সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০১৪

২২) অরবিন্দ চক্রবর্তী

মধ্যরাতের মস্করা : ০১

আকাশের যথার্থ দক্ষিণে বয়স টাঙিয়ে রাখুন
ফুলকিশোরীর হ্যান্ডবলের বৈকালিক ভক্ত আপনি
ছাপাপত্র হাতে অফিসে গেলেন কী মরলেন
ওয়ারড্রোপ খুলছেন তো দেখলেন স্ত্রী চমৎকার
                                হেট ইউ বলতে শিখেছে।

দেয়ালের টিকটিকি দেখবেন সংসার বিবাগী ব্যথায়
                                                তুখোড় মনোযোগী।
আয়ু ঝরে যাচ্ছে, দগদগে কামরাঙার পাশে
আপনার ঘটে যাচ্ছে - কিন্তু অসহায় চিৎ আরশোলা আপনি।

রিমোটকন্ট্রোল হাতে সিরিয়াল কেন খুললেন, প্রশ্ন
পাশবালিশ করার আগে সিলিংফ্যান আরি সেজে বসবেন।

আচ্ছা বাপধন, কোনোদিন আপনি যে দাবা খেলো নি
এ লজ্জা প্রতিরাতে মশারি ছড়ানোর ভাণে কে এসে উসকে দিয়ে যায়?



মধ্যরাতের মস্করা : ০২


যে কোনো নামের পাশে রাত্রিকে রেখে, তাহাদের বিড়ালটা শুধু শরীরের প্রসঙ্গই তুলল।
শিকে থেকে লাফিয়ে পড়ে, কথা দিল আদি পুঁথি অথবা অতিদীর্ঘিকা লিখবে।
যা লিখল তা আসলে আমাদের নাকের ওপর নরুণ ঘোষ জাতীয় পাঠকেরা নিশ্চয়ই
জেনে রেখেছেন।

তবুও নাটকে, মাত্র দেওয়ালকেই জাতির সামনে শেয়ানা পাগল সাজিয়ে
                                                      একজন কাহিনীকার হতে চলছে রূপশ্রীকাতর,
গোপনে গোপনে হাসির সুতোয় লেলিয়ে দিচ্ছে গোয়েন্দা তামাশা।

আর কিছু বেকুব অতিমানবেরা পবিত্র কামরাঙার হাঁটুতে বসে
একটা ছোটগল্পই এগিয়ে নিতে পারছি না



মধ্যরাতের মস্করা : ০৩


শরীর দেখা হলো, এবার সতর্ক করে নিই।

পা ফস্কে গেলে, মনে করা যাক আমাদের গাছে উঠবার অভ্যেস ছিল।

প্রতিদিন সবার পাশে কৌতুকপ্রবণ রাত্রি আসে। অথবা তোমাকে কোনোদিন পেতে হবে-
এই বানোয়াট সান্ত্বনায় কোলবালিশের সত্যে রাখে গুঁড়ো গুঁড়ো ঘুমের তামাশা।

যদি বলি ভয় পেলে অরোহীগণ, স্বপ্ন তাড়ানোর ছলে ঘুম কেন তাড়ান? ভোর রাতে দরজায় রোদ ওঠাবার নামে থার্মোমিটারবিহীন যার যার গায়ে কেন বাছেন জ্বরের উকুন।

লোকটা পালাতে চাইবে। অথচ সাহস করে জানতে চাইবে না
টিকটিকি ছুঁলে লেজ কেন ঝরে যায়!



মধ্যরাতের মস্করা : ০৪


যেহেতু পথে আছো। দেখা হয়ে যাবে একজন রেলক্রশিংয়ের । কালো রেখাটিই যদি তোমাকে বলে ফেলে অধিপতি। খামোখাই একবার তাকে পাগল বলবার অধিকার নিও।
পাতার আড়াল থেকে বৃত্ত-চাঁদ যাকে অধ:পতন ডাকে। দেখি তাকে টমেটোর মতো গোল।
গড়াতে শুরু করলে পিছু নেয় ভূতুড়ে সব আলোবাজের লালসা নিয়ে।

তো আমার জন্য তুলে রেখো অন্ধ বাবুইয়ের গান। রেকর্ডপ্লেয়ারে অহেতুক বাজাবো
অবসর পেয়ে ফড়িংকে তুমি যে কবার বলেছিলে
নিজেকে মত্ত পালোয়ান ভাবার রূপকথা।

আজ মেঘ করছে, রাক্ষস আসবে পাশের ফ্ল্যাটে
আকাশপথ নিয়ে তাজা পা নকল নিবন্ধ লিখবে।

কথা দিচ্ছি, আজ মহাকাশদস্যুর দেখা পেলে তিনবার শিস বাজিয়ে
তাকে বেহুঁশ করবার প্রেশব্রিফিং আমি করবোই।



মধ্যরাতের মস্করা : ০৫

ধুয়ে ফেলো। রাজহাঁস মাস পেরিয়ে আঁচ পাক জলের উদ্যোগ পুকুরেও থাকে ।
উদ্ভ্রান্ত জলচর তলদেশ থেকে তুলে আনুক সাইবেরিয়া মানে বছর জুড়ে একটিই ঋতু।

খুব কাঁপুনি এলে মেয়েটির শেমিজ ভিজে যায়
আজ বিকেলে যে তুখোড় বৃষ্টি হলো, তাহলে বলুন, এ কার দায়?

বেঁচে থাকলে প্রতিদিন ভাবতে হয় ধেয়ে আসছে গেল ঋতুর উপসংহার।
সারমর্ম করে একজন প্রায় সন্ধ্যায় আমাকে কানেমুখে করে যায়,
তাপসীদেরও নাকি সারা বছরে একটিই ঋতু।

বাবা টিনএজ, মধ্যরাতে জ্বর এলে তুমি স্মরণে রেখো পাশবালিশ নিয়ে
বিছানায় গেলে তাকেও বোবা যন্ত্রণার বেলেহাঁস হতে হয়।



মধ্যরাতের মস্করা : ০৬


দু:খ পাওয়ার জন্য ভাষা গবেষকের প্রয়োজন হবে না।
তেলাপোকা যে দুর্ধর্ষ দস্যুতা শোনাবে তা থেকে হাতির ঝিল যেতে যে সরলরেখা
ড্রাইভিংলাইসেন্স না পেয়ে পর্যটনের দিকে চলে গেছে তার একটি চাকার গল্পই যথেষ্ট।

আজ বন্ধুর মেয়ের সঙ্গে চা খেতে খেতে
আবাসিক আমাকে ডাকলো - সায় দিই নি বলে
শহরের সড়কে সড়কে নেমে গেল ফায়ারস্কোয়ারের গাড়ি।

বটপাতা জানে না আমি প্রজাপতি চিনি না
যাকে চিনি সে তার মৃত্যুদিবস অবমাননাকারী।
আর দুপুর রাতে গুহাচিত্র খুঁড়ে গুঁড়ো গুঁড়ো ফুলস্টপ লিখতে দুর্দান্ত মেধাবী।



মধ্যরাতের মস্করা : ০৭

এড়িয়ে চললেও এটি মনোদৈহিক কবিতা, লিখেছেন
বনের ভাড়া না মিটিয়ে পালিয়ে যাওয়া গন্ডার।

আচ্ছা মীনরাজ, শুনেছি তুমি কাউকে হেফাজত করো
পাখা ও পাতায় দৈনিক কেএফসিতে যাবার আগে যে বাতাস বিক্রি হয়
তা তো কবেই কিনে ফেলেছে আমাদের পকেট।

আবেগের নামে ফ্ল্যাটের মেয়েটি সকাল সন্ধ্যা
বেশরম একটা বিকেল দাবি করে
তার জন্যই দিনকে দিন খরচ হচ্ছে কথাশ্যাম্পু।

ভুলেও তুমি আর আমাকে মেডিটেশনে পাঠিও না
ঘুমও সাতরঙ স্বপ্নকলার ডিটেকটিভ দরজা ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন