শুক্রবার, ২২ মে, ২০১৫

রাজিয়া সুলতানা

মনঘর

গোপন ঈর্ষায় নামলো চোখে বৃষ্টি।
কার সাথে যেন দেখলাম তোমাকে।
জিজ্ঞেস করলাম, মেয়েটা কে? 
কান পেতে শুনলে।
বললে, কই, কেউ না তো -- কাকে দেখলে?
চেয়েছিলাম এরকমই কিছু বলো।
বললাম, তাহলে আমারই দেখার ভুল, আচ্ছা বাদ দাও”
মন তো ঘর।
মাঝে মাঝে জানালা খুলে শ্বাস নিতে ইচ্ছে করতেই পারে।
বাইরে বাতাসের দোলা। ভেতরে কানাকানি।
ওই এক মুহূর্ত। দূর কাছে আসে দূরের টানে।
জানালায় রাত্রি এলে মন চায় কিছু স্মৃতি,
কিছু জল-রঙ ছবি আঁকা বসে বসে --
মনকে নিয়ে ভোগার নেই কোনো মানে।

ঘাসগুলো দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে দিনরাত। তুমি জানো এ কবর কার?
শোকের আয়ু শেষ হলে ঘুম ফিরে আসে চোখে ।
বিছানা বালিশে। চাঁদের বাটিও জ্যোৎস্না ঢালে হিম রাতে।
পাহাড়ের গান, ঝর্ণা, আনন্দ গড়িয়ে যায়।



চূড়ান্ত

তোমার বিন্দুতে জেগে আছি, অলৌকিক অন্ধকার।
আলোর অভিসারে নাভিমূলে আশ্চর্য সন্ত্রাস।
গহীনে আগুন চিৎকার। জলের স্তম্ভ কাঁপা ঢেউ
স্নায়ুজ বাসনার চূড়, শিখা নিরন্তর, সাজানো উপাচার।
ধমনী বোহেমিয়ান ডেকে যায় সঙ্গোপন, কোকিল সর্বনাশ।

রাতের মিনারে শুনি ভোরের আজান।
সুবহে সাদেক নামে ধীরে
ফেরেশতারা প্রহরায় বুঝি
খুলে দেয় সাত আসমান।
আমার শরীর জুড়ে কে ঢালে লওহে মাহফুযের ঘ্রাণ!


আনন্দ-গানে

সন্তর্পণে একটি ইচ্ছের বীজ ঢেকে দিলাম ছায়ার নিচে --
রোদ, জল, বায়ুর পিপাসায় কাতর হলো সে।
মাটির গর্ভ পেলে প্রেম একবার
শরীর, আশ্লেষ, মাংস-গন্ধ এসে ডেকে যায় --
নিউরণ বাসনায় অংকুর উল্লাসে আমি এক বীজ।

মজ্জার তীব্র সুখে যে আমাকে পায় -- সে জানে
আমিও ভ্রুণ ফোটার শব্দে কান পাতি।
আলো-ছায়া, রোদ-গন্ধ, ক্লোরোফিল মায়ায়
জলের বেদনায় আমিও সংশ্লেষণ ভালোবাসি।

আমিও উদগত শীষের বেদনা শিখেছি
কার্তিকের শেষে মাঠে মাঠে আনন্দ ছড়াবো বলে।

তবু তুমি থামলে না?
কাফনে জড়ানো বেদনার ইতিবৃত্ত এঁকে দিতে চাও
যে ঠোঁটে, সে সমবেদনা জানেনা । শোক জানেনা। সে শেখেনি
ওসব কারণবিহীন রিচ্যুয়্যাল যখন তখন ।
মৌলিক সংগ্রহে তার বেঁচে থাকা।
বিরুদ্ধ বাতাসের ধার কেটে নিয়েছে এইসব বিলক্ষণ লৌকিক আচার ।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন