অমিতাভ প্রামাণিক
চারানা আটানা
১৮ মদন
“ক্লীং কামদেবায় বিদ্মহে পুষ্পবাণায় ধীমহি তন্নোহনঙ্গ প্রচোদয়াৎ”
কী এটা? গায়ত্রী মন্ত্র। কামদেবের উদ্দেশে। কামদেবের পূজার মন্ত্র – ক্লীং
কামদেবায় নমোহ।
হঠাৎ কামদেব কেন? কেন নয়? একে তো ‘হোক চুম্বন’ নামক একটি কাম-অনুশীলন স্লোলি
বাট শ্যিওরলি সর্বভারতে সর্বজনপ্রিয়তা লাভ করছে, যার ওপর আগের ইস্যুতে আমি কিঞ্চিৎ
টর্চপাত করার চেষ্টা করেছি। যারা
এর বিরুদ্ধে কিছু কথা বলছেন, তাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে কোণারক-খাজুরাহোর
কাম-উদার ভারতীয় ঐতিহ্যের কথা। প্রতিটি মনুষ্যই পিতামাতার কামজ সন্তান (ঐ
টেস্ট-টিউব বেবি ইত্যাদি খুচরো টেকনিক্যালিটি ধর্তব্যের মধ্যে না
এনে), সুতরাং পৃথিবীতে মনুষ্য-ট্র্যাডিশন
চালিয়ে যাওয়ার একমাত্র উপায় কাম ব্যাপারটায় প্রকৃত শিক্ষালাভ, অর্থাৎ কামদেব-এর
পূজা।
মদন নামটি বড়ই সুন্দর। যুক্তাক্ষর নেই, উচ্চারণে সহজ। প্লাস, চার অক্ষরে
যাওয়ার দরকার হচ্ছে না, তিন অক্ষরেই বেশ চার অক্ষরের এফেক্ট এসে যাচ্ছে। আফটার অল,
চার অক্ষর দিয়ে অশালীন ব্যক্তিরা তো এর সমার্থক কিছু একটাই বোঝায়! মাগ্যি গন্ডার বাজারে টোয়েন্টি ফাইভ পার্সেন্ট
অক্ষর ছেঁটে যদি সেম এফেক্ট আনা যায়, মন্দ কী?
রাজশেখর বসু চলন্তিকায় ‘মদন’ শব্দের বেশ অনেকগুলো সিনোনিম দিয়েছেন – প্রেম ও
কামের দেবতা, অতনু, অনঙ্গ, কন্দর্প, কামদেব, পঞ্চশর, পুষ্পধন্বা,
মকরকেতন, মনসিজ, মনোভব, মন্মথ, রতিপতি, স্মর, কাম। সংসদ আর এ.টি.দেব-এর
সঙ্গে আরো
দু-একটা হাবিজাবি অর্থও জুড়ে দিয়েছেন, যেমন – বসন্তকাল, বৃক্ষ (ময়নাগাছ,
ধুতুরাগাছ, খদিরবৃক্ষ, মাষকলাই, আঁকোড়গাছ, বকুলবৃক্ষ), আলিঙ্গন, ভ্রমর। মদ্ +
ণিচ্ + অন্ অর্থে মদন মানে মত্ততাজনক। শেষোক্ত অর্থটি বেশ প্রাঞ্জল। মদফ (মদ off) বলে
কোনো শব্দ নেই, কিন্তু মদন আছে, আর তার মানেও মদ on! কেয়াবাৎ!!
অন্য শব্দগুলো লক্ষ্য করুন। অতনু বা অনঙ্গ মানে তনুহীন বা অঙ্গহীন। আবার কন্দর্প হচ্ছে কম্ - দৃপ্ + ণিচ্ + অ অর্থাৎ দেবতাদেরও
কাম-উত্তেজক। কামদেব তো
কামের দেবতা। তাঁর ধনু পুস্পসজ্জিত, তাই তিনি পুষ্পধন্বা,
সাথে পাঁচটি পুষ্পগন্ধী
(অশোক, শ্বেতপদ্ম, নীলপদ্ম, মল্লিকা ও আম্রমঞ্জরী) শর, তাই
তিনি পঞ্চশর (পাঁচে
পঞ্চবাণ মনে পড়ল কি?)। মকর তাঁর বাহন, তাই তিনি মকরকেতন। মন্মথ মানে মন মন্থনকারী। সঃ মনসঃ জাত, বা মনসিজ হচ্ছে মন হতে
জাত। প্রসূতি ও দক্ষের কন্যা এবং আকাঙ্ক্ষার দেবী রতির পতি তিনি।
কৃষ্ণপুত্র প্রদ্যুম্নের অবতার মদন ব্রহ্মার মন থেকে জাত (অন্যমতে দেবী শ্রী-র
পুত্র)। পক্ষীরাজের মতো
ডানাওয়ালা সুদর্শন যুবক তিনি। তাঁর নাসিকা সুচারু; ঊরু, কটি ও
জঙ্ঘা সুবৃত্ত; কেশ নীলাভ ও
কুঞ্চিত; বক্ষ সুবিশাল; চক্ষু, মুখ, পদতল ও নখ রক্তাভ;
গাত্রে নীপকুসুমের সুঘ্রাণ। তাঁর
সর্বক্ষণের সঙ্গী হচ্ছে একটি কোকিল, একটি পারাবত, ভ্রমরের
দল, বসন্ত ঋতু ও মলয় বাতাস। বেশ একটা হিন্দী সিনেমার রঙ্গিলা
রঙ্গিলা মনে হচ্ছে না? মদনের উৎসব হলো হোলি বা হোলিকা।
মৎস্যপুরাণে বলছে – ঘোর তপস্যায় বরপ্রাপ্ত তারকাসুর এমন শক্তিশালী হয়ে উঠলো যে
ইন্দ্র-ফিন্দ্রদের যুদ্ধে হারিয়ে স্বর্গ থেকে ফুটিয়ে দিলো। তাকে হারানোর সাধ্য
কারো নেই, শিবের পুত্র ছাড়া। এদিকে শিব ব্যাচেলর, তার পুত্র আসবে কোত্থেকে?
ইন্দ্ররা গিয়ে ধরে পড়ল ব্রহ্মাকে। ব্রহ্মা
দেখলেন, তাঁর সৃষ্টি রসাতলে যেতে বসেছে, তিনি দেবতাদের বললেন, হিমালয়কন্যা যুবতী
পার্বতীকে দিয়ে শিবের মনে রাগসঞ্চার করতে।
ইন্দ্রের গদি চলে যাওয়ায় সে মরিয়া, পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট মদনকে বললেন – তুইও
যা। মদন মলয় বাতাসে ভর করে নন্দীর চোখে ধুলো দিয়ে ঢুকে পড়ল শিবালয়ে,
সেখানে তৈরি করল অকাল বসন্তের পদ্মগন্ধবিধুর পরিবেশ। পার্বতী কাছে আসতেই দূর থেকে শিবের গায়ে ছুঁড়ে দিল পুষ্পশর।
এদিকে শিব বাবা ভোলানাথ হলে কী হয়, শরের খোঁচা খেয়ে তাঁর চোখ
গেল খুলে। তৃতীয়
চক্ষু দিয়ে মুহূর্তে বুঝে ফেললেন, ব্যাটা মদন অশোক গাছের আড়াল থেকে তীর মেরেছে। আর যাবি কোথায়! মদনের দিকে সক্রোধে তাকালেন
তিনি। অক্সি-অ্যাসিটিলিন টর্চের মতো এক্সট্রা-হাই
টেম্পারেচারের ফোকাস্ড্ ফ্লেম গিয়ে পড়ল মদনের ওপর। সঙ্গে সঙ্গে মদন পুড়ে ছাই হয়ে গেল।
এর পরের ডিটেইলসের দরকার নেই এ প্রসঙ্গে। শিব-পার্বতীর প্রণয়জাত কার্তিক
তারকাসুরকে বধ করল। পার্বতীর ইচ্ছায় মদনের পুনর্জন্ম লাভ হলো,
কিন্তু তার কোনো
শরীর থাকলো না। মানুষের মনে কামনা হয়েই রয়ে গেল বেচারি!
এসব বহুকাল আগের কথা। সত্যযুগ ফত্যযুগ হবে বোধহয়। এর পর গঙ্গা-ভল্গা-নীলনদ
দিয়ে প্রচুর জল বয়ে গেছে। আরো অনেক মদন এসেছে ও গেছে।
তাদের অধিকাংশই আবার মদনমোহন, মানে আমাদের গোপীকূলতিলক কেষ্টা গো! মদনমোহন তর্কালঙ্কার নামে একজন বিশিষ্ট পন্ডিত মানুষ ছিলেন।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সহপাঠী তিনি, সংস্কৃতজ্ঞ পন্ডিত ও
কবি। এখনকার মদনরা হয়তো ভাববে, তিনি
রোটির সঙ্গে তড়কা, লঙ্কার আচার এসব পছন্দ করতেন, কেননা নামের মধ্যে ঐসব রয়েছে। কিন্তু আদতে তিনি নদে জেলার
বিল্বগ্রামের মানুষ, তাঁর শিক্ষকরা তাঁকে কাব্যরত্নাকর উপাধি
দিয়েছিলেন। না, পরে তিনিই বাল্মীকি হয়ে যাননি, বা রামায়ণও লেখেন নি। বরং লিখেছিলেন ‘রসতরঙ্গিনী’ আর ‘বিদ্যারত্ন’ নামে
কাব্য। নামে কেষ্টা, কিছুকাল কেষ্টনগর কলেজে পড়িয়েছিলেনও। তারপর সংস্কৃত কলেজে
অধ্যাপনা করেন। এবং আরও পরে
মুর্শিদাবাদের জাজ ও ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হয়েছিলেন।
কিন্তু সে জন্যে নয়, মদনমোহন তর্কালঙ্কার সে যুগের অন্যতম শিক্ষাব্রতী ছিলেন। তখন শিক্ষিত সমাজও মেয়েদের লেখাপড়া শেখায় মত দেয় নি। বেথুন
সাহেব মেয়েদের স্কুল খুলে বসে আছেন, তাতে ছাত্রী যায় না কেউ। যাঁদের বিশিষ্ট
অবদানে সেই সুপ্রচেষ্টা সফল হয়েছিল, তর্কালঙ্কার মশাই তাঁদের
একজন। নিজের দুই মেয়ে কুন্দমালা
আর ভুবনমালাকে বেথুনের স্কুলে পাঠান তিনি লেখাপড়ার জন্যে। বিদ্যাসাগরের দু’খন্ড ‘বর্ণপরিচয়ে’র আগেই
তিনি শিশুদের উপযোগী তিনখন্ড বই লিখেছিলেন,
তার নাম ‘শিশুশিক্ষা’। বেথুন স্কুলে পড়াতেনও তিনি, তার জন্যে কোনো মাইনেও নিতেন না। ঈশ্বরচন্দ্রের সহযোগিতায় একটা প্রিন্টিং
প্রেসও চালু করেছিলেন তিনি, আর একটা বইয়ের দোকান। বিধবা বিবাহ প্রথার অন্যতম
উদ্যোক্তাও ছিলেন মদনমোহন তর্কালঙ্কার। ১৮৫৭ সালে প্রথম বিধবা বিবাহের পাত্র শ্রীশচন্দ্র
বিদ্যারত্ন এবং পাত্রী কালীমতির সন্ধান ও যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার মুখ্য ভূমিকা ছিল
তাঁর।
“পাখি সব করে রব, রাতি পোহাইলো।
কাননে কুসুমকলি সকলি ফুটিলো।
রাখাল গরুর পাল লয়ে যায় মাঠে।
শিশুগণ দেয় মন নিজ নিজ পাঠে...”
অথবা
“সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি,
সারাদিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি।
আদেশ করেন যাহা মোর গুরুজনে,
আমি যেন সেই কাজ করি ভালো মনে...”
এসব সর্বশিশুপাঠ্য ছড়া তাঁর লেখা। তিনিই লিখেছিলেন, “লেখাপড়া
করে যে, গাড়িঘোড়া চড়ে সে”।
তারপর ধরুন আর এক শিক্ষাব্রতী ও রাজনীতিবিদ মদনমোহন মালব্য। এশিয়ার সর্ববৃহৎ রেসিডেন্সিয়াল
ইউনিভার্সিটি বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি তিনি শুরু করেন। প্রায় কুড়ি বছর তিনি এর
ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন। পরে তাঁর ছেলে গোবিন্দও ভাইস চ্যান্সেলর হন এখানকার। ভারতের জাতীয় কংগ্রেসে দু’ দুবার
সভাপতিত্ব করেছিলেন তিনি।
ভারতীয়দের দ্বারা পরিচালিত স্কাউটও প্রথম তিনি শুরু করেছিলেন।
গরীব ঘরের সন্তান মদনমোহন মালব্য ছোটবেলাতেই মকরন্দ ছদ্মনামে কবিতা লিখতেন।
এখন যা এলাহাবাদ ইউনিভার্সিটি, সেযুগে তার নাম ছিল ম্যুর সেন্ট্রাল কলেজ, সেখান
থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করে কলকাতা ইউনিভার্সিটি থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন। এম এ
করার মতো আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি।
কংগ্রেসি নেতা হিসাবে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন কার্যকলাপে মালব্য
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। বর্তমানের কেন্দ্রীয় সরকার পঁচিশে ডিসেম্বর শুধু
বড়দিন নয়, তাঁর জন্মদিন হিসাবেও উদ্যাপন করতে চায়। মালব্যের জন্ম হয়েছিল
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে বছর জন্মেছিলেন, সেই বছরেই।
রবি ঠাকুরের কথা যখন উঠলই, তখন ভাগ্নে মদনকে অস্বীকার করি কী করে? কুমোরপাড়ার গোযানটি না হয় তার মামা বংশীবদনই চালাচ্ছিলো,
কিন্তু সঙ্গে সে না থাকলে কলসি-হাঁড়ি বিক্রি মামা একা হাতে সামাল দিতে পারতো?
শুক্রবারে বক্সীগঞ্জে পদ্মাপারের হাটে গিয়ে দেখুন তো, কী ভীড়, কী ভিড়!
ও হরি, দু’ দুটো মদনমোহনের কথা যে হলো – তর্কালঙ্কার আর মালব্য – শুধু
মদন মোহনই
বা কম কীসে? হিন্দী সঙ্গীতজগতের ধনুর্ধর লিরিসিস্ট ও মিউজিক ডিরেক্টর মদনমোহনের
কথা বলছি। ওয়েল, কোহলি বলে তার একটা সারনেম ছিল যদিও, টিকটিকির ল্যাজের মতো কবে
খসে গেছে, কেউ জানেই না।
এই মদনমোহন জন্মেছিলেন আবার মেসোপটেমিয়া, মানে ইরাকে, কেননা তাঁর বাবা
ছিলেন সেখানে কর্মরত অ্যাকাউন্ট জেনারেল। মায়ের সুরেলা গলা
ছিল, সেই সুরের উত্তরাধিকারী হন মদন। আট বছর বয়সে ইরাক থেকে চলে আসেন পাঞ্জাবের
ঝেলম জেলায়, পরে ব্যাগপত্তর গুছিয়ে বোম্বাইয়ে। এখানেই ফিল্মজগতের কিছু বিশিষ্ট
মানুষের বাচ্চাদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়।
কারা সেই বাচ্চা-কাচ্চারা? তাঁদের নাম রাজ কাপুর,
নার্গিস, সুরাইয়া।
মদন আর্মিতে যোগদান করেছিলেন। কিন্তু ভালো
লাগেনি। চাকরি ছেড়ে চলে এলেন গানের
দুনিয়ায়। আলাপ হলো উস্তাদ ফৈয়াজ খাঁ, আলি আকবর খাঁ, বেগম আখতার, তালাত মাহমুদদের মতো গুণী শিল্পীদের সাথে।
প্রথমে শচীনকর্তা ও পরে শ্যামসুন্দরের সহকারী হিসাবে কিছুদিন কাজ করবার পর মদনমোহন নিজে ব্রেক
পেলেন ‘আঁখে’ ছবিতে, পরে ‘আদা’
ছবিতে। এই আদা সেই আদা নয়, যার ব্যাপারীরা জাহাজের খবর রাখে না।
শুরু হতে লাগল এক সে বড়কর এক জনপ্রিয় গান। ‘কভি না
কভি কঁহি না কঁহি কোই না কোই তো আয়েগা’, ‘জরুরৎ
হ্যায় জরুরৎ হ্যায়’, ‘মেরি আওয়াজ শুনো’, ‘ম্যায়
নিগাহেঁ তেরে চেহরে সে’, ‘কৌন আয়ে মেরে মন কে দ্বারে’, ‘কর চলে
তুম ফিদা’, ‘জরা সি আহট হোতি হ্যায়’, ‘নয়না
বরসে রিমঝিম রিমঝিম’, ‘লাগ যা গলে’, আর কত গানের
কথা বলব!
তবুও কোনো এক আশ্চর্য কারণে সে যুগের ইনফ্লুয়েন্সিয়াল নায়ক-পরিচালকরা
তাঁদের নিজস্ব
মিউজিক ডিরেক্টর বেছে নিয়েছিলেন। রাজ কাপুরের ছিল শঙ্কর জয়কিষেণ, দেব আনন্দের এস
ডি – আর ডি, দিলীপ কুমারের নৌশাদ। মদনমোহন শেষ দিকে কাজই পাচ্ছিলেন না। অত্যধিক
সুরাপানে নিমজ্জিত হয়ে যান তিনি, এবং
তা থেকেই সিরোসিস অফ লিভারে অকালে মৃত্যু হয় তাঁর।
ক্রিকেটার মদনলালকেই
বা ভুলে গেলে চলবে কেন? লাস্ট বিশ্বকাপের
আগে আমাদের ক্রিকেটের স্বর্ণসময় গড়েছিল যে তিরাশির বিশ্বকাপ, তার
ফাইনালে মনে আছে, ভিভিয়ান রিচার্ডস
কেমন বেধড়ক পেটাচ্ছিল? ষাট ওভারের খেলা মনে হচ্ছিল শেষ হয়ে যাবে পঁচিশ ওভারেই। আর
তখনই মদনলালের বল পেটাতে গিয়ে উঠে গেল শূন্যে আর মাটিতে ল্যান্ড করার আগে পিছন
পানে কুড়ি পঁচিশ মিটার ছুটে গিয়ে ক্যাচ লুফেছিলেন কপিলদেব। তাতেই না কাপটা তার
হাতে উঠলো শেষমেষ!
আবার সিরাজের
সেনাবাহিনীর মীরমদন? সেও ছিল এক লড়াকু সৈনিক। অবশ্য টাকা খেয়ে ষড়যন্ত্র করে
নিজেদের মৃত্যুবাণ ডেকে আনলে আর একা লড়ে কতটুকু কী করা সম্ভব?
তার মানে দেখা যাচ্ছে, মদনের অভাব নেই আমাদের। সম্ভবামি
যুগে যুগে-র মতো একে একে মদনের জন্ম দিয়েছে দেশমাতৃকা। কেউ দেবেন ঠাকুরের সমবয়সী,
কেউ রবি ঠাকুরের সমবয়সী, কেউ আবার ভাগ্নে! এরা সব্বাই বেশ সম্ভ্রান্ত মদন, আমাদের
গর্বের মদন। ভাগ্নে মদন কোনো কুকাজ করলে তার মা, অর্থাৎ দিদি-র বদনাম হয়, তাই
মদনরা কুকাজ করতে পারে না। দিদির মানরক্ষার প্রশ্ন আছে না?
অথচ গুগলে বাংলায় ‘মদন’ টাইপ করুন, প্রথম যে নামটা পাবেন, তা এঁদের এক
জনেরও নয়। বরং যে
সাজেশনটা পাবেন, তাতে আপনার গর্ব ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। বিশ্বাস না হয়, পরীক্ষা করেই
দেখুন!
অসাধারণ লেখা!
উত্তরমুছুনঅসাধারণ
উত্তরমুছুন