবাই মিলে আরতি দেখতে গিয়েছিল। মা নীল কস্তে পাড় ছেড়ে ছোপছাপ ঢাকাই।
শ্রীমদ্ভগবত পাঠ... শ্রী...মদ্ভ..ব...ত... আঃ যাহ... শ্রীদেবীর শরীরে আলো পড়ছে যে! খোকন আরেকটু
ঘন হলো অন্ধকারে। রেবার বুকে পিন ফুটছে। কোথা থেকে তক্ষুনি ব্যথা শুরু হলো। বুক,
বুক থেকে পেটে। পেট থেকে ঊরু বেয়ে নামতে থাকল কৈশোর। রাত বারটার পর লীলা কীর্তন।
খোকনরা তখন আকাশ পাড়ি দিচ্ছে।
খোকনের মা নেই। খোকন নিঁখোজ হবার খবরেই একটা
সেরেব্রাল এ্যাটাক। দু’দিন হাসপাতাল। আর খোকনের বাবা তার অনেক আগেই তারা হয়ে গেছে।
তার অনেক পরে খোকন যখন দশে দশ, খোকন তখন নীলের বুকে
মাথা রেখে ঘুম যায় আর মাঝে মাঝে দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে কাঁদতে থাকে।
স্বপ্ন তো স্বপ্নই। কখনও সুখে ভাসায় কখনও অ-সুখে, তবু যে স্বপ্নটা তাকে
তাড়িয়ে মারে মাঝে মাঝেই, তা
ঝুলনের সাতদিন পর কংস নদীতে ভেসে ওঠা রেবার শরীর।
ভাসমান আদুল
শরীরে পিন ফোটার তো কোনো যন্ত্রণা থাকে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন